কেন ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধ বাঁধল ? আসল দোষী কে! ৭৫ বছরের অভিশাপ

।। প্রথম কলকাতা ।।

ইজরায়েল প্যালেস্টাইনের মধ্যে অশান্তি কেন? হামাস কারা? এমন কী রয়েছে জেরুজালেমে? যা নিয়ে এত দ্বন্দ্ব যুক্তরাষ্ট্র কেন ইজরায়েল বন্ধু হল? প্যালেস্টাইনের হাত শক্ত করে কোন শক্তিশালী দেশ? ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানইয়াহুর ঘোষণা যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে ইজরায়েলের লাগাতার মিসাইল বর্ষণ করা হচ্ছে। শিশু মহিলারা হাহাকার করছে রীতিমত কিন্তু কেন হচ্ছে এমন যুদ্ধ কেন ইজরায়েলকে সহ্য করতে পারেনা প্যালেস্টাইন? বা ভাইস ভার্সা। ইজরায়েলর প্যালেস্টাইন অশান্তির কি কোনও শেষ নেই কারা বারবার ইন্ধন জুগিয়েছে এই যুদ্ধের? হামাস সংগঠনই বা কাদের যাদেরকে জঙ্গি বলছে ইজরায়েল? বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণের মতো এরও বীজ লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাসে।

সবথেকে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কারণ জেরুসালেম। ইসরায়েল দাবি করে জেরুসালেমের ওপর তাদের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে তারা পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নেয়। এরপর থেকে ইজরায়েল জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী বলে গণ্য করে, কিন্তু এর কোন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই। অন্যদিকে প্যালেস্টানীয়রা পূর্ব জেরুসালেমকেই তাদের রাজধানী হিসেবে চায়। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপে বসবাসকারী ইহুদীরা ব্যাপক বিদ্বেষ-নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। সেখান থেকেই ‘জাওনিজম’ বা ইহুদীবাদী আন্দোলনের শুরু। তাদের লক্ষ্য ছিল ইউরোপের বাইরেয়কেবলমাত্র ইহুদীদের জন্য একটি রাষ্ট্র তৈরি করা। সেই সময় প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিন ছিল তুর্কী অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। এটি মুসলিম, ইহুদী এবং খ্রিস্টান এই তিন ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র ভূমি হিসেবে বিবেচিত। ইহুদীবাদী আন্দোলন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ইউরোপের ইহুদীরা দলে দলে প্যালেস্টাইনে গিয়ে বসত গাড়তে শুরু করে। কিন্তু তাদের এই অভিবাসন স্থানীয় আরব এবং মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে। সেসময় আরব এবং মুসলিমরাই ছিল সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ।

এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যেভাবে লাখ লাখ ইহুদীকে হত্যা করা হয়  হলোকাস্ট। তার পর ইহুদীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় চাপ বাড়তে থাকে এর মাঝে হামাসের উৎপত্তি হল কীভাবে? ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে থাকা অঞ্চলটি তখন প্যালেস্তানীয় আর ইহুদীদের মধ্যে ভাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল কিন্তু প্যালেস্টাইনে আরবদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যে অঞ্চলটি বরাদ্দ করেছিল তার অর্ধেকটাই চলে যায় ইসরায়েল বা ইহুদীদের দখলে। প্যালেস্টাইন চায় ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের আগে যে সীমান্ত ছিল সেই সীমানার ভিত্তিতে প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গঠিত হবে আর ইসরায়েল এটা মানতে নারাজ। ১৯৮৭ সালে জন্ম নেয় প্যালেস্তাইনের সবচেয়ে কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠন হামাস। ‘ইন্তিফাদা’ বা প্যালেস্তাইনি গণজাগরণ শুরু হওয়ার পরে তাদের জন্ম। বর্তমান ইজরায়েল, গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংককে নিয়ে তৈরি হবে একটি ইসলামপ্রধান রাষ্ট্র এমনই স্বপ্ন দেখে হামাস।
তাই তারা ইজরায়েলে জঙ্গিগোষ্ঠী নামে পরিচিত।

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের পক্ষে রয়েছে খুবই ক্ষমতাধর একটি লবি। সেখানে জনমতও ইসরায়েলের পক্ষে। এর ফলে কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষেই ইসরায়েলেও ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয়া কঠিন এছাড়াও এই দুইদেশ ঘনিষ্ঠ সামরিক মিত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য পায় ইসরায়েল এই সাহায্যের একটা বড় অংশই খরচ হয় ইসরায়েলের জন্য সামরিক অস্ত্র কেনার জন্য। অন্যদিকে মনে রাখতে হবে প্যালেস্টাইনের পক্ষে খোলাখুলি সমর্থন যোগানোর মতো একটি বৃহৎ শক্তিও কিন্তু নেই। হামাসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এখন সিরিয়া, ইরান এবং লেবাননের হেযবোল্লাহ গোষ্ঠী বিশ্বের বহু দেশের সহানুভূতি প্যালেস্টাইনের পক্ষে থাকলেও সেটা কমই কাজে লাগে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version