Television Channel: টেলিভিশনে নির্মম হত্যার রক্তাক্ত ছবি কতটা ভালো? খারাপ প্রভাব পড়ছে দর্শকদের মনে!

।। প্রথম কলকাতা ।।

Television Channel: ২০২৩ এর ৯ই জানুয়ারি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক (Ministry of Information and Broadcasting) সমস্ত টেলিভিশন চ্যানেলের (Television channel) উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ জারি করেছে। মূলত টেলিভিশন চ্যানেলে এমন কিছু দুর্ঘটনা, মৃত্যু, সহিংসতার ঘটনা দেখা দেয় যা দর্শকদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে নারী, শিশু এবং বয়স্কদের প্রতি কিছু সহিংসতার ঘটনা শালীনতাকে ছাড়িয়ে যায়। এই বিষয়গুলি মন্ত্রণালয়ের নজরে আসতেই টেলিভিশন চ্যানেলগুলিকে বিচক্ষণতার সঙ্গে বিবেচনা করতে বলেছে।

মন্ত্রক জানিয়েছে, টেলিভিশন চ্যানেলগুলি ব্যক্তিদের মৃতদেহ, চারিপাশে রক্তের ছিটা দিয়ে আহত ব্যক্তিদের ভিডিও, শিশু, মহিলা, বৃদ্ধদের উপর অত্যাচারের সময় নির্দয়ভাবে যে ক্লোজ শট করা হয় সেখানে স্পষ্টভাবে ক্রমাগত কান্নাকাটি এবং চিৎকারের আওয়াজ আসে। যা দর্শক এবং শ্রোতাদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। শুধু তাই নয়, একই ধরনের ঘটনা বারংবার কয়েক মিনিট ধরে দেখানো হয়। বিষয়গুলিকে হাইলাইট করা হয়। এই ধরনের রিপোর্ট পদ্ধতি দর্শকদের জন্য বিরক্তিকর এবং পীড়াদায়ক। এই ধরনের রিপোর্টিং বিভিন্ন শ্রোতা এবং দর্শকদের উপর ঠিক কি প্রভাব ফেলছে সেই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের মানসিকতার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এমন কিছু কিছু ভাইরাল ভিডিও রয়েছে যা মানহানিকর হতে পারে।

টেলিভিশন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে পরিবারের সমস্ত সদস্যরা একইসঙ্গে খবর দেখেন। সেক্ষেত্রে দর্শকের আসনে বৃদ্ধ, মধ্যবয়সী, ছোট শিশু এবং বিভিন্ন অর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের ব্যক্তিরা থাকেন। তাই সম্প্রচারকারীদের মধ্যে নির্দিষ্ট দায়িত্ববোধ এবং শৃঙ্খলা বোধ নিয়ে টেলিকাস্ট করা উচিত। মন্ত্রণালয় পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া হয়। যা সম্পাদকীয় বিবেচনায় এবং পরিবর্তন ছাড়াই সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। মন্ত্রণালয় দৃঢ়ভাবে সমস্ত টেলিভিশন চ্যানেলকে তাদের সিস্টেম এবং ঘটনাগুলিকে রিপোর্ট করার অনুশীলনগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য করার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি সম্প্রচারিত কয়েকটি নির্দয় রিপোর্টের উদাহরণ তুলে ধরেছে।

• ২০২২ এর ডিসেম্বরের ৩০ তারিখে দুর্ঘটনায় আহত একজন ক্রিকেটারের দুঃখজনক ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় হু হু করে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় ছবিগুলিকে ব্লার বা অস্পষ্ট করা হয়নি, সরাসরি দেখানো হয়েছিল।

• ২০২২ এর আগস্ট মাসে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছিল একজন ব্যক্তির মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চারিদিকে রয়েছে রক্তের ছিটা। সেই ফুটেজ বারংবার দেখানো হয়।

• ঠিক তার একমাস আগে, বিহারের পাটনায় কোচিং ক্লাস রুমের একটি ভিডিও সামনে আসে। যেখানে পাঁচ বছর এক শিশুকে নির্মম ভাবে মারছিলেন শিক্ষক। সেই ক্লিপে শিশুটির আর্তনাদ শোনা যায়। সেই বেদনাদায়ক ভিডিওটি প্রায় নয় মিনিটের বেশি সময় ধরে দেখানো হয়েছিল।

• ২০২২ এর মাঝামাঝি সময়ে একজন পাঞ্জাবি গায়কের মৃতদেহের বেদনাদায়ক রক্তাক্ত ছবি বারংবার দেখানো হয়েছে। একই বছরের মে মাসে আসামে একজন ব্যক্তি দুজন নাবালক ছেলেকে লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারার একটি ঘটনা বারংবার দেখানো হয়েছে। সেই ক্লিপটির কোন জায়গায় অস্পষ্ট করা হয়নি। যেখানে স্পষ্টভাবে সেই নাবালক ছেলেদের বেদনাদায়ক কান্না শোনা যাচ্ছিল।

• ২০২২ এ এপ্রিল মাসে বেঙ্গালুরুতে এক বৃদ্ধ তার ছেলেকে পুড়িয়ে মেরেছিলেন। সেই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে। যেখানে দেখা যায়, বৃদ্ধ ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে তার ছেলের উপর ছুঁড়ে মারছেন। সেই আগুনে ঝলসে যাচ্ছেন ছেলে।

• মে মাসে ছত্তিশগড়ে একজন ব্যক্তিকে গাছ থেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে পাঁচজন লোক লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করেন। সেই ভিডিওটি ব্লার না করে সরাসরি বহু টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়। এই ধরনের প্রায় ১২ টি উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। এই ধরনের ভিডিও বা ছবি বারংবার টেলিকাস্টের ক্ষেত্রে একটু বিবেচনা করতে বলেছে তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রক।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version