Myanmar Conflict: ভারত পারলেও বাংলাদেশ কেন মায়ানমারকে নিয়ে এত নরম?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Myanmar Conflict: মায়ানমারকে নিয়ে ভারত বড় সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিল । বাংলাদেশেরও এমনই কঠোর ডিশিসন নিতে হবে বলছেন সেদেশের কূটনীতিবিদরা। সীমান্তে এমন নিয়ম করে দেওয়া হচ্ছে যা মায়ানমারের জন্য বড় ধাক্কা। দরকার পড়লে ভারত কতটা শক্ত হতে পারে বুঝিয়ে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শরণার্থীরা ভারতে না ঢুকতে পারলে বাংলাদেশে ভিড় বাড়াবে?

বাংলাদেশ চীনের ফাঁদে পাটা বেশ ভালো রকম দিয়েছে। এটাই কি বাংলাদেশের কাছে সুবর্ণ সুযোগ, যখন তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরানোর বিষয়টা নিয়ে আবারও উঠেপড়ে লাগবে । কারণ ভারত মায়ানমারের থেকে শরণার্থী ঢোকানোর রাস্তাগুলো এবার একে একে ধাপে ধাপে বন্ধ করে দিতে চলেছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মেহমুদের সঙ্গে ভারত আলোচনা করল । ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বিস্তারিত বৈঠক হল। এদিকে মায়ানমারের উত্তেজনা যেন ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে। আর ভারত তারমধ্যেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিলেন, এই পরিস্থিতিতে আপাতত মায়ানমারের সঙ্গে ভারতের অবাধ যাতায়াত বন্ধ। কি এই অবাধ যাতায়াত? সেটা বন্ধ করা মানে কীভাবে মায়ানমারকে ধাক্কা দেওয়া?

ওয়াকিবহাল মহল বলছে ভারত মায়ানমারের শরণার্থী নিয়ে মারাত্মকভাবে ভুক্তভোগী। তার সবথেকে বড় উদাহরণ মণিপুরের অশান্তি। তাহলে ভারতের আগেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বললেন, দেশের সীমান্তগুলো সুরক্ষিত রাখতে বদ্ধপরিকর আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মায়ানমার ও ভারতের ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম আপাতত বন্ধ রাখা হবে।

দেশের সুরক্ষা ও উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলোতে জনবিন্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।

প্রথম কলকাতার বহু দর্শকের কাছ এই ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম শব্দটা অচেনা হতে পারে, আপনি যাতে প্রতিবেদনের আরও গভীরে ঢুকতে পারেন, তাই এর মানে অবশ্যই আপনাকে জানাব।

ফ্রি মুভমেন্ট রেজিমেন্ট দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে চালু রয়েছে ফ্রি মুভমেন্ট রেজিমেন্ট। কোনও নথিপত্র ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ভিতরে যেতে পারেন দুই দেশের নাগরিকরা। তবে তার জন্য দুই দেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে । আর অন্য দেশে গিয়ে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকা যায়। তবে মায়ানমারের এই অশান্তির পর আপাতত সেই ছাড়পত্র মিলবে না।

শুধু তাই নয় এর ঘোষণার আগেই আরও একটা ঘোষণা করা হয় সেটা এখন নয় জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই। মায়ানমার সীমান্তের ১৬৪৩ কিলোমিটার অংশ ঘিরে ফেলা হবে কাঁটাতার দিয়ে। আর সেখানে কড়া নিরাপত্তাও মোতায়েন করবে সরকার। তাহলে কি এতদিন মায়ানমার ভারত বর্ডার ঘেরা ছিল না?বাংলাদেশও কি এবার ভারতের পর এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সীমান্ত ঘেরার ঘোষণা করতেই তার বিরোধিতা করতে মাঠে নামে মিজোরামের অতি ক্ষমতাশালী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন । ইয়াং মিজো এসোসিয়েশন এবং ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিল তাদের দাবি বাংলাদেশ আর মিয়ানমার তিন দেশেই তাদের আত্মীয় স্বজনরা বসবাস করেন। একই জনজাতি-গোষ্ঠীভুক্ত হওয়ার কারণে নিয়মিতই তারা যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিলে অথবা এফএমআর স্থগিত রাখলে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগই বন্ধ হয়ে যাবে। তবে কূটনৈতিক পরিস্থিতি বলছে , বর্তমানে মায়ানমার বা মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের যে সিচুয়েশন তাতে এখন আবেগ রক্ষার কোনও সময় নয় দেশের নিরাপত্তাই শেষ কথা। শুধু মায়ানমারের আজ অশান্তি হচ্ছে বলেই নয় মাঝে মাঝেই মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের ধাওয়া খেয়ে ভারতে পালিয়ে আসছেন। এছাড়া এই অবাধ খোলা সীমান্ত থাকায় সেখান থেকে মাদক-অস্ত্রশস্ত্র পাচারের দেদার রমরমা চলছে । যার ফায়দা পরোক্ষভাবে চীনও তোলে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীও ২৭৮ জনের একটি দল অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ নিয়ে মিজোরামে প্রবেশ করে বলে আসাম রাইফেলসের সূত্রগুলি জানাচ্ছে, হঠাৎ হঠাৎ বড় বড় বন্দুক আর গোলাবারুদ নিয়ে সামরিক পোশাক পরে তারা ভারতে চলে আসছে। সীমান্ত অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষ তো ভয় পেয়ে যাচ্ছেন ওই সব অস্ত্রশস্ত্র দেখে।

এবার বাংলাদেশের কথায় আসি, মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের আড়াইশ’ কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা সীমান্ত রয়েছে, আর এই সীমান্তের পুরোটাই উন্মুক্ত। ফলে ওই সীমান্ত দিয়ে প্রায়ই মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার খবর পাওয়া যায়। যার জন্য বাংলাদেশ রীতিমত ভুগছেও কিন্তু কড়া স্টেপ নিতে পারছে না। সেজন্যই কি মায়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সফরে আসা বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। বাংলাদেশ কি এবারই কোনও বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যদি পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায় বা হাতের বাইরে চলে যায় একেবারে এখানে আরও একটা বড় প্রশ্ন উঠছে, মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের কবে, কীভাবে ফেরত পাঠাবে বাংলাদেশ? মানবিক দিক বিবেচনায় আপাতত আশ্রয় দেওয়া হলেও, শিগগিরই তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের সরকার। কিন্তু তাদেরকে ফেরত পাঠাতে ঠিক কতদিন লাগতে পারে। সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে এখনো কিছু জানানো হয়নি। আশ্রয় নেওয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের ফেরত পাঠাতে সরকার ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের সাথে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তবে এটাতেও বড় সময় লাগবে এমনটাই মনে করছেন সেদেশের কূটনৈতিক মহল।

এদিকে জানা যাচ্ছে ৭২ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর মায়ানমার সেনা এবং ‘বর্ডার গার্ড পুলিশ’ (বিজিপি) বাহিনীর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ঘাঁটি তাউং পিও (বাম) দখল করে নিয়েছে। বিদ্রোহী আরাকান আর্মির যোদ্ধারা বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের অদূরে কয়েকটি সীমান্ত চৌকিও দখল হয়ে গিয়েছে। ভারত তো কয়েক পা এগিয়ে গেল, মায়ানমার সমস্যা দূর করতে বাংলাদেশ কি স্টেপ নেয় সেটাই এবার দেখার। https://www.facebook.com/100071607861801/posts/407856651611260/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz

Exit mobile version