পাকিস্তানে হিন্দু মন্দির দখলের চেষ্ঠা! সারদাপীঠ আগলালো মুসলিমরা, ১৮ শক্তিপীঠের ১ পীঠ

।। প্রথম কলকাতা ।।

পাকিস্তান দখল করে নিচ্ছে সারদাপীঠ হিন্দু মন্দিরের জমি। হিন্দু মন্দির সারদাপীঠকে কি পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হবে? মুসলিমরা বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন ১৮ মহাশক্তিপীঠের এক পীঠ সারদামন্দির পাকিস্তানে কেন? পিওকে-তে মন্দির বাঁচাতে স্থানীয়দের সঙ্গে ধুন্ধুমার পাকিস্তান সেনার। পাকিস্তানে একের পর এক মন্দির ধ্বংসের খবর তো প্রায়শই শুনে থাকেন কিন্তু এবার এমন এক মন্দিরকে টার্গেট করেছে পাক সেনা যে মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে ভারতীয়দের শ্রদ্ধা, অপার করুণা, আবেগ আর আরাধনা। পাকিস্তান সেনা গুঁড়িয়ে দিতে চাইছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা হিন্দুদের ১৮ মহাশক্তিপীঠের এক পীঠ সারদাপীঠকে।

ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট বলছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নীলম নদীর তীরে পাহাড়ি গ্রাম সারদা। এখানেই আছে সুপ্রাচীন তীর্থক্ষেত্র সারদা পীঠ। সেই সারদাপীঠের জমি দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে পাক আর্মি কিন্তু পাকিস্তানের সেনাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠা পিওকের স্থানীয়রাই সেনাদেরকে খেদিয়ে বের করে দিচ্ছে এলাকা থেকে। এর মানে মহিমা বুঝুন মুসলিমরা বুক দিয়ে আগলাচ্ছে হিন্দু মন্দিরকে একসময় এই মন্দিরে মা দুর্গার এক রূপ সারদা দেবীর মূর্তি ছিল। কাশ্মীরী পণ্ডিতরা এখন আর এই পীঠ দর্শন করতে পারেন না। তাই সারদা পীঠ সংলগ্ন গ্রামের মুসলিম অধিবাসীরা ২০১৮ সালে এই মন্দির চত্বরের মাটি সংগ্রহ করে পাঠিয়ে ছিলেন কাশ্মীরী পণ্ডিতদের কাছে। হিন্দু বিশ্বাস মতে ১৮টি মহাশক্তিপীঠের অন্যতম এই মন্দির। হিন্দু ধর্ম মতে এখানে সতীর ডান হাত পড়েছিল। শুধু হিন্দু ধর্ম নয় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এই সারদা পীঠ হয়ে উঠেছিল বৌদ্ধধর্মের অন্যতম জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। জানলে অবাক লাগবে উপমহাদেশে জ্ঞানচর্চার অন্যতম কেন্দ্র এই সারদা পীঠে এক সময় অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা করেছিলেন।

কলহন, আদি শঙ্করাচার্য্য, কুমারজীবের মতো পণ্ডিতেরা পাণিনি সহ আরও অনেক ভারতীয় পণ্ডিতের লেখা দীর্ঘদিন এই মন্দিরে রাখা ছিল বলে বিশ্বাস ঐতিহাসিকদের। তবে হ্যাঁ পাক অধিকৃত কাশ্মীর যবে থেকে পাকিস্তানের অংশ হয়েছে। তারপর থেকে ধ্বংসাবশেষ ছাড়া এই মন্দিরের এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। যদিও এর আগেও মন্দিরের বাইরের দেওয়াল ভেঙে সেখানে কফি শপ বানিয়ে ছিল পাকিস্তান সেনা। এবার জোর করে জমি দখলের চেষ্টা। প্রাচীন ইতিহাসে অনেক সময়ই কাশ্মীরের উল্লেখ আছে শারদা-দেশ নামে শারদা পীঠের কারণেই এই নাম বলে মনে করেন ঐতিহাসিকেরা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজফফরাবাদ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই পীঠ।

এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও চরম। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে দু’বছরের জন্য এই মন্দিরে ছিলেন চীনা পর্যটক এবং বৌদ্ধ পণ্ডিত হিউয়েন সাং। ১১৪৮ খ্রিস্টাব্দে কলহনের লেখা রাজতরঙ্গিনীতে শারদা পীঠকে হিন্দু ধর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আবুল ফজলের কথা অনুযায়ী এই মন্দির চত্বর পুরোটাই ছিল সোনার মোড়া। প্রতি মাসে পূর্ণিমার আট দিন পর এই মন্দিরে অলৌলিক ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন তিনি। মধুমতী নদীর তীরে এই মন্দির বলে উল্লেখ করেছেন তিনি এই মধুমতী নদীকেই এখন ডাকা হয় নীলম নামে। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় পাশতুন উপজাতিদের দখলে আসে এই এলাকা। ফের বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যায় শারদা পীঠ। এখন এই মন্দির সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত কোনও বিগ্রহ নেই কিন্তু ভারতের হিন্দুরা এখনও স্বপ্ন দেখেন কোনওদিনও পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের দখলে এলে এই সারদাপীঠ দর্শন করতে পারবে হিন্দুরা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version