Crop burning: নাড়া পোড়ানোয় ক্ষতি, তা থেকেই উৎকৃষ্ট জৈব সার কীভাবে করবেন?

।।প্রথম কলকাতা।।

Crop burning: নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে প্রচারও চলছে। তবু নাড়া পোড়ানো বন্ধ করা যাচ্ছে না। ধান কাটা শুরু হতেই রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকাতেই নাড়া পোড়ানো হচ্ছে। এর ফলে পরিবেশ এবং জমি দুয়েরই ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। নাড়া পোড়ানো বন্ধ করতে গত কয়েক বছর ধরেই ধান কাটার আগে প্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু তারপরও এই প্রবণতা কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এমনটাই জানা যাচ্ছে । এর ফলে একদিকে যেমন দূষণ বাড়ছে, তেমনই জমিরও ক্ষতি হচ্ছে। অথচ তা বুঝতে চাইছেন না কৃষকরা।

এই রাজ্যের জেলায় জেলায় গ্রামীন এলাকায় বিকেলের পর চোখ রাখলেই নাড়া পোড়ানোর ছবি ধরা পড়ছে। পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, দুই মেদিনীপুর, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ সহ ধান উৎপাদক সব জেলা থেকেই নাড়া পোড়ানোর খবর আসছে প্রশাসনের কাছে। সর্বত্রই কাটা ধানের জমিতে এখন আগুন ও গলগল করে উঠতে থাকা ধোঁয়ার কুন্ডলীর ছবি উঠে আসে । সবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান কাটা যত বাড়বে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাড়া পোড়ানো বাড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

চাষিরা যাতে নাড়া না পোড়ান সেই লক্ষ্যে জেলায় জেলায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। নাড়া পোড়ানোর জন্য পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনই মাটিরও ক্ষতি হচ্ছে। অনেক সময় ধান জমির পাশেই নাড়া পোড়ানো হচ্ছে। তাতে পাকা ধানও পুড়ে যাচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, আগে ধানের পাশাপাশি খড় খামার বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে গাদা দেওয়া হত। সেই খড় সারা বছর গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতো। অনেকে ঘর ছাইতেন। আবার অনেকে সেই খড় বিক্রি করে দিতেন। কিন্তু এখন যন্ত্রের সাহায্যে মাঠেই ধান ঝাড়া হচ্ছে। যন্ত্র শুধুমাত্র ধান আলাদা করে দিয়ে অবশিষ্ট গাছ ফেলে দিচ্ছে। সেই পাহাড় প্রমাণ খড় জমি থেকে সরানোর জন্য আলাদা করে অর্থ খরচ করতে চাইছেন না কৃষকরা। সেই খড়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে তারা। ফলে দিন দিন নাড়া পোড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন,জমিতে নাড়া পোড়ালে মাটির গঠন ও গুণমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপকারী জীবাণুও মরে যায়। এমনকি জমি বন্ধ্যাও হয়ে যায়। চাষের স্বার্থেই জমিতে নাড়া পোড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত।

তাঁরা বলছেন, নাড়া পোড়ানোর কারণে একসঙ্গে দুটো ক্ষতি হয়। এত তো ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ এবং দ্বিতীয়ত কমে যায় জমির উর্বরতা। এই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখে বিশেষ ক্যাপসুল বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রথমে জল এবং গুড় মিশিয়ে ভাল করে ফোটাতে হবে। তারপর সেই মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেল ওপরের আস্তরণ সরিয়ে ফেলতে হবে। এবার তার মধ্যে ছাতু এবং ক্যাপসুল মিশিয়ে দিয়ে মাটির পাত্রে রাখতে হবে। সপ্তাহ খানেক রাখলে একটা কঠিন আস্তরণ তৈরি হবে। সেই আস্তরণ বাদ দিয়ে তার নিচের অংশ জমিতে ছড়িয়ে দিলে যাবতীয় নাড়া পচে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। তা কাজ করবে জৈব সারের মতো। ফলে জমির উর্বরা শক্তি বাড়াবে। কমবে পরিবেশ দূষণ।

কৃষকরা বলছেন, নাড়া পোড়ানো পুরুষানুক্রমে চলে আসছে। এর ফলে পোকামাকড় মরে যায়, জমিও পরিষ্কার হয় বলে অনেকের ধারনা। ধান কাটার পরে যে অংশ পড়ে থাকে খরচ বাঁচাতে মজুরের অভাবে সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
কৃষি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, চাষের জন্য কৃষি জমির উপরি ভাগের ৬ ইঞ্চি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নাড়া পোড়ালে ওই অংশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমন চলতে থাকলে জমির ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা একেবারে লোপ পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কৃষি বিজ্ঞানীরা আরও জানাচ্ছেন, ধান গাছে থাকে সালফার, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম সহ-১৭টি মৌল। সেগুলো পোড়ালে বাতাসে বিষাক্ত গ্যাস মিশে যায় আর দূষণ ছড়ায়। অন্যদিকে জমিতে আগুন দিলে মাটির ভিতরে থাকা বিভিন্ন রকমের প্রাণী, বন্ধু পোকা, কেঁচো মারা যায় এবং তা মাটির উর্বরা শক্তি নষ্ট করে দেয়।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version