মহারাষ্ট্রের এই মেয়েটি ফার্স্ট গার্ল হলেও দুবেলা গ্যারেজে কাজ করতে হয়

।। প্রথম কলকাতা ।।

মহারাষ্ট্রের এই ছোট মেয়েটি ফার্স্ট গার্ল। অথচ দুবেলা খাবার জোগাড়ের জন্য তাকে গ্যারেজে কাজ করতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে বাইক সারাই করে ১২ বছরের মেয়েটি। আপনার প্রিয় রয়্যাল এনফিল্ড বুলেটে কোনও সমস্যা হলে তা একবার দেখেই সারিয়ে দিতে পারবে। ১২ বছরের মেয়ে নিজেই এখন দক্ষ মেকানিক। গোটা সংসারের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। যে বয়সে শিশুদের আগলে রাখে পরিবার সেই বয়সে পরিবারকে দুহাত দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে ছোট মেয়েটি। ছোট দুটো হাতে তেল-কালির দাগ। ১২ বছরের অভাবী মেয়েটিই মহারাষ্ট্রের গর্ব।

এই ছোট্ট মেয়েটির জীবনের লড়াই জানুন। পড়াশোনায় সে ভীষণ ভালো। কিন্তু কাজ করতেই হবে আর কোনও উপায় নেই। কার্তিকা জানে কাজ না করলে ঠাকুমা আর শয্যাশায়ী মা-র খাবার জুটবে না। যেটুকু আয় তার থেকেই কোনওমতে চলে সংসার। চলছে পড়াশোনাও। মহারাষ্ট্রের অমরাবতীর মত ছোট অঞ্চলে ভাঙাচোড়া বাড়িতে মাথার গোঁজার ঠাঁইটুকু রয়েছে। ক্লাস সিক্সে উঠতে এবারও ফার্স্ট হয়েছে কার্তিকা। যদিও জানা নেই টানাটানির সংসারে তার পড়াশোনা আদৌ আর সম্ভব হবে কিনা!

১২ বছরের মিষ্টি মেয়েটির মুখে সরল হাসি! দুদিকে দুটো বিনুনি করে কাজে লেগে যায়। এই ছোট কাঁধেই তিনটে পেটের দায়িত্ব। কিন্তু জানেন কি? মহারাষ্ট্রের এই অভাবী ছোট মেয়েটি অন্যতম রয়্যাল এনফিল্ড বাইকের স্পেশ্যালিস্ট। বুলেট বাইকের নাড়ি নক্ষত্র তার সবটাই জানা। শুধু বুলেট নয় যে কোনও বাইকের ব্যাটারি থেকে যন্ত্রাংশের খুঁটিনাটি সবটাই জানা কার্তিকার।ভাবছেন তো এত ছোট মেয়ে বাইকের মেকানিক হল কীভাবে? আসলে কার্তিকার বিশ্বাস পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ালে মা -ঠাকুমাকে ভালো রাখতে পারবে। নিজেও ভালো থাকবে। তাই পড়াশোনার জন্য কোনওদিনও বলতে হয়নি তাকে।

কিন্তু টাকার তো দরকার, বাড়ির কাছে অমরাবতী অঞ্চলে দুর্গা মোটর্স নামে এক গ্যারাজে গিয়ে যোগাযোগ করে। কাজও জুটে যায়। একদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে বাইক সারাই করা দেখত। তারপর কখন থেকে যেন আপন হতে শুরু করে যন্ত্রপাতিগুলি নাড়াচাড়া করতে করতে কার্তিকা নিজেই এখন রয়্যাল এনফিল্ডের মেকানিক। তার বয়সী আর পাঁচটা মেয়ে যখন খেলা -বন্ধু-পড়াশোনা নিয়ে হেসেখেলে দিন কাটাচ্ছে। তখন রোজ স্কুল থেকে ফিরে কিছু খাবার জুটলো কী না জুটলো দুটো বিনুনি বাঁধা অবস্থাতেই গ্যারাজে চলে আসে অমরাবতীর ছোট মেয়েটি।

কাজের ফাঁকে কতটুকু আর সময় বাঁচে? রাত জেগে পড়াশোনা সেরে, হোম ওয়ার্ক শেষ করে কার্তিকা। আবার সকালে স্কুল! ১২ বছরের মেয়েটির ছোট কাঁধে বিশাল দায়িত্ব। এত অভাবের মধ্যেই স্বপ্ন দেখে ভালো চাকরি করবে। তার হার না মানা লড়াইয়ের জন্য প্রথম বাংলার কুর্নিশ। লড়াকু এই মেয়ে সব স্বপ্ন সত্যি হোক।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version