ভারতের বিরুদ্ধে চিনকে উস্কে দিচ্ছে আমেরিকা! ন্যাটো প্রত্যাখ্যানের বদলা নয় তো?

।। সুচিত্রা রায় চৌধুরী ।।

ন্যাটোকে প্রত্যাখ্যান বলে মোদী সফরেই বড় গেম যুক্তরাষ্ট্রের। আমেরিকা কি ভারতের বিরুদ্ধে আরও উস্কে দিচ্ছে বেজিংকে? এমনটা হলে দিল্লিকে ভাবতে হবে। মোদীকে পাশে পেতে চিনকে নিয়ে কেন বড় ঘোষণা বাইডেন? নমো-বাইডেন নৈশভোজে বদলে গেল অনেক অঙ্ক। আমেরিকার তালে তাল মেলাবে ভারত৷ এই ভুল ধারণাটা এখন ছেড়ে দিক ওয়াশিংটন। ্প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একটা ডিনার এই সময়টারই তো অপেক্ষা করছিল বোধহয় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রকে যেভাবে এই কয়েকদিনে ভিলেন বানিয়েছে চিন এবার এল তার মোক্ষম জবাব বা বদলা।

কিন্তু এখনই কেন? আমেরিকার এই আগ্রাসন কি ভারতকে বিপদে ফেলতে পারে? অনেকেই এই প্রশ্নটা তুলছেন। নমোর এই সফর কূটনৈতিকভাবে মারাত্মক ইমপরটেন্ট৷ অনেক রিস্ক অনেক ইকুয়েশন। চিনকে নিয়ে একেবারে সোজাসাপটা কড়া বিদেশনীতির রয়েছে দিল্লির। কিন্তু মনে রাখতে হবে বেজিংকে উস্কে দেওয়ার মতো কোনও মন্তব্য ভারত করে না। আমেরিকা যেটা করল সেটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না তো? এক্ষেত্রে অনেকেরই মত একেবারেই নয়, উচিত জবাব দেওয়া হয়েছে। আমেরিকার হুমকির পরই ওপাশ থেকে গর্জে উঠল ড্রাগনের দেশ। আইরিশ কবি উইলিয়ম বাটলর ইয়টসের অনুবাদ করা উপনিষদ। মাইসুরুর বিখ্যাত চন্দনকাঠের তৈরি একটি বাক্সে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডির জন্য ছিল সাড়ে ৭ ক্যারাটের সবুজ হিরে। দেশের অর্থ ধ্বংস করছেন মোদী সরকার এমনটা বলে যারা তেড়ে আসবেন তাদের জন্য বলে রাখি এই হিরেটি খনি থেকে মেলেনি পরীক্ষাগারে সৌরশক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে বানানো হয়েছে। এটি পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তাবাহী। এর মাঝেই এল বিস্ফোরক খবর৷ ভারত হুড়োহুড়ি করে কোনও প্রতিক্রিয়া দেবে না। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিনকে স্বৈরাচারি শাসক বলে পার্সোনাল টার্গেট করেছেন জো বাইডেন। তাহলে কি ধরে নিতে হয় সম্প্রতি ব্লিঙ্কনের বেজিং যাওয়ার পর এমন কিছু আচরণ বা মন্তব্য করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যার প্রতিশোধ আসলে এখন তুললেন বাইডেন।

শুধু মাত্র এটাই নয় চিনের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়েও আক্রমণ শানালেন বাইডেন। চিনের সঙ্গে আমেরিকার মুখোমুখি বৈঠক হয়েছে বেজিংয়ের মাটিতে। তাইওয়ানের স্বাধীনতা নিয়ে অদ্ভুত মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে। কূটনীতিকদের মত ছিল এটা যেন চিনকে তাইওয়ান আক্রমণের চাবিকাঠি তুলে দিল আমেরিকা। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কেন এখন চিনকে নিয়ে এমন আক্রমণ? যখন সেদেশে উপস্থিত চিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের প্রধানমন্ত্রী খুব সুক্ষ্ম কূটনৈতিক গেম খেলছে আমেরিকা। বাইডেন বলেছেন চিন এখনও গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকার এধরণের মন্তব্য করা মানে বিশ্বের সামনে রীতিমত চিনের মুখোশ খুলে দেওয়া হল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ এখানে অন্য গন্ধ পাচ্ছে। তারা বলছেন নমোর ওয়াশিংটন সফর কালে চিনকে আক্রমণ এটা কিন্তু বেজিং অন্য চোখে দেখবে। আর সেখানেই কি ভারতের প্রতি চিনের আগ্রাসন আরও বেড়ে যেতে পারে? আর আমেরিকা কি ঘুরপথে এভাবেই ভারতের সঙ্গে রাশিয়া ঘনিষ্ঠতার বদলা নেবে? নাকি ভারত ন্যাটোকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করল বলে এটা তার বদলা।

এর আশঙ্কা বা সম্ভাবনা খুব কম হলেও এটা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ আমেরিকায় যাওয়ার পর ভারতের তরফ থেকে কিন্তু চিনকে কোনও ধরণের বার্তা দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এক্ষেত্রে দিল্লি এতটা ফাস্ট ফরোয়ার্ড প্রতিক্রিয়া দেবেও না। সবটা সমঝে বুঝে ঠান্ডা মাথায় তবেই পা ফেলা হচ্ছে। কিন্তু আমেরিকার হুঁশিয়ারি পেতেই পাল্টা চিনও ভড়কে গেল। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই মন্তব্য খুবই অযৌক্তিক এবং এটা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেয় সরাসরি মন্তব্য করলেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং। কূটনীতিবিদরা বলছেন আমেরিকা-চিন দ্বন্দ্বে আগেও কোনওদিনও ঢোকেনি দিল্লি এবারও ঢুকবে না এটা বাজি রেখে বলা যায়। চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নিয়ে যে উত্তেজনা রয়েছে সেটা কন্ট্রোল করতে ভারত একাই একশ। আগেও জানানো হয়েছিল মনে করে দেখুন ন্যাটো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের জোরাজুরি এমনই উত্তর দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তাই নমোর এই সফরে আগে আগে হোতা হ্যায় ক্যা৷

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version