Imran Khan Arrested: কোন ষড়যন্ত্রে জেলবন্দী ইমরান? এই ইমেজেই হুহু করে বাড়ছে জনপ্রিয়তা

।। প্রথম কলকাতা ।।

Imran Khan Arrested: গ্রেফতারি কি ইমরান খানের জন্য শাপে বর হলো? ইমরান খান গ্রেফতার হতেই আরও তীব্র সঙ্কটে ইসলামাবাদ। কিন্তু, ইমরানের মুখ বন্ধ করতেই কি ষড়যন্ত্রের ছক কষা হয়েছে? ঘটনার শুরু কিভাবে? প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরানের কাম ব্যাক করার চান্স কতটা? টানা হেঁচড়া, ধস্তাধস্তি, গ্রেফতার, এভাবে কি জনপ্রিয়তা বাড়ছে ইমরানের? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা কি বলছেন? জানেন, পাকিস্তানের ভাগ্যে কি আছে? বিশ্লেষকদের মতে সংঘাত সহিংসতা পাকিস্তানের জন্য নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের সংকট বেড়েছে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কোনো পরিস্থিতিই ভালো যাচ্ছে না। যেকোনো সময় দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে ইসলামাবাদ। কিন্তু প্রথমে ইমরানের ক্ষমতা হারানো, তারপর গ্রেফতারের ঘটনা পাকিস্তানের সংকটকে আরও তীব্র করছে। একমত পোষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মালিহা লোথি, তিনিও বলছেন পাকিস্তানের বর্তমান সংকট একেবারে ‘নজিরবিহীন’ পুরোটাই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পতন। বর্তমান পরিস্থিতি সহ্যের বাইরে চলে গেছে। দেশের মানুষ এটা কখনো চায়নি। এই অবস্থা আর চলতে পারে না, অবশ্যই পরিস্থিতি বদলাতে হবে।

কিন্তু, কিভাবে বদলাবে পরিস্থিতি? ইমরান খানই কি কোথাও গিয়ে পাকিস্তানকে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছেন? এটাই এখন লাখ নয়, কোটি টাকার প্রশ্ন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব আইনি জটিলতার কারণে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা হুহু করে বাড়ছে। হাইপ পাচ্ছেন তিনি। চলতি বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচনে জয়ী হয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন ইমরান খান। তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। কিন্তু এমনটা মনে করার কারণ কি? বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু পাকিস্তান না, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ইমরান খান। ১৯৯২ সালে তার নেতৃত্বে পাকিস্তান ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা অর্জন করে। পরবর্তীতে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে তিনি পিটিআই প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর প্রতিটি সমাবেশে মানুষের ঢল নামে। বিরোধীদের জন্য অবশ্যই যা আতঙ্কের কারণ।

এতো জনপ্রিয় ইমরান খানের জীবনে কিভাবে ঘনিয়ে এলো কালো সময়? নেপথ্যে কি বড় কোনো ষড়যন্ত্র কাজ করছে? এটা বুঝতে গেলে বেশ কিছুটা সময় পিছিয়ে যেতে হবে। সাল ২০১৮, ইমরান খান বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। দাবি করা হয়, সেইসময় তাঁকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীও সমর্থন করেছিল। কিন্তু, ২০২২ সালে পুরো পরিস্থিতি উল্টে যায়। পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ধীরে ধীরে গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে যায় ইসলামাবাদ। অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করে ফেলেন ইমরান খান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন পাক প্রধানমন্ত্রী। দুই পক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণেই তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন বলে দাবি করেন। আগাম নির্বাচনের দাবিতে শাহবাজ শরিফের সরকারকে ক্রমাগত চাপ দিতে শুরু করেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরানের অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগের খেলা শুরু হয়। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুর্নীতি ও অসাংবিধানিক কার্যক্রমের অভিযোগ তোলা হয় ইমরানের বিরুদ্ধে। এক বিবৃতিতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। জমি দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়।

আসলে, ইমরান খান যদি এভাবে অভিযোগ করেই যান, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ যে নেওয়া হবে তেমন হুঁশিয়ারি কিন্তু দিয়েই দিয়েছিলেন সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র। গ্রেফতারের আশঙ্কা ছিল। ইমরান খান জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কারাগারে যেতে প্রস্তুত। আর সেটাই ঘটে গেল বাস্তবে। ইমরান খানকে গ্রেফতারের নেপথ্যে পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষের যে সরাসরি হাত রয়েছে তেমন অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ফাওয়াদ চৌধুরী। কিন্তু, ইমরানের এই গ্রেফতারি কি শাপে বর হলো? উল্টে শাহবাজ সরকারের কি সত্যিই অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো? বিশ্লেষকরা তো বলছেন, গ্রেফতার ইমরান খানকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে যাবে। এছাড়া আর কিছু হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকার। আসলে, হিসেবটা বুঝতে হবে। ক্ষমতাসীন সরকার ও তার অনির্বাচিত মিত্ররা মনে করে, ইমরান খানকে পিটিআইয়ের বাইরে রাখতে পারলে তাদের ওপর থেকে চাপ কমে যাবে। ফলে, তারা খুব সহজেই নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে পারবে। কারণ সরকারকে ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন পিটিআই প্রধান ইমরান খান। তাহলে কি এই কারণেই জেলবন্দী করা হলো তাঁকে? এতে কি লাভ হলো কিছু? ইমরানকে ঘিরে যে নাটক তৈরি হচ্ছে, তাতে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ছে বই কমছে না। চক্রান্তের বেড়াজাল ছিন্ন করার অসাধারণ সক্ষমতা রয়েছে ইমরান খানের। কারণ, রাজনৈতিক মাঠে তার অবস্থান এতটাই শক্তিশালী যে, নানা ষড়যন্ত্র করে সরকার ও সেনাবাহিনী তাঁকে আটকাতে পারবে না বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

এককথায়, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খোলার ঘটনা পাকিস্তানে খুব একটা দেখা যায় না। সে দিক থেকে দেখতে গেলে ইমরান খানের গাটস আছে, সাহস আছে‌। সঙ্গে, ইমরান খানের বিপুল জনপ্রিয়তার জোয়ার আছে। যা এতোই বেশি যে, কোণঠাসা করতে পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী কলাকৌশল তাঁর ক্ষেত্রে কার্যকরী নাও হতে পারে। রইল বাকি, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রসঙ্গ। রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সেটা কাটিয়ে উঠতে আইএমএফ এর ঋণ খুবই দরকার পাকিস্তানের কিন্তু, কিছু শর্ত পূরণ করতে না পারায় আইএমএফ এখন রাজি হচ্ছে না। তাই, এখন সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি বদলের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই পাকিস্তানিদের।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version