।। প্রথম কলকাতা ।।
যুক্তরাষ্ট্রের মুখের উপর আবারো সপাটে জবাব দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এভাবে আগে কেউ বলেনি। যুক্তরাষ্ট্র আগে নিজের দেশের মানবাধিকার নিয়ে চিন্তা করুক, তারপর তো বাংলাদেশ। এভাবে বলতে কজন পারে বলুন তো? যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই সময় গুলি করে চলছে মানুষ হত্যা, অথচ সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? এটাই প্রশ্ন শেখ হাসিনার। যুক্তরাষ্ট্রের কি করা উচিত, সেটাও জানিয়ে দিলেন।
আচ্ছা, শেখ হাসিনা কেন বারবার যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার সরব হচ্ছেন? বাংলাদেশ তো বন্ধুত্বে বিশ্বাসী, কখনোই আগ বাড়িয়ে শত্রুতা করবে না। তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে এভাবে চটানোর মানেটা কি? শেখ হাসিনা যেভাবে দৃঢ় কন্ঠে ক্রমাগত যুক্তরাষ্ট্রের উপর বাক্যবাণ ছুঁড়ছেন তাতে দুই দেশ বেশ অস্বস্তিতে। এই ক্ষোভের মূলে দুটো কারণ। এক র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা, দুই মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের নির্বাচনে উপর চাপ। যদিও এই দ্বিতীয় পয়েন্টটা বারংবার অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ সরকার। দেশটার অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে বারংবার মাথা ঘামাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের দেশের মানুষকে কি করে বাঁচাবে সেই চিন্তা আগে করা উচিত।
আরেকটা প্রশ্ন করেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার খোঁজ নিতে অনেকেই আসছেন, কিন্তু ২০০১ সালের যেভাবে দেশ জুড়ে হত্যা নির্যাতন ধর্ষণ হয়েছিল সেই সময় মানবাধিকার ইস্যু গুলো কোথায় ছিল? তাঁর কথায়, যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে নিরাপদ নয় শিশুরা।। শপিং মল সহ প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষকে গুলি করা হচ্ছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, আগে নিজের দেশের কথা চিন্তা করা। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ বাঁধিয়ে আজ হাজার হাজার নারী পুরুষ রিফিউজি। ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে। একইভাবে গোলাগুলি চলছে সিরিয়ায়। বোমা হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিন। অথচ এই বিষয় নিয়ে কেউ কোনো কথা বলছে না। এখানে কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না? প্রত্যক্ষভাবে না হলেও, পরোক্ষভাবে বলতে চাইলেন, সব দোষ তাহলে কি শুধু বাংলাদেশের? কেন যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র বাংলাদেশকে টার্গেট করছে? এসব প্রসঙ্গ উঠে এসেছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে।
বাংলাদেশের বহু বিশ্লেষকদের মতে, মানবাধিকার আর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে। বাংলাদেশের মাটিতে পোক্ত করতে চাইছে নিজের জায়গা। কিন্তু পারছে কি? যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করার জন্য বেছে বেছে কয়েকটা দেশ হাতে রেখেছে। এর আগেও চীনের সুনির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। উত্তর কোরিয়াও এর ভুক্তভোগী। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক নিষেধাজ্ঞা বয়ে বেড়াচ্ছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র কখনো একা, আবার কখনো সমিল্লিতভাবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় কিউবা, চীন আর উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এবার এই ঝঞ্ঝাটে পড়েছে বাংলাদেশ। ২০১৪ এবং ১৮ এর নির্বাচনে বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা নিয়েও কিন্তু কম জলঘোলা হয়নি। সেই বিষয়টাকে কেন্দ্র করেই আমেরিকা তাগাদা দিচ্ছে বাংলাদেশকে। যদিও এখনো পর্যন্ত দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে তিক্ততার ছাপ পড়েনি। এখানে শেখ হাসিনার আর একটা কথা ইম্পর্ট্যান্ট। যে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে তারা কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে? বিশ্বের বহু জায়গায় মানুষ খুন হচ্ছে কিন্তু নিশানায় বাংলাদেশ কেন? পুরোটাই ভূ রাজনৈতিক প্ল্যান নয় তো?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম