জি ২০-র করিশ্মা, সৌদির তেল খনি ভারতের হাতে ? হাহুতাশ পাকিস্তানের

।। প্রথম কলকাতা ।।

ভারতের আরও কাছে সৌদি, আক্ষেপ করা ছাড়া উপায় কী পাকিস্তানের? সৌদির যুবরাজ এক্সট্রা একদিন ভারতে থেকে গেলেন কি এমনি এমনি? মোদীর সঙ্গে বৈঠক, একগুচ্ছ ডিল। ভারত যা পেল, তাতে হাহুতাশ করছে ইসলামাবাদ। করিডরের পর জ্বালানি তেল শোধনাগার, ভারতে সৌদির ইনভেস্ট শুনলে মাথা ঘুরে যাবে। দিল্লির জি২০ ভরিয়ে দিয়েছে সৌদিকে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বেশি মজবুত হয়েছে। শুধু মোদীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য সিডিউলের বাইরে একটা দিন একস্ট্রা থেকে গেছেন। মুখোমুখি বসেছেন মোদী-সৌদির যুবরাজ। হায়দরাবাদ হাউসের ওই বৈঠক সাকসেসফুল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে সহযোগিতা গোটা অঞ্চলের শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য খুবই জরুরি। বলতেই হচ্ছে মোদী-সলমন আলোচনা দুই দেশের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির কারণ হয়ে উঠবে। এরমধ্যেই রয়েছে সুখবর। ভারত সৌদি একটা যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সম্মত হয়েছে। আগামীতে ভারতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সৌদি আরব। সেই বিনিয়োগকে সঠিক পথ দেখাতেই এই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করবে। এর মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে ভারতের পশ্চিম উপকূলে তেল শোধনাগার নির্মাণে। সৌদি আরবের তেল উৎপাদনকারী সংস্থা আরামকো, আবু ধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির সঙ্গে মিলে ভারতীয় সংস্থাগুলো ওই শোধনাগার তৈরি করার পরিকল্পনা। তবে এই শোধনাগার তৈরির ঘোষণা ২০১৮ সালেই হয়েছিল। ২০১৯ সালে যখন সৌদির যুবরাজ ভারত সফরে এসেছিলেন, তখনই ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন। এবার সেই কাজ এগোবে।

এছাড়াও কৃষি থেকে শুরু করে শক্তি, প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি-সহ একাধিক বিষয়ে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ নিয়ে একমত হয়েছেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথা এগিয়েছে। এর বাইরে অলরেডি, জি-২০ সামিটের মাঝে আমেরিকার নেতৃত্বে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মধ্যে রেল-বন্দর করিডর তৈরির মউ স্বাক্ষর হয়েছে। যে করিডর তৈরি হলে আগামী দিনে ভারত-সৌদির বাণিজ্যিক-সম্পর্ক দুই দেশকেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। বাণিজ্য রফতানিতে বিশেষ সুবিধা হবে। একদিকে যেমন সুয়েজ খালে জাহাজ-জট এড়ানো যাবে, তেমনই ভারত ইউরোপের মধ্যে আমদানি-রফতানিতে খরচ ৪০ শতাংশ কমবে। যাতে সৌদির বড় ভূমিকা রয়েছে কিন্তু এতো দৃঢ় মজবুত সম্পর্ক দুদেশের। কি করে?

পাকিস্তান সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তা সত্ত্বেও তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত কেন কীভাবে সৌদিদের সঙ্গে এধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারছে? ভারতের সঙ্গে এই ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা কি সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্কে কোনও এফেক্ট ফেলছে না? আসলে, সৌদির শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝেছে, পাকিস্তান থেকে উগ্রপন্থা বা জিহাদের উৎপত্তির একটা বড় রিস্ক আছে – যা সীমান্ত মানে না। আজ ভারত আক্রান্ত হলে কাল তারাও হতে পারে, ভারতের মতো তাদেরও সুদীর্ঘ সমুদ্রতট আছে – আর করাচি থেকে সৌদি উপকূল খুব দূরে নয়। এরপরই কিন্তু ভারত ও সৌদি মিলে রিয়াদ ঘোষণাপত্র জারি করেছিল, সন্ত্রাসবাদ-দমন যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলছে বিবিসির রিপোর্ট। মানে, সোজা কথায় সৌদি নিজের স্বার্থ দেখেছে। নিজের দেশকে নিরাপত্তা দেওয়াই তো ফাস্ট প্রায়োরিটি হওয়া উচিত। হ্যাঁ পাকিস্তানের সঙ্গেও সৌদির খুব নিবিড় সম্পর্ক আছে কিন্তু তারপরেও এবার জি ২০ তে পার্টিসিপেট করার জন্য সৌদির যুবরাজ ভারতে ছুটে এলেও, একদিন এক্সট্রা থেকে গেলেও, পাকিস্তানে পা রাখলেন না। যে পাকিস্তান কিছুদিন আগেও দাবি করছিল সৌদের যুবরাজ পাকিস্তানের আগে আসবেন। ফলে ভারতের সঙ্গে সৌদির এই ঘনিষ্ঠতা পাকিস্তানের জন্য যে মোটেই সুখবর নয় সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version