।। প্রথম কলকাতা ।।
Fokinni bazar: এই যে বাজারটা দেখতে পাচ্ছেন, এটা বাংলাদেশের এক আশ্চর্য বাজার। এখানে মাত্র ১০০ টাকায় পাবেন ব্যাগ ভর্তি বাজার। মাত্র ১০ টাকাতেই পাবেন রকমারি সবজি। বিভিন্ন সবজি বিক্রি হচ্ছে ভাগে। শুধু সবজিই নয়, পেয়ে যাবেন মাছ মাংস। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ বাজার সুপরিচিত হলেও এখানে মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্ত ক্রেতারাও আসেন। বাংলাদেশের কারওয়ান বাজারে গিয়ে যদি বলেন, দাদা দশ টাকার ডাল দিন তো, সেই বিক্রেতা যদি ভালো হন কিছু বলবেন না। না হলে নিশ্চয়ই আপনাকে তাচ্ছিল্য করবে, নয় হাসাহাসি করবে। এবার যদি আপনার দিনে আয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা হয় তাহলে সারাদিন সংসার চালাবেন কি করে? তাদের জন্যই রয়েছে ফকিন্নি বাজার আবার কেউবা বলেন গরিবের বাজার। বাজারের শুরুটাও হয়েছিল বহু বছর আগে, ঐতিহাসিক ভাবে রয়েছে বিস্তরগল্প।
বাংলাদেশের কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে মাছ বাজার, গেলে বুঝতে পারবেন সবকিছুর দাম যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিনতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে আমজনতা। ৫০০ টাকাতেও মনের মত বাজার হয় না। সবজির দাম প্রতি কেজি শত টাকারও বেশি। সেই ১০০ টাকাতেই আপনি গরিবের বাজারে পাবেন ব্যাগ ভর্তি বাজার। কমপক্ষে দশ রকম আইটেম কিনতে পারবেন।
বাংলাদেশের বিজয় সরণি দিয়ে তেজগাঁওয়ের দিকে যেতে যে ফ্লাইওভার রয়েছে, ওখানে গিয়ে ফকিন্নি বাজার টা ঠিক কোন দিকে বললে দেখিয়ে দেবে। দেখবেন রেললাইনের পাশে রয়েছে বাজারটা। ক্রেতার সংখ্যা কিন্তু খুব একটা বেশি নয়। তাদের বড় অংশ কেউ দিনমজুর, কেউ রিকশাচালক, কেউ শ্রমিক আবার কেউ বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। শোনা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে আশপাশের ভিক্ষুকরা ভিক্ষার চাল আবার কেউ পিঁয়াজ রসুন ডাল, পাইকারি বাজার থেকে কুড়িয়ে পাওয়া সবজি আবার কেউবা বেঁচে যাওয়া মাছ এই রেললাইনের পাশে বিক্রি করতেন। সে সময় ক্রেতারাও ছিলেন দরিদ্র। সেখান থেকে বাজারটির নাম হয় ফকিন্নি বাজার। বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে দেখতে দেখতে প্রায় ৫২ বছর হয়ে গিয়েছে, কিন্তু সেই ফকিন্নি বাজার ফকিন্নি বাজারই থেকে গিয়েছে, পরিচয়ে কোন ছেদ পড়েনি। এখানে ১০ টাকার ডাল, কুড়ি টাকার তেল, দশ টাকার বিভিন্ন সবজি মাছ মাংস সব পাবেন। সবাই অল্প অল্প টাকা দিয়ে অল্প অল্প পরিমাণ জিনিস কেনেন, যা বাংলাদেশের অন্যান্য বড়বাজারে পাবেন না।
সেই ১৯৭৪ সাল থেকে নিয়মিত এখানে বাজার বসছে। এখানে চাল ডাল কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে তেল মশলা মাছ-মাংস সবই কম দামে পাওয়া যায়। বিক্রি হয় ভাগ করে করে। কোন সবজির পচা অংশটা বাদ দিয়ে, আবার কোনোটা বা ভালো করে ধুয়ে একটু পরিষ্কার করে বিক্রি করা হয়। ডিমগুলো হয় অধিকাংশই ভাঙা। কোনটার পুরো কুসুম বেরিয়ে গেছে, কোনটা বেশ ভালই ফাটা। তবে যাই বলুন, ফকিন্নি বাজার হোক আর যাই বাজার হোক, এই বাজারে এসে মনের খুশিতে বাজার করে বহু মানুষ। পছন্দের মত সবজি কিনতে পারেন। মাছ মাংস কিনতে পারেন। এই বাজারে এত কম দামে বাজার পেয়ে হাসি ফুটে উঠে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর মুখে। বেঁচে থাকে এমন বাজার, শত শত বছর ধরে।
https://fb.watch/qo29yujTGp/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম