।। প্রথম কলকাতা ।।
Arthritis Pain: হাতে পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। উঠতে বসতে ব্যথা। চলাফেরায় ভীষণ কষ্ট। বাতের ব্যথা নয় তো? যার হয় সেই বোঝে এই কষ্ট ঠিক কতটা অসহ্যকর। এই ব্যথা অবহেলা করলে সারা জীবন ভুগবেন। বাতের চিকিৎসা কি? কিভাবে এই যন্ত্রণা থেকে একেবারে ছুটকারা পাবেন? আপানার ভুলেই আপনি কষ্ট পাবেন।
বাতের ব্যথা বলতে বোঝায় অস্থিসন্ধি বা হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা। বাত একটা নির্দিষ্ট রোগ নয়। একাধিক জয়েন্টে অ্যাটাক করতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বের ৫ জনের মধ্যে ১জন আর্থ্রাইটিস বা বাতে আক্রান্ত। ভারতে ৬০ বছরের উপরে ১৮ শতাংশ মহিলা এবং ৯.৬ শতাংশ পুরুষ এই রোগের ভুক্তভোগী।
কী করে বুঝবেন আপনার বাত হয়েছে?
যদি দেখেন হাত পা কিংবা কোমরের হাড়ের জয়েন্টে প্রচন্ড ব্যথা করছে, ফুলে গেছে, বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না , হাতের আঙুল কনুই তালু গোড়ালি কিংবা পায়ের ব্যথায় পাতায় ব্যথা অনুভব করছেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বাত হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়, জ্বর জ্বর অনুভূত হয়। বাতে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন বয়স্কররা । এই রোগ কিন্তু একেবারেই ছোঁয়াচে নয়, তবে বংশগত কারণে এই রোগ হতে পারে। এছাড়াও অস্থি সন্ধিতে আঘাত, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন, ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া এবং অত্যাধিক ধূমপান কিংবা অ্যালকোহলের কারণে বাতের ব্যথা হতে পারে।
বাতের প্রচুর ধরণ। প্রায় ২০০ ধরনের বাত রয়েছে, তবে ২ ধরনের বাতের সঙ্গে মানুষ বেশি পরিচিত। অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। এছাড়াও কখনো রক্তের মাধ্যমে জীবাণু সরাসরি হাড়ের জয়েন্টে গিয়ে ইনফেকশন তৈরি করে। তখনো ব্যথা আরো তীব্র হয়। একে বলে সেপটিক আর্থ্রাইটিস।
অস্টিওথ আর্থ্রাইটিস শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে, একটু বেশি শারীরিক পরিশ্রম করলে বা ব্যায়াম করলে জয়েন্টে ব্যথা হয়। দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর ওঠতে গেলে জড়তা দেখা দেয়। জয়েন্ট থেকে মড়মড় শব্দ আসে। উঁচুতে ওঠার সময় হাঁটুতে ব্যথা অনুভব হয়। চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। হাতের আঙুল ঝিমঝিম করে। এমনকি মেরুদণ্ডেও ব্যথা হয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের পাশাপাশি ৪৫ বছর বয়সী পুরুষ মহিলা এই রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
অপরদিকে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস দীর্ঘমেয়াদী। এটি অটোইমিউন এবং প্রদাহজনিত রোগ। কখনো লক্ষণ থাকে, কখনো থাকে না। এক্ষেত্রে নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছু কিছু টিস্যুর ক্ষতি করে দেয়। অস্থি সন্ধির বাইরেও দেখা দিতে পারে প্রদাহ। জয়েন্টের ব্যথা জড়তা শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। শরীরের উভয় পাশে একসাথে ব্যাথা হতে পারে। এই ধরুন, একটা হাতে ব্যাথা হলে আর একটা হাতেও ব্যাথা হবে।
বাত কাদের হয়?
বাত যে কোন বয়সে হতে পারে। পৃথিবীতে দু’রকমের রোগ মানব শরীরে বাসা বাঁধে। এক নিরাময়যোগ্য, দ্বিতীয়ত নিয়ন্ত্রণযোগ্য। বাতের ব্যথা কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। অর্থাৎ খুব কমক্ষেত্রে এই ব্যথা সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা যায়। তবে বাতকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সঠিক ওষুধ, ব্যায়াম আর খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে। বাতের ধরণ ভেদে চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা। তার জন্য একজন ভালো বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। সমীক্ষা বলছে, ওষুধ নয়, সঠিক নিয়মে খাবার খেলে ২৪ শতাংশ পর্যন্ত বাতের রোগ নিরাময় সম্ভব। চিকিৎসাকে পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রচুর পরিমাণে জল খান। পাতে রাখুন ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। এড়িয়ে চলুন ধূমপান মদ্যপান । ছোট ছোট ব্যথা ফেলে রাখবেন না। বিশেষ করে মেনোপজের পর ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার বেশি করে খান। নিয়ম মানলে, বাতের ব্যথা আপনাকে ছুঁতেও পারবে না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম