বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে দেবে ইউরেনিয়াম! রূপপুরে নিউক্লিয়ার জ্বালানি পাহাড়ার দায়িত্বে কে? এবার জলের দরে বিদ্যুৎ

।। প্রথম কলকাতা ।।

আকাশপথে বাংলাদেশে ঢুকবে ইউরেনিয়াম। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তোড়জোড় শুরু, উৎপাদন চালু হবে কবে? প্রস্তুত বাংলাদেশ এর সেনা। তৈরি পুতিনও। ইউরেনিয়াম এর উপর কতটা নির্ভরশীল রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র? মহামূল্যবান ইউরেনিয়াম সংরক্ষণে বড় উদ্যোগ। নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হলো বাংলাদেশ। কিন্তু, সূক্ষ প্রযুক্তির এই প্রকল্প কতটা নিরাপদ? শত বছরের জন্য নিশ্চিন্ত বাংলাদেশ, বিদ্যুৎ মিলবে একেবারে জলের দরে। বিশ্বের বুকে পাবনার রূপপুর বাংলাদেশের নাম ছড়াচ্ছে। কিন্তু কাজ এগোলো কতদূর?

চলতি বছরেই নিউক্লিয়ার জ্বালানি ইউরেনিয়াম আসার কথা রূপপুরে। মহামূল্যবান এই জ্বালানি পণ্য বিশেষ উড়োজাহাজের বিশেষ কন্টেইনারে করে রাশিয়া থেকে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসবে। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সড়ক পথে এই ইউরেনিয়াম বাংলাদেশের রূপপুরে পৌঁছে যাবে। রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটো ইউনিটে বছরে ৭০ থেকে ৮০ টন ইউরেনিয়াম প্রয়োজন হবে। প্রতি ১৮ মাস পর পর চুল্লিতে ওই ইউরেনিয়াম লোড করা হবে। প্রতি কেজি উরেনিয়ামের জন্য সরকারের খরচ পড়বে ৫৫০ ডলার। কিন্তু এই মহা মূল্যবান ইউরেনিয়াম সংরক্ষণে ঠিক কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

ইউরেনিয়াম সংরক্ষণের জন্য এরই মধ্যে সাপোর্ট স্ট্রাকচার, ফ্রেশ ফুয়েল স্টোরেজ ও রয়ুয়েল স্টোরেজ এর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনে নকশা অনুযায়ী সফল ভাবে বসেছে ট্রান্সপোর্ট লক। ২৩৫ টন ওজনের এই যন্ত্রের মাধ্যমেই রিয়্যাক্টরে পারমাণবিক জ্বালানি লোড করা হবে। এছাড়া প্ল্যান্টের স্টার্ট আপ পর্যায়ে হুইল সিমুলেটর সরবরাহ এবং রিয়্যাক্টর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালানো হবে ট্রান্সপোর্ট লক দিয়েই। সে সবই তো হল কিন্তু দেশটার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব বর্তাল কাদের উপর? সেই দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নিউক্লিয়ার প্রোটেকশন ফোর্স। ফোর্সের আওতায় একটি আরমড স্কোয়াড্রন এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম থাকবে। এই বাহিনী সরাসরি সেনাপ্রধান এবং প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে। এছাড়া নিরাপত্তার কারণে বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম পর্যায়ক্রমে কেনা হবে। যার মধ্যে থাকবে বিভিন্ন সেফটি ইকুইপমেন্ট, শক্তিশালী সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট। জানিয়ে রাখি, সূক্ষ্ম প্রযুক্তির এই প্রকল্প শতভাগ নিরাপদ বলেই আশ্বস্ত করছে সরকার। কেন্দ্রটির ভি-ভি-ই-আর ১২০০ টাইপের দুটি তৃতীয় প্রজন্মের রিয়্যাক্টর থেকে উৎপাদিত হবে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আগামী ১০০ বছর ধরে নিরাপদে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ।

একই সঙ্গে দেশও উন্নীত হবে, প্রযুক্তি ব্যবহারের নতুন স্তরে। অতি-বৈজ্ঞানিক স্পর্শকাতর এই স্থাপনাটি নির্মাণে কারিগরি সহায়তা এবং আর্থিক ব্যয়ের বেশিরভাগই আসছে রাশিয়া থেকে। কিন্তু কবে থেকে মিলবে বিদ্যুৎ, অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় বাংলাদেশ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী জানিয়েছেনচ লতি বছরের সেপ্টেম্বরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমেই পরমাণুসমৃদ্ধ দেশগুলোর এলিট প্ল্যাটফর্ম মানে নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হিসেবে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে, পাবনার এই রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের আশা ভরসার বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version