।। প্রথম কলকাতা ।।
পৃথিবীর জন্য বড় রিস্ক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে কোন দেশ? কোন দেশের হাতেই বা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ? জানাজানি হয়ে গেছে, চারিদিকে হইচই হচ্ছে। কেন সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের উপর থেকে ভরসা উঠে যাচ্ছে বাকি বিশ্বের? ভূরাজনীতি আর অর্থনীতিতে যা দেখছেন, শুনছেন, বুঝছেন তার সব হিসেব যদি ওলটপালট হয়ে যায়? চীন, রাশিয়া, ভারত, ইরান নাকি যুক্তরাষ্ট্র; গোটা বিশ্বের রাশ ধরছে কোন দেশ? বিশেষজ্ঞদের কথা শুনলে শান্তিতে দু চোখের পাতা এক করতে পারবেন না। বিশ্ব রাজনীতিতে জটিল সমীকরণেরে খেলা। এরমধ্যে কার দিকে ঝুঁকছে বিশ্বের সব দেশ? ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি কি চীন নাকি রাশিয়া? ইরান নাকি উত্তর কোরিয়া? মার্কিন নীতি বিশেষজ্ঞ রিচার্ড হাসের সোজাসাপ্টা উত্তর।
না, এর কোনোটাই নয়! তাহলে কি জলবায়ু পরিবর্তন বা মহামারী? এতেও না বলেছেন। তাঁর মতে যুক্তরাষ্ট্রই ভবিষ্যৎ পৃথিবীর নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হুমকি। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অন্যান্যরা অনুকরণ করতে চায় না, বরং এর সম্পর্কে পূর্বভাস দিতে না পারা এবং এর নির্ভরযোগ্যতার অভাব যুক্তরাষ্ট্রকে দিনে দিনে বিষাক্ত করে তুলেছে দাবি তাঁর। যখন আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলো জটিল সময় পার করছে, যখন উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে ঠিক তখনই নিউইয়র্ক টাইমসের এই রিপোর্ট রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যদ্বাণী এক নিমেষে সব হিসেব পাল্টে দিয়েছে। ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গলার কাঁটা হয়ে বিধে থাকলো বাকি বিশ্বের কাছে। আসলে, মিত্রদের জন্য আমেরিকার উপর নির্ভর করা খুবই কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলো কেন যুক্তরাষ্ট্রকে ছেড়ে চীনের উপর ভরসা করছে? মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছেও চীন বন্ধু হয়ে উঠছে। প্রতি বাড়ছে ভরসা, বিশ্বাস। কিন্তু কেন?
একটা উদাহরণ দিয়ে বললে বুঝতে সুবিধা হবে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট যখন জাম্বিয়াতে গণতন্ত্রের পাঠ পড়াচ্ছেন তখন দেশটায় বিশাল এক হাসপাতাল গড়ে দিচ্ছে চীন। একইভাবে, মার্কিন নেতারা আফ্রিকার দেশে সফরে করলে চীনের বন্ধু হওয়ার বিপদ নিয়ে বক্তৃতা দেয়। কিন্তু চীনের নেতারা আফ্রিকার দেশে সফরে গেলে স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় উন্নয়ন আনে, গতি আনে এমন সম্পদ দিয়ে আসে। এটাই তো স্বাভাবিক যেকোনো দেশের মানুষ কথার চেয়ে কাজকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই তো আফ্রিকার ৫০ টি দেশ চীনের বেল্ট ও রোড ইনিশিয়েটিভ এর সদস্য। আর যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু ইউরোপ? যে, দীর্ঘদিন ধরে অন্ধের মতো দেশটার পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে আসছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের কি লাভ হয়েছে তা ওয়াশিংটন জানে। কিন্তু ধসে গেছে ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি।২০০৮ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি মার্কিন অর্থনীতির চেয়ে ১০% বড় ছিল।
অথচ, আজ মার্কিন অর্থনীতি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতির চেয়ে কয়েক শতাংশ বড়। এদিকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যুদ্ধ বাঁধিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিক্রিয়ায় শরণার্থী সংকট তৈরি হয়েছে ইউরোপে। একই সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ঘায়েল করার সুযোগ পেয়ে ইউক্রেনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানেও টেনে এনেছে ইউরোপ কে। কারো কারো মতে, যুদ্ধ বিরতি বা শান্তি আলোচনা হতে দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। আর তার মাশুল গুনছে গোটা ইউরোপ রাশিয়ার জ্বালানি গ্যাস কেনায় বাধা ও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে চার গুণ বেশি দামে জ্বালানি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন শরণার্থী সংকট থেকে ইউরোপকে মুক্তি দিতে চাইলে মধ্যপ্রাচ্য আর আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। কারো কারো মতে এই ক্ষমতা আছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের। তবে যুক্তরাষ্ট্র নাকি স্বার্থপর। হ্যাঁ এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। আর চীন দ্যিখে পারস্পরিক লাভ। তাহলে কি চীনের হাতেই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ? সত্যিই কি নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারছে যুক্তরাষ্ট্র?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম