।। প্রথম কলকাতা।।
Inner Line Permit: ভারতীয় নাগরিকরা যদি বিদেশে বেড়াতে যেতে চান তাহলে তাদেরকে ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই নিয়মটি সকল ভারতীয়র জানা। কিন্তু ভারতের মধ্যেই এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে প্রবেশ করতে গেলে ভারতীয় পর্যটকদেরকেই অনুমতি জোগাড় করতে হয়। তার সঙ্গে প্রয়োজন হয় ভিসার। অনুমতি না নিয়ে সেখানে প্রবেশ করলে বিপদে পড়তে পারেন পর্যটকরা। যদিও দেশের মধ্যে দেশের নাগরিকদেরকে অনুমতি কেন নিতে হবে এই প্রশ্ন উঠে আসে। উত্তরে বলা যায়, ওই জায়গা গুলি প্রায় সবই আন্তর্জাতিক সীমানার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এই কারণে নিরাপত্তার খাতিরে ভারতীয় নাগরিকদেরকেও অনুমতি নিতে হয়।
এই অনুমতি নেওয়া কে একটি নাম দেওয়া হয়েছে ইনার লাইন পারমিট ( Inner Line Permit)। এই ইনার লাইন পারমিট এর মাধ্যমে ভারতীয় পর্যটকরা ভারতের ওই স্থানগুলিতে নির্দ্বিধায় ঘুরতে পারেন ভারতের যে সকল প্রান্তে যেতে গেলে এই অনুমতি নিতে হয় সেই জায়গাগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবসময় পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যার কারণে ভ্রমণ প্রেমীরা সব রকম নিয়ম বিধি মেনেই সেখানে যাওয়ার ছাড়পত্র জোগাড় করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। মূলত সেই সব এলাকার আদিবাসী সংস্কৃতির সুরক্ষা আর তাদের সাথে যাতে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য এই নিয়ম লাঘু করা হয়েছে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক ভারতের কোথায় যেতে গেলে ভারতীয়দেরকেও দিতে হয় ভিসা :
* লোকটাক লেক, মনিপুর (Manipur) : ভারতের মনিপুর রাজ্যে রয়েছে একটি মিষ্টি জলের হ্রদ (Lake) । আর সেই হ্রদের মধ্যে অস্তিত্ব রয়েছে সেন্দ্রা নামক একটি দ্বীপের। সেটিই বর্তমানে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে । দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা সেখানে এসে ভিড় জমান শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মনকে শান্তি দেবেন বলে । এই দ্বীপটি প্রায় ৪০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে অবস্থান করছে। আর বিশ্বের এই ভাসমান দ্বীপের ওপরে রয়েছে জাতীয় অভয়ারণ্য কেইবুল লামজাও ন্যাশনাল পার্ক। এখানে আসতে গেলে ভারতীয় নাগরিকদেরকেও অনুমতি নিতে হয়।
* সিকিমের ছাঙ্গু লেক (Sikkim) : পূর্বে ভুটান , পশ্চিমে নেপাল এবং উত্তর পূর্বে চীনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমানা ভাগ করেছে সিকিম । এই অংশগুলিতে পর্যটকরা যদি আসতে চান তাহলে তাদেরকে অনুমতি নিতে হয়। যেমন ছাঙ্গু লেক, নাথুলা পাস, থাঙ্গু চোপটা ভ্যালি, গুরুডংমার লেক প্রভৃতি জায়গায় যেতে গেলে অনুমতি পত্র প্রয়োজন। আর এই অনুমতি পত্র পাওয়া যায় শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর এবং রংপো চেকপোস্ট থেকে।
* নাগাল্যান্ডের কোহিমা (Nagaland) : নাগাল্যান্ডের রাজধানী হল কোহিমা। আর আপনি যদি কোহিমা ঘুরতে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে অনুমতি পত্র । এক্ষেত্রে কোহিমা, ডিমাপুর, শিলং, কলকাতা ,নয়া দিল্লী এবং মককচুং থেকে এই পারমিট সংগ্রহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও অনলাইন মাধ্যমে সংগ্রহ করা যায় পারমিট । নাগাল্যান্ডে কম করে হলেও ১৬ প্রজাতির আদিবাসী বর্তমানে বসবাস করছেন । তাদের প্রত্যেকের ভাষা সংস্কৃতি পোশাক এবং ধর্মীয় রীতি-নীতি উৎসব সবকিছুই আলাদা । তাই নাগাল্যান্ড সবসময়ই ভ্রমণ প্রেমীদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেয়।
* মিজোরামের আইজল ( Mizoram) : ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য হল মিজোরাম । আর সেই রাজ্যের রাজধানী আইজল। এই জায়গাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনা করা যায় না । একই সঙ্গে সেখানকার আদিবাসীদের সুন্দর জীবনযাত্রা স্বচক্ষে না দেখলে মন ভরে না । মিজোরাম মায়ানমার এবং বাংলাদেশের সীমানায় অবস্থান করছে। তাই এখানে যদি ঘুরতে যেতে হয় পর্যটকদের নয়া দিল্লির মিজোরাম হেডকোয়ার্টার থেকে অনুমতি পত্র নিতে হবে। এছাড়াও এই অনুমতিপত্র সংগ্রহ করা যাবে শিলচর ,গুয়াহাটি, শিলং এবং কলকাতা থেকে। মিজোরামে যাওয়ার জন্য পর্যটকরা দুই ধরনের পাস পেতে পারেন। একটা পনেরো দিনের জন্য আর অপরটা ছয় মাসের জন্য।
* অরুণাচল প্রদেশের জিরো ( Arunachal Pradesh) : সবুজ জঙ্গল, বড় বড় পাহাড় , প্রাকৃতিক ঝর্নায় ঘিরে থাকা রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্যের কিছু এমন জায়গা রয়েছে যেখানে প্রবেশ করতে গেলে ইনার লাইন পারমিটের প্রয়োজন হয়। কারণ এই রাজ্য ভুটান , চিন ও মায়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমানা ভাগ করে নিয়েছে। অরুণাচল প্রদেশের একটি জায়গা হল জিরো। সেখানে যাওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে পারমিট নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। ৩০ দিন সেখানে থাকার অনুমতি মেলে । চাইলে অনলাইন মাধ্যমেও এই পারমিট সংগ্রহ করা সম্ভব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম