।। প্রথম কলকাতা ।।
ডিজিটাল জমানায় হাতে স্মার্টফোন আর কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন খুবই স্বাভাবিক বিষয় হয়ে গিয়েছে। উন্নত টেকনোলজি হওয়ায় এগুলি দ্রুত অ্যাক্সেস করা যায় এবং ভালো পরিষেবাও মেলে। কিন্তু এখানেই যে বিপদ। বিভিন্ন ব্লুটুথ ইয়ারবাড এবং ইয়ারফোন হ্যাকিং হওয়ার ঘটনা সামনে এসছে সম্প্রতি। ওয়্যারলেস গ্যাজেটের ব্যবহার বাড়লেও তার সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে এখনও সচেতন নয় মানুষ।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়্যারলেস গ্যাজেটকে হাতিয়ার বানিয়ে সেই ব্যক্তির স্মার্টফোনকে টার্গেট করে হ্যাকাররা। আর এই ধরণের ব্লুটুথ ডিভাইজগুলি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খুবই সংবেদনশীল হয়। বিভিন্ন উপায়ে সেটিকে হ্যাক করে ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে দেয় সাইবার অপরাধীরা।
কীভাবে হ্যাক হতে পারে Bluetooth Earphone?
ব্লুটুথ হ্যাকিংকে সাধারণ দুটি নামে ডাকা হয় – ব্লুবাগিং (Bluebugging) এবং ব্লুজ্যাকিং (Bluejacking)। এটি এমন একটি কৌশল যেখানে হ্যাকাররা প্রথমে নির্দিষ্ট ইউজারদের একটি ব্লুটুথ ইয়ারফোন টার্গেট করে। তারপর সেই ইয়ারফোন যখন ১০ মিটারের দূরত্বে আসে তারা সেটিকে কানেক্ট করার চেষ্টা করে। এই কানেক্ট করার জন্য ব্রুট ফোর্স পেয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যা মূলত কানেক্টিভিটি কোড ক্র্যাক করার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত পাসওয়ার্ড চেষ্টা করা।
একবার ইয়াফোনটি কানেক্ট হয়ে গেলে হ্যাকাররা সেই ব্যক্তির ফোনে ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার প্রবেশ করিয়ে তার সংবেদনশীল ডাটা, কল হিস্ট্রি, মেসেজ, কন্ট্যাক্ট, ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায়। এমনকি তারা ব্যাঙ্কিং অ্যাপে গিয়ে অর্থ লেনদেনও করতে পারে। ফোনে থাকা সেই ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে তাকে ব্ল্যাকমেইলও করতে পারে।
আরও পড়ুন : Best 5G Phones: 20 হাজার টাকার নিচে সেরা পাঁচ 5G স্মার্টফোন! সবাই কিনছে, দারুণ ফিচার্স
Bluetooth Earphone বা TWS ব্যবহারকারীরা কীভাবে সতর্ক থাকবে?
এই হ্যাকিং যে কোনও ওয়্যারলেস ব্লুটুথ ডিভাইজে হতে পারে। তাই সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন।
১. ইয়ারফোন বা TWS এর ব্যবহার হয়ে গেলে সেটির ব্লুটুথ সবসময় অফ রাখুন।
২. ব্লুটুথ সেটিংসে গিয়ে আপনার ‘ডিভাইজ অন্যান্য ডিভাইজে যদি ‘ভিজিবেল’ হয় তাহলে অপশনটি বন্ধ রাখুন।
৩. ফোনে সফটওয়্যার আপডেট এলে সেটি অবশ্যই করুন যাতে করে আপনি তাদের লেটেস্ট সিকিউরিটির আওতায় থাকতে পারেন।
৪. পাবলিক WiFi ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. পাবলিকের মাঝে বা কোনও অপরিচিত ডিভাইজ থেকে ব্লুটুথ পেয়ারিং (Bluetooth Pairing) রিকোয়েস্ট নেবেন না।
৬. অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহার করুন যা স্ক্যান করে ফোনে ম্যালওয়্যার আছে কিনা জানা যায়। এ ক্ষেত্রে গুগল প্লে প্রোটেক্ট (Play Store এ থাকে) কাজে আসতে পারে।
৭. ফোনে ব্লুটুথ নাম কখনো নিজের নামে রাখা উচিত নয়।
৮. ব্লুটুথের মাধ্যমে সংবেদনশীল ডাটা শেয়ার থেকে বিরত থাকুন।
৯. ব্লুটুথ ইয়ারফোনের সাথে কানেক্টড ডিভাইজগুলি যাচাই করুন, কোনও ডিভাইজ যদি ব্যবহারে না থাকে সেটি মুছে ফেলুন।