।। প্রথম কলকাতা ।।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে নিজেকে জড়িয়ে নিলো চীন। ইউক্রেনকে একেবারে ধুয়ে দিচ্ছে রাশিয়া, হাতে আছে চীনা ড্রোন। ১ বছরে ৩০ হাজার চীনা ড্রোন কিনে রেকর্ড পুতিনের। তবে কি যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কাই সত্যি হয়ে গেল?
কী বলছে বেইজিং? রুশদের কাস্টমস রেকর্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জড়িয়ে রয়েছে মার্কিন সংস্থাও। কী বলছে তারা? কী বলছেন সামরিক বিশ্লেষকরা? চীন কি সত্যিই প্রাণঘাতী অস্ত্র তুলে দিচ্ছে রাশিয়ার হাতে? ফল কিন্তু মারাত্মক হতে পারে, শঙ্কায় কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্পষ্ট কথা সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। যদি চীন রুশ যুদ্ধের অংশ হতে না চায় তবে তাদের ড্রোন বিক্রি করা উচিত নয়। ঠিক, বেইজিং ও বিষয়টা এতোদিন ধরে অস্বীকার করে এসেছে। কিন্তু চীন যতই এড়িয়ে যাক, অস্বীকার করুক, ইউক্রেনে লড়াইয়ের জন্য রাশিয়াকে যে চীন অস্ত্র দিতে পারে সেই হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। আর এবার জাপানের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন নিক্কেই এশিয়ার রিপোর্টে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। আশঙ্কাই কি তবে সত্যি হলো? হ্যাঁ ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য চীনা কোম্পানির থেকে সামরিক ও বেসামরিক ড্রোন কিনছে রাশিয়া। ২০২২ এর মার্চ থেকে ২০২৩ এর মে পর্যন্ত রাশিয়া কমপক্ষে ৩০ হাজার ড্রোন কিনেছে, যার মূল্য ৩২ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি! আর ডিসেম্বর ২০২২ থেকে এপ্রিল ২০২৩-এর মধ্যে কমপক্ষে ৩৭টি চীনা চালকবিহীন আকাশযান কিনেছে, যার মূল্য ছিল ১ লক্ষ ৩ হাজার ডলার।
নিক্কেই পুরোটা অনুসন্ধান করে দেখেছে। ড্রোন আমদানির জন্য রুশ কোম্পানিগুলো গোপনে কাস্টমসের কাগজপত্র পূরণ করছে। চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, মার্কিন সংস্থা ডিজেআইও এর মধ্যে জড়িয়ে আছে নিক্কেই এর রিপোর্ট অনুযায়ী। জানলে অবাক হবেন রুশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্ট্যাটাস কমপ্লায়েন্স’ তিনটে ড্রোন আমদানি করেছে। যেগুলোর ওজন ২৫ থেকে ১৫৯ কেজির মধ্যে, ড্রোনগুলোকে বেসামরিক মডেল হিসাবে রেকর্ডে বর্ণনা করা হয়েছে। ২৫ কেজি ওজনের ড্রোনগুলো পুনরুদ্ধার অথবা আক্রমণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বলে খবর। ড্রোনগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে স্ট্যাটাস কমপ্লায়েন্স জানায়, তারা এই ব্যাপারে নাকি কিছুই জানেন না। পরে কোম্পানির লেনদেন এর প্রুফ দেখালে তারা সাফ অস্বীকার করে।
এদিকে জানা গেছে রুশরা চীনা প্রতিপক্ষকে ২২টা ডিভাইসের জন্য ১.২ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ দিয়েছে। আরও ১০টি পোর্টেবল ব্যক্তিগত কম্পিউটারের জন্য খরচ করেছে প্রায় ৩৬ হাজার ৭৭ ডলার। এছাড়া, মার্কিন সংস্থা ডিজেআই দ্বারা নির্মিত ৩৪ টা ড্রোন রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। যার মূল্য ছিল ৭৫ হাজার ১০০ ডলার। যদিও, ওই মার্কিন সংস্থাও নিক্কেই এর কাছে পুরো বিষয়টা অস্বীকার করে সাফ জানিয়েছে গত বছরের ২৬ এপ্রিল থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনে নাকি সব চালান বন্ধ করে দিয়েছে তারা। কয়েকটা ভারতীয় কোম্পানি সহ অন্যান্য সোর্স থেকে রুশদের কাস্টমস রেকর্ডগুলো সংগ্রহ করে, বিশ্লেষণ করেছে নিক্কেই। ড্রোন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য পাওয়ার পর জাপানের রুশ ও চীনা রাষ্ট্রদূতের তরফে এবিষয়ে জানতে যাওয়া হলেও তারা কেউ কোনো উচ্চবাচ্য করেনি।
মনে করে দেখুন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রকাশ্যে বলেছেন, যুদ্ধ ইউনিট, প্লাটুন, কোম্পানি ও ব্যাটালিয়নের জন্য অবশ্যই ড্রোন থাকা জরুরি। তাহলে কি সেই টার্গেট পূরণ করতেই চীন থেকে ড্রোন কিনছে রাশিয়া? সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের ওপর নজরদারি ও হামলা চালাতে ড্রোন ব্যবহার করছে রুশরা। কিন্তু, এই বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঠিক কি মেসেজ দিচ্ছে? আগামী দিনে জল কোন দিকে গড়াতে পারে? সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম