Bank earnings: টাকা রাখলে ব্যাঙ্ক সুদ দেয়, সে টাকা কোথা থেকে কিভাবে তারা আয় করে বলুন তো?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bank earnings: আপনাদের কেউই বাড়ির আলমারিতে সেভাবে আর টাকা রাখেন না। সংসার চালানোর জন্য সামান্য কিছু টাকা ছাড়া বেশিরভাগটাই রাখা হয় ব্যাংকে। কারণ, ব্যাংকের মতো সুরক্ষিত জায়গা আর দ্বিতীয়টি নেই। অনেকেরই মাস পয়লায় বেতন সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই ঢোকে। আপনারা সকলেই জানেন, ব্যাঙ্ক হল টাকা সঞ্চয়ের জায়গা। ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে, সেই টাকার ওপর সুদও পাওয়া যায়। ফিক্সড করলে সুদ আরও বেশি মেলে। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি, সুদের টাকা কোথা থেকে পায় ব্যাঙ্কগুলো? আপনি টাকা রাখলেন। সুদ হিসেবে আপনাকে আবার বাড়তি টাকা দিল ব্যাংক। এই টাকা আসছে কোথা থেকে! এর ওপর রয়েছে ব্যাংকের বিশাল খরচ। কর্মী অফিসারদের মোটা টাকা বেতন, বিল্ডিং, বিদ্যুতের বিল সহ কত কি। তাহলে বলুন তো, ব্যাংক কোথা থেকে কীভাবে আয় করে?

প্রথমেই জেনে রাখুন, ব্যাঙ্কগুলি মুনাফাভিত্তিক ব্যবসায়িক মডেলে চলে। অন্য যে কোনও ব্যবসার মতোই, তাদেরও আয় ও ব্যয়ের উৎস রয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মূলত টাকা ধার করা এবং ধার দেওয়া জড়িত। ব্যাঙ্কের আয়ের কথা বলতে গেলে সবার আগে আসবে, নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন। সেটা কি? ব্যাঙ্কগুলি কম সুদের হারে টাকা ধার করে। কিন্তু তারা যখন ঋণ দেয় তখন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হারে সুদ নেয়। এই সুদের হারের পার্থক্যকেই নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন বলা হয়। এটি ব্যাঙ্কগুলির আয়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উৎস। আপনারা সেভিংস অথবা কারেন্ট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করেন।এর অর্থ, ব্যাঙ্কগুলি আপনার কাছ থেকে সেই টাকা ধার করল। সেজন্য অল্প সুদও দিল। সেই টাকাই বেশি সুদের বাজারে খাটাচ্ছে ব্যাংক।

হোম লোন, পার্সোনাল লোন, কার লোন, এবং অন্যান্য আর্থিক পণ্যের ওপর মোটা টাকা সুদ নিয়ে আয় করে ব্যাঙ্কগুলি। ব্যাঙ্কের আয়ের আরেকটি প্রধান উৎস হল ইন্টারচেঞ্জ ফি। জেনে রাখুন, ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য ব্যাংকগুলি বাড়তি টাকা নিয়ে থাকে। কিছু কেনাকাটার সময় যখনই কার্ড সোয়াইপ করলেন, তখনই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর ওপর একটি নির্দিষ্ট চার্জ ধরে নেওয়া হয়। এই লেনদেনের বেশিরভাগ টাকাই গ্রাহকের ব্যাঙ্কেই যায়। বাকিটা যায় ব্যবসায়ীর ব্যাঙ্কে। লেনদেনের এই মূল্য ছাড়াও, প্রতিটি ব্যাঙ্ক তাদের বিভিন্ন পরিষেবার জন্য আলাদা আলাদা টাকা নিয়ে থাকে। এটিএম কার্ড দেওয়ার জন্য ফি নেয় তারা। যে ব্যাংকের এটিএম কার্ড, তাদের ছাড়া অন্য ব্যাঙ্কগুলির এটিএম থেকে গ্রাহকদের প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক লেনদেন করার অনুমতি দেওয়া হয়।

এই সীমার বাইরে এটিএম থেকে টাকা তুললে গ্রাহকদের একটি নির্দিষ্ট মূল্য দিতে হয়। কিছু কিছু ব্যাঙ্ক আবার নির্ধারিত সীমার বাইরে নিজেদের এটিএম থেকেও টাকা তোলার জন্য অতিরিক্ত মূল্য নেয়। কিছু কিছু ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখতে হয়। যদি গ্রাহকের ব্যালেন্স এই সীমার নিচে নেমে যায়, তবে তাঁকে একটি নির্দিষ্ট মূল্য জরিমানা দিতে হয়। ক্রেডিট কার্ড বিল পরিশোধের সময়সীমা পেরিয়ে গেলে গ্রাহকদের লেট পেমেন্ট ফি দিতে হয়। যে ব্যাঙ্কগুলিতে বিনিয়োগ পরিষেবা আছে, তারা বিনিয়োগ ফি-ও আরোপ করে থাকে। তারা ক্লায়েন্ট বিনিয়োগ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত পরিষেবা পরিচালনার জন্য এই ধরনের ফি আরোপ করে।

ব্যাঙ্কের আয়ের অন্যান্য উৎেসর মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগের উপর সুদ। কখনও কখনও ব্যাংকগুলি বিভিন্ন সরকারি এবং রেটেড সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে সুদ পায়।বৈদেশিক মুদ্রা থেকেও ব্যাঙ্কগুলির আয় হয়। এছাড়াও ব্যাঙ্কগুলি মিউচুয়াল ফান্ড বা বিমা পণ্য বিতরণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কমিশনও অর্জন করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, আপনার টাকা বাজারে খাটিয়েই মোটা টাকা আয় করে ব্যাংকগুলি। এছাড়াও তারা যে আয়ের নানা উপায় খুলে রেখেছে সেটা এখন আপনার কাছে পরিষ্কার।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version