Artificial Rain: কীভাবে তৈরি হয় নকল বৃষ্টি? মানুষ চুরি করছে মেঘ, খবরদারি চলছে প্রকৃতির উপর!

।। প্রথম কলকাতা ।।

Artificial Rain: তৈরি হচ্ছে দেদার নকল বৃষ্টি। প্রকৃতির উপর খবরদারি চালাচ্ছে মানুষ। আপনি যেখানে যখন চাইবেন, তখনই বৃষ্টি হবে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আপনি চাইলে আপনার বাড়ির উপরও বৃষ্টি ঝরাতে পারেন। কন্ট্রোল করতে পারেন শিলাবৃষ্টিকে। এই নকল বৃষ্টি কিভাবে তৈরি করা হয়? কারসাজি কিন্তু মেঘের উপর। মানুষ কি তাহলে মেঘ চোর হয়ে গেল? নকল বৃষ্টির জল ক্ষতিকারক নয় তো? নকল বৃষ্টি ভবিষ্যতের ভয়ানক অস্ত্র!

নকল বৃষ্টি কীভাবে হয় জানার আগে জানতে হবে মেঘ কীভাবে তৈরি হয়। নদী নালা পুকুরের জল বাষ্প হয়ে আকাশে ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয়। সেই মেঘ অত্যাধিক ভারী হলেই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। নকল বৃষ্টির ক্ষেত্রে পদ্ধতি একটু আলাদা, একে বলা হয় ক্লাউড সিডিং টেকনোলজি। যা দীর্ঘদিনের গবেষণায় নয়, হঠাৎ করে আবিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। সময়টা ১৯৪৬। আমেরিকার আবহাওয়াবিদ ডক্টর ভিনসেন্ট সেফার হঠাৎ লক্ষ্য করেন, মানুষের মুখের ভেপার ছোটখাটো মেঘ। এই জলীয় বাষ্প শুষ্ক বরফের সংস্পর্শে আসলেই জলে পরিণত হচ্ছে। পরীক্ষার জন্য, একটা এরোপ্লেনে প্রায় আড়াই কেজি শুষ্ক বরফ নিউইয়র্কের এক পাহাড়ের মাথায় মেঘের উপর ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি হতে শুরু করে। এভাবেই সামনে আসে ক্লাউড সিডিং টেকনোলজি। এই প্রযুক্তি আর একটা ভাবে হয়। সিলভার আয়োডাইড ব্যবহার করলে জলীয় বাষ্প দ্রুত আদ্রতা শোষণ করে এবং বড় বড় জলকণায় পরিণত হয়। এই দুই পদ্ধতিকেই কাজে লাগিয়ে মেঘের উপর এরোপ্লেন বা ড্রোনের মাধ্যমে দিয়ে দেওয়া হয় মেঘের বীজ অর্থাৎ ক্লাউড সিড। ব্যবহার করা হয় সিলভার আয়োডাইড, পটাশিয়াম আয়োডাইড, শুষ্ক বরফ। বর্তমানে আবার ব্যবহার করা হচ্ছে ক্লাউড জ্যাপিং টেকনোলজি। ড্রোনের মাধ্যমে মেঘের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে ইলেকট্রনিক কারেন্ট।

শুধু বৃষ্টি ঝরাতে নয়, বৃষ্টিকে কন্ট্রোল করতেও ব্যবহার করা হয় এই টেকনোলজি। ফ্রান্সের একটা কোম্পানি বৃষ্টিকে কন্ট্রোল করার জন্য এক কোটি টাকা নিয়ে থাকে। হয়ত ভাবছেন , এভাবে কি প্রকৃতিকে কন্ট্রোল করা ঠিক? এর ফলে তো মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু কৃত্রিম বৃষ্টি যে বড়সড় ক্ষতি করতে পারে তা এখনো পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। কারণ এখানে আপনি নিজে থেকে মেঘ তৈরি করতে পারবেন না। তা প্রকৃতির মধ্যেই রয়েছে। সাইন্স ব্যবহার করে শুধুমাত্র দ্রুত বৃষ্টি ঘটানো যাবে। শিলাবৃষ্টিকে কিছুটা হলেও কন্ট্রোল করা যাবে। যে মেঘের বৃষ্টিটা দুদিন পরে হওয়ার কথা, সেটা আপনি কয়েকদিন আগে করাতে পারবেন। তবে ক্লাউড সিডিং টেকনোলজিকে আমেরিকা খারাপ কাজে ব্যবহার করেছিল। ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় বেশি বৃষ্টি ঘটিয়ে শত্রুদের দুর্বল করার চেষ্টা করেছিল। তবে ভবিষ্যতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

বর্তমানে চীন, ইসরায়েল, কুয়েত, ইন্দোনেশিয়া, বুলগেরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফ্রান্স, রাশিয়া জার্মানি সহ বহু দেশ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ভারতেও পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। এই নকল বৃষ্টির মাধ্যমে কোন জায়গায় গড় বৃষ্টি ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। এয়ারপোর্ট এ কুয়াশা কমাতে,ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল শক্তি কমাতেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। আসলে মানুষ এখানে বৃষ্টি বানাচ্ছে না, শুধুমাত্র জলীয় বাষ্প দ্রুত ঘনীভূত করার কাজ করছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version