US visa policy: মার্কিন ভিসা নীতিতে বাংলাদেশের স্ট্যান্ড পয়েন্ট নিয়ে চিন্তায় ভারত! সবকূল রক্ষা করতে হাঁটলো এই পথে

।। প্রথম কলকাতা ।।

US visa policy: মার্কিন ভিসা নীতি শুধু বাংলাদেশ নয়, কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্য? এই ভিসা নীতির ভালো–মন্দ, প্রতিক্রিয়া কেন এতো ভাবাচ্ছে ভারতকে? বাংলাদেশের পক্ষে নাকি বিপক্ষে, মুখ খুললেই বিপদ। সবকূল রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে নয়া দিল্লি। মার্কিন চাল কিভাবে সামাল দেবে হাসিনা সরকার? চীন নাকি যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ ঝুঁকবে কোন দিকে? ‘ওয়েট অ্যাণ্ড সি’ নীতি নিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা ভারতের। বাংলাদেশ ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ফলে এই ভিসা নীতির এফেক্ট নিয়ে ভারত খুব স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত বলা ভালো মার্কিন ভিসা নীতি ঘিরে গড়ে ওঠা বিতর্ক ও সেই নিরিখে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সম্ভাব্য রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে নয়া দিল্লির।

কিন্তু, মুখ খোলেনি ভারত। কেন? লজিক আছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক। অন্তত যুক্তরাষ্ট্র তেমনই বলছে। সেক্ষেত্রে যেখানে, গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটানোই মূল উদ্দেশ্য, সেখানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের তো মুখ খোলারই জো নেই। তাই ভারতকে যদি কিছু বলতেও হয়, তা গণতন্ত্রের পক্ষেই বলতে হবে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে তা বলা সম্ভব নয়। কারণ, বাংলাদেশ এর সঙ্গে ভারতের গলায় গলায় ভাব। তাছাড়া, মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে বাংলাদেশে রীতিমতো আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়ে গেছে। ফলে, সবকূল রক্ষা করতে ভারত আপাতত চুপ থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে চলেছে।

হ্যাঁ, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে অবশ্যই ভারতের পক্ষে এই বিষয়টা কিছুটা অস্বস্তিজনক। এর প্রথম ও প্রধান কারণ সম্পর্ক। প্রায় দেড় দশক ধরে দুই দেশের মানে ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্বের বন্ধন ক্রমাগত দৃঢ় হয়েছে, পারস্পরিক নির্ভরতা বেড়েছে, তার প্রতিফলন ঘটেছে ব্যবসা, বাণিজ্য, যোগাযোগ সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও। সম্পর্কের সেই কারণেই কিন্তু বাংলাদেশের ২০১৪ ও ২০১৯ এর জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বন্ধুত্বের হাত ছাড়েনি ভারত।

কিন্তু এবার কি হবে?

এবার নির্বাচনের প্রাক্কালে নতুন ভিসা নীতির অস্বস্তির কাঁটা খচখচ করছে। কারণ বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন মার্কিনদের চোখে সুষ্ঠু, অবাধ শান্তিপূর্ণ হতে হবে না হলে স্যাঙশন দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে সেটা বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের জন্যেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ভারতের বিশ্বাস বাংলাদেশ এর বর্তমান শাসকদল তাঁদের মতো করে ঠিক সমাধান সূত্র বের করে ফেলবে। এই অবস্থা থেকে নিশ্চই বেরিয়ে আসবে। আসলে মনে রাখতে হবে, কূটনীতির গতিশীলতা সব সময় এক রকম থাকে না। সম্পর্কে চড়াই–উতরাই থাকে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দুটো দেশই এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক দক্ষতাও যথেষ্ট। তাছাড়া, দুই দেশই জানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের একে অপরকে প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে, কেউই চাইবে না নির্বাচনের প্রশ্নে সেই সম্পর্ক তলানিতে নিয়ে যেতে।

আর একটা দিক ভুলে গেলে চলবে না, যুক্তরাষ্ট্রও কি চাইবে বাংলাদেশকে এতটা কোণঠাসা করতে, যাতে তাদের ওপর চীনের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়? না, একেবারেই নয়। যুক্তরাষ্ট্র যেমন চায় না বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকুক, তেমনি ভারতও নিশ্চিতভাবেই চায় না, যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু করুক, যাতে চীনকে নিয়ে সাউথ ব্লককে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হয়। সে ক্ষেত্রে ভারত যেমন সব কুল রক্ষা করার চেষ্টা করছে তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের ও আগে পিছে সব দিক চিন্তা করে এগোনো উচিত, মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কারণ, চীন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত দুই দেশের জন্যই কিন্তু প্রধান উদ্বেগের কারণ। ফলে, এই মার্কিন ভিসা নীতির জট কাটিয়ে, চলতে থাকা সমালোচনা দূর করার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে হবে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীকেই। যেখানে, ভারত আপাতত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। ধৈর্য্যের পরীক্ষা, সামনের দিনগুলোতে কঠিন পরীক্ষা হাসিনা সরকারের।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version