Kishore Kumar: কিশোর কুমারের জ্বালায় অতিষ্ঠ বলিউড, ঘোল খাইয়েছিলেন শচিন দেব বর্মনকেও

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

Kishore Kumar: জলে থইথই করবে সব ঘরে, আর ঘরে থাকবে একটা নৌকা। এমনই এক আশ্চর্য বাড়ি বানাতে চেয়েছিলেন কিশোর কুমার। কিশোরকুমার মানেই যেন এক আশ্চর্য ধাঁধা। তাঁর খামখেয়ালিপনায় জেরবার ছিল গোটা বলিউড। বাড়ির সামনে লিখে রাখতেন ‘কিশোর হইতে সাবধান’। কেন এমন লিখেছিলেন তারকা গায়ক? কারণটা জানলে হেসে গড়াগড়ি দেবেন। আসুন শুনে নিই, প্রবাদপ্রতিম সেই শিল্পীর অদ্ভুতুড়ে কয়েকটি গল্প।

 

জীবনের শেষ পর্যন্ত নিজের শর্তেই বেঁচেছেন তিনি। মেজাজে থাকলে একবারেই একটা গোটা গান রেকর্ড করে ফেলতেন, আর মেজাজ না থাকলে তাকে দিয়ে কুটোটিও নড়ানো সম্ভব ছিলনা। স্বপ্ন দেখতে বড্ড ভালোবাসতেন গায়ক। এমন একটা বাড়ি বানাতে চেয়েছিলেন যার প্রতিটা ঘর থইথই করবে জলে। একঘর থেকে অন্য ঘরে যাবেন নৌকায় করে। এমনকি এই বাড়ি বানানোর জন্য এক আর্কিটেক্টের খোঁজও নাকি করেছিলেন। তবে শেষমেষ সেই বাড়িটা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু জাস্ট ভাবুন তো, তাঁর স্বপ্নটা কী মায়াবী ছিল।

 

তবে কি কেবল স্বপ্ন, স্টুডিওপাড়ার লোকজনদের সাথে যা করতেন তা আর বলার নয়। এই যেমন ধরুন না, একবার শচিন দেব বর্মণের বাড়ির জানালা দিয়ে পালিয়েছিলেন। কেন? কারণ তাঁর শখ হয়েছিল শচিন দেবের নকল করে গান গাওয়ার। সে নাকি সুরে একমনে শচিন দেবের নকল করে চলেছেন। ওদিকে সামনে হা করে বসে তরুণ মজুমদার‌। শচিনবাবু কখন যে দরজায় এসে দাঁড়িয়েছেন তা কেউ খেয়ালই করেননি। নজর পড়তেই পিন ড্রপ সাইলেন্স। শচিন বাবুর মুখ তখন থমথমে। এদিকে কিশোরের ভাব এমন যেন কিছুই হয়নি। চুপচাপ এগিয়ে গেলেন জানলার দিকে। আর তারপরেই অভাবনীয় ঘটনা।

 

কাউকে কিছু না বলেই জানালা গলে কার্নিশ বেয়ে পগারপার সেকালের সুপারস্টার কিশোর কুমার। তাহলেই ভাবুন তার মাথায় কী পোকা ছিল। এই ঘটনা যখন ঘটে তখন কিন্তু তিনি অলরেডি সুপারস্টার। শচিন বাবু অবশ্য আর রাগ করে থাকতে পারেননি। উল্টে হেঁসে বলেছিলেন ‘বান্দর’। ভাবতে পারছেন। আসলে কিশোর কুমার ছিলেন এমনটাই।

 

অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি। নারী ও পুরুষ দুরকম কন্ঠেই গাইতে পারতেন কিশোর কুমার। হাফ টিকিট সিনেমার ‘সিধি লাগি দিল সে জ্যায়সি’ গানটি শুনেছেন তো? সেটি নারী ও পুরুষ উভয় কন্ঠই কিশোরের গাওয়া। দুই কন্ঠে গেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সবাইকে।

 

তাঁকে যাঁরা দেখেছেন, তাঁরাই বলেনই, বিরল প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি। তবে মনটি ছিল এক্কেবারে শিশুর মত। তবে আবার ছেলেমানুষও ঠিক বলা যায়না জানেন তো। টাকাপয়সার ব্যাপারটা কিন্তু বেশ বুঝতেন‌। শোনা যায় এক প্রযোজক নাকি তার অর্ধেক পেমেন্ট করেছিলেন। কিশোরের কানে পৌঁছে গেছে সে কথা। তখন তিনি মেকআপ রুমে। আর যায় কোথায়? অর্ধেক মুখে মেক আপ করে বেরিয়ে এলেন গায়ক। প্রযোজক তো অবাক। কারণ জিজ্ঞেস করলে তার স্পষ্ট জবাব, ‘অর্ধেক টাকা, অর্ধেক কাজ’। ভাবতে পারছেন তার মাথায় কী চলত?

 

তবে শুধু স্টুডিওপাড়াতেই যে এমন কাণ্ডকারখানা চালাতেন, তা নয় কিন্তু। নিজের ফ্ল্যাটের বাইরে তিনি নাকি লিখে রেখেছিলেন, ‘কিশোর হইতে সাবধান’। বিশেষ করে এক-একজন পরিচালক-প্রোডিউসারের সঙ্গে তিনি যেসব কাণ্ড করেছিলেন, তাতে আর কী বলি। বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি করেছিলেন এক গোপন আলমারি‌। যার পেছনে ছিল গোপন দরজা। কারও সাথে দেখা করতে ইচ্ছে না হলে সেটা দিয়ে পালিয়ে যেতেন। অদ্ভুত না?

 

একবার তো এক পরিচালকের হাত অবধি কামড়ে দিয়েছিলেন। কারণ জানতে চাইলে বলেন, বাইরে টাঙানো সাইনবোর্ড দেখে আসা উচিত ছিল। আনন্দ ছবির কথাই বলি আপনাদের। জানেন কি এই ছবির অফার সবার আগে গেছিল কিশোর কুমারের কাছে‌। তবে হৃষিকেশ বন্ধু হওয়ার কারণে সোজাসুজি মানা করতে পারছিলেন না। তো শুটিং-র কয়েক দিন আগে মাথাটাই ন্যাড়া করে ফেললেন। এবার ন্যাড়া মাথায় তো আর নায়ক হওয়া যায়না। গুলজার সাহেব তো বলেই দিয়েছিলেন, ‘এভাবেই নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করতে আমি কাউকে দেখিনি।’ হ্যাঁ, এমনই ছিলেন আমাদের কিশোর কুমার‌‌। তার এই খামখেয়ালীপনায় কেউ রেগেছেন, কেউ হেসেছেন কিন্তু উপেক্ষা তাকে কেউই করতে পারেননি। তা আপনারও আছে নাকি এমন অদ্ভুতুড়ে স্বভাব?

https://fb.watch/t0VbM4r4EO/

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version