Prafulla Chaki: ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন তিনি, জন্মদিনে ফিরে দেখা বীর প্রফুল্ল চাকীকে

।। প্রথম কলকাতা ।।

Prafulla Chaki: ছোট থেকেই তাঁর মধ্যে বিপ্লবী মনোভাব ছিল বললে ভুল হবে না। যে কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁকে। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন তিনি। তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৮৮-র আজকের দিনে অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকীর জন্ম হয় ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত বগুড়া জেলার বিহার গ্রামে।

ছোটবেলায় ‘নামুজা জ্ঞানদা প্রসাদ মধ্য বিদ্যালয়’-এ ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। বাবা রাজ নারায়ণ চাকী, মা স্বর্ণময়ী চাকী। পরিবারে তিনিই ছিলেন কনিষ্ঠ সন্তান। পরবর্তীতে বগুড়ার মাইনর স্কুলে ভর্তি করা হয় তাঁকে। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় পূর্ববঙ্গ সরকারের কারলিসল সার্কুলারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের দায়ে তাঁকে রংপুর জেলা স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে রংপুরের কৈলাস রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। আর সেখানে পড়তে পড়তেই জীতেন্দ্রনারায়ণ রায়, অবিনাশ চক্রবর্তী, ঈশান চক্রবর্তী সহ আরও অন্যান্য বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ তৈরি হয়। যার দরুন বিপ্লবী ভাবাদর্শে আরও অনুপ্রাণিত হন তিনি।

১৯০৬-এ কলকাতার বিপ্লবী নেতা বারীন ঘোষ প্রফুল্ল চাকীকে নিয়ে আসেন শহরে। যোগ দেন যুগান্তর দলে। তার পরই পূর্ববঙ্গ ও অসম প্রদেশের প্রথম লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার জোসেফ ব্যামফিল্ড ফুলারকে হত্যা করার দায়িত্ব পড়ে। যা সফল হয়নি। এরপর ক্ষুদিরাম বসুর সঙ্গে কলকাতা প্রেসিডেন্সি ও পরে বিহারের মুজাফফরপুরের অত্যাচারী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সকলেরই জানা, তাঁদের এই পরিকল্পনাও সফল হয়নি। ১৯০৮-এর ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যাবেলায় হত্যার পরিকল্পনা করেন ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল। ইউরোপিয়ান ক্লাবের প্রবেশদ্বারে তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন কিংসফোর্ডের ঘোড়ার গাড়ির। একটি গাড়িকে আসতে দেখে তাঁরা সেদিকে বোমা নিক্ষেপ করেন। কিন্তু সেখানে ছিলেন না কিংসফোর্ড। উল্টে দু’জন ব্রিটিশ মহিলা মারা গিয়েছেন। তৎক্ষণাৎ তাঁরা ওই এলাকা ছাড়েন।

এরপরই ছদ্মবেশ ধারণ করেন প্রফুল্ল চাকী। ওই বছরের ২মে ট্রেনে নন্দলাল ব্যানার্জী নামে এক পুলিশ দারোগা সমস্তিপুর রেল স্টেশনের কাছে তাঁকে দেখে সন্দেহ করেন। মোকামা স্টেশনে পুলিশের সম্মুখীন হয়ে প্রফুল্ল চাকী পালাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু ধরা দেওয়ার বদলে বিহারের মোকামা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে আত্মহত্যা করেন। তৎকালীন পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রন্থকারেরা সকলেই বলেন তিনি নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেছিলেন। কিন্তু অনেক ঐতিহাসিকের অনুমান, তাঁকে খুন করা হয়েছে। সকলেরই ধারণা কিংসফোর্ড হত্যার পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পর, পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগে আত্মহত্যা করেছিলেন এই বিপ্লবী। কিন্তু পরবর্তীতে অনুসন্ধান করতে গিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা তাঁর আত্মহত্যার তত্ত্বটিকে সমর্থন করে না। কিছু ঐতিহাসিকের ধারণা, তাঁকে পুলিশ খুন করে মাথা কেটে নেয়। পরবর্তীতে ক্ষুদিরাম ধরা পড়েন এবং তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রফুল্ল চাকীর মৃত্যুর বদলা নেন বিপ্লবী রণেন গাঙ্গুলী ও শ্রীশচন্দ্র পাল।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version