।। প্রথম কলকাতা ।।
ভিসার পর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার চাপে বাংলাদেশ! আসছে মার্কিনী ঝড়। সামলাতে পারবে তো? মুখে বলছে বন্ধু রাষ্ট্র, অথচ ছুরি মারছে পিছন থেকে। বাংলাদেশে চলছে স্বার্থের রাজনীতি। চীনের দাবিতে তোলপাড়। কিন্তু প্রকৃত বন্ধু কে? সুযোগ খুঁজছে চীনও, হাতের মুঠোয় রাখতে চাইছে দেশটাকে। যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে কথা বলবে তো?
যুক্তরাষ্ট্রের মুখে বারংবার বলছে বাংলাদেশ বন্ধু রাষ্ট্র, কিন্তু কথার দাম রাখছে কি? উপরন্তু পিছন থেকে মারছে ছুরি। এমনটাই দাবি চীনের রাষ্ট্রদূতের। একটা জিনিস খেয়াল করবেন, ভিসা-নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাথা গলানো, সব ক্ষেত্রেই একটা কথা বারবার বলা হয়েছে, অটুট রয়েছে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। সত্যি কি তাই? নাকি সবটাই স্বার্থের রাজনীতি? বাংলাদেশের পোশাক খাতে সর্ববৃহৎ রপ্তানির বাজার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবথেকে বড় অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পোশাক যায় শুধুমাত্র এই একটা রাষ্ট্রে। পাশাপাশি বাংলাদেশে জ্বালানি, তথ্য প্রযুক্তি, লজিস্টিক, খাদ্য পণ্য আর ওষুধ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে রেখেছে জো বাইডেনের দেশ। অঙ্কটা ঠিক কতটা হতে পারে বুঝতেই পারছেন। তাই তো এত বিবাদের মাঝেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বিন্দুমাত্র চিড় ধরেনি। সেই স্বার্থের গন্ধই হয়ত পাচ্ছে চীন। বুঝে নিতে চাইছে নিজের আখেরটা।
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়ানের মতে, একটি রাষ্ট্র নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু দাবি করে। বাংলাদেশের মানবাধিকার গণতন্ত্র এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে। অথচ তারাই বাংলাদেশিদের উপর একতরফা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এমনকি আরোপ করেছে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। প্রয়োজনের সময় যে বন্ধু সেই তো প্রকৃত বন্ধু। এই একটি দেশ বলতে তিনি যে যুক্তরাষ্ট্রকেই ঠেস দিয়ে কথাটা বললেন এটা স্পষ্ট ।
বহুদিন ধরেই চলছিল জল্পনা। ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর কি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা? সেই জল্পনায় যেন শিলমোহর দিতে চাইছে চীন। আরো বেশি করে বাংলাদেশকে কাছে টানার চেষ্টা। বাংলাদেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রকে টক্কর দিয়ে নিজেদের খুঁটি শক্ত করার প্রয়াস। ইয়াও ওয়েনের কথায়, চীন কখনো অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ করে না। বরং বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সাফল্য এবং স্থানীয় মানুষের জীবন জীবিকার উন্নতির জন্য সাহায্য করতে চায়। চীন বরাবরই বাংলাদেশের বন্ধু। চীন-বাংলাদেশ সবসময় একে অপরের পাশে আছে। যখনই সংকট হয়েছে তখনই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। যদিও চীনের এই ধরনের বক্তব্যের পর কিছু খোলসা করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
প্রশ্ন একটাই, তাহলে কি ভিসার পরে এবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ঘেরাটোপে পড়তে চলেছে বাংলাদেশ? ফল কিন্তু খুব একটা ভালো হবে না। কারণ এখনো পর্যন্ত সমানে সমানে টক্কর চলছে দুই দেশের। বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথা নত করেনি। বরং চোখে চোখ রেখে সপাটে জবাব দিয়েছে। বিশ্ব রাজনীতিতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা একেবারেই নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্র বহুবার উত্তর কোরিয়ার উপর এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যার জেরে বন্ধ হয়েছে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বহু দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য। তলানিতে ঠেকেছে এই দুই দেশের সম্পর্ক। সোজা কথায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা একটা হুমকি, যা বার্তা দেয়, সংযত হও, না হলে অর্থনৈতিকভাবে এক ঘরে করে দেওয়া হবে। সেই ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে না তো বাংলাদেশের জন্য? উত্তর দেবে সময়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম