চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রহস্যের ঘনঘটা, থরে থরে সাজানো বরফের পাহাড়-গ্যাসের খনি? বড় রিস্ক নিল চন্দ্রযান ৩

।। প্রথম কলকাতা ।।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে লুকিয়ে কোন গোপন ‘রহস্য’? কেন ইসরোর অনুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় চাঁদের অন্ধকার দিক? আছে কী বরফের পাহাড়? চাঁদের মাটি ছুঁয়েই ২ টো ইম্পর্ট্যান্ট গ্যাসের সন্ধান চালাবে চন্দ্রযান ৩। অজানা আর রহস্যে ভরা তথ্য আসবে সামনে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে কোন “চাঁদের পাহাড়” এর সন্ধান চালাবে চন্দ্রযান ৩ এর রোভার? কেন এখনও পর্যন্ত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কোনও মহাকাশযান অবতরণ করেনি? কী কারণে দক্ষিণ মেরু অঞ্চলকেই বেছে নেওয়া হল চন্দ্রযান-৩ অভিযানে? চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলের সঙ্গে মেরু অঞ্চলের তফাৎ কোথায়? একের পর এক ধাপে পা রাখছে চন্দ্রযান ৩ অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ভারত, টেনশনে ইসরো।

বিশ্বের প্রত্যেকটা চন্দ্রাভিযানে ব্যবহৃত মহাকাশযান, যা পারেনি তা করে দেখাবে চন্দ্রযান ৩। এতোদিন চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবতরণ করেছে মহাকাশযানগুলো। এবার চাঁদের মেরু অঞ্চলে পা রাখবে চন্দ্রযান ৩। যেটা ইসরোর জন্য অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু, চাঁদের যে অংশের ভূপৃষ্ঠ খড়খড়ে, অধিকাংশ স্থান অন্ধকারে ঢাকা, সূর্যের আলো যেখানে কখনই পৌঁছয় না সেখানেই কেন নামবে চন্দ্রযান ৩? আসলে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে জল থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তাই চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পরেই দক্ষিণ মেরুতে জলের সন্ধান চালাবে রোভার প্রজ্ঞান। তাছাড়া বরফ আছে কিনা সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে। দুটো জটিল গ্যাসের সন্ধানও চালানো হবে। হিলিয়াম আর অর্গান নিয়েও চলবে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

জানা গেছে, চাঁদের মাটিতে বা মাটির নীচে রয়েছে হিলিয়াম এবং আর্গন গ্যাস। চন্দ্র পৃষ্ঠের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে চাঁদের বয়স আবিষ্কারেরও চেষ্টা চালানো হবে। রোভারে পাঁচটি যন্ত্র থাকবে, যার মূল টার্গেট চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক চরিত্র, সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের তথ্য বিশ্লেষণ করা, আর চন্দ্রপৃষ্ঠের ঠিক নীচে কী হচ্ছে, তা খুঁজে দেখা। চন্দ্রযান ১ এর অর্বিটার প্রথম শনাক্ত করে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রয়েছে জল। বিষয়টা সামনে আসতেই বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। এরপর নাসার এলআরও অরবিটার পৌঁছে যায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। চন্দ্রযান ১ এর অরবিটারের সঙ্গেই সহমত পোষণ করে নাসার এলআরও অরবিটার। আর তখন থেকেই চাঁদের দক্ষিণ মেরু ছোঁয়ার আগ্রহ ভারতের। ফলে চন্দ্রযান ২ ফেইল করলেও চন্দ্রযান ৩ এর মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণ করতে চাইছে ইসরো। এটা চাঁদের এমন একটা দিক যেখানে

তাপমাত্রা ২৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নীচে থাকতে পারে। যেহেতু চাঁদের এই অংশের তাপমাত্রা খুবই কম তাই বহুকাল ধরে হুবহু একই অবস্থায় আটকে থাকতে পারে কোনও বস্তু। আবার একইভাবে সূর্যালোকের অভাব এবং চরম ঠাণ্ডা যন্ত্রপাতি, পরিচালনার মূল অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও চাঁদের এই অংশে রয়েছে বিশালাকার গর্ত। এই গর্তগুলোর আকার কয়েক সেন্টিমিটার থেকে শুরু করে কখনও কখনও কয়েক হাজার কিলোমিটার পর্যন্তও বিস্তৃত।

যে বিশাকালাকার গর্তগুলোতে বরফের উপস্থিতির ইঙ্গিত মিলেছিল। তাই, স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি যথেষ্ট রিস্ক ও থাকছে। তবুও, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের চান্স এই অঞ্চলেই বেশি তার কারণে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরো। কিন্তু, সেদিক থেকে চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবতরণ করা তুলনামূলক সহজ ও নিরাপদ। যেখানে এতদিন প্রত্যেকটা চন্দ্রাভিযান এর মহাকাশযান অবতরণ করেছে। অগাস্টের ২৩-২৪ তারিখে চাঁদের পিঠে নামার কথা ল্যান্ডারটির। অধীর আগ্রহে সেই অপেক্ষাতেই গোটা বিশ্ব।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version