পুতিনের লোহার জালে জড়াচ্ছে ইউক্রেন! লক্ষ লক্ষ ট্যাঙ্ক দিয়ে মেরুদণ্ডে আঘাত ? ১০০ বছরেও শেষ নেই

।। প্রথম কলকাতা ।।

পুতিন লোহার জালে বেঁধে ফেলছেন ইউক্রেনকে? রাশিয়ার বুকে লক্ষ লক্ষ ট্যাংক চক্কর কাটছে? খালি হয়ে যাচ্ছে পশ্চিমাদের অস্ত্র ভান্ডার? এবারের শীত মাটির তলায় কাটাতে হবে জেলেনেস্কিকে? আরও ১০০ বছর চলবে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ? ধক আছে মস্কোর, লাখ লাখ টাকা খরচ করে ইউক্রেনের জন্য কি বানাচ্ছে! কোন পাওয়ার বুস্টারের জোরে এতো তাকাত মস্কোর? হামাস ইসরায়েল যুদ্ধের থেকেও সাঙ্ঘাতিক? রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এতোগুলো বছর ধরে চলবে?ইউক্রেন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে তো? পুতিন কিন্তু স্ট্রেট কিয়েভের মেরুদন্ডে আঘাত করছেন পুরো প্ল্যান ছকে ফেলেছেন।রাশিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মস্কো তাদের সাঁজোয়া যান উৎপাদন ৭ গুণ বাড়িয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে ২১০০ টির মতো ট্যাংক সরবরাহ করা হবে, এর মধ্যে অলরেডি ১৯০০ টি ট্যাংক হস্তান্তর করা হয়ে গেছে। তাহলে কি ইউক্রেনের বুকে বড় কোন অপারেশনের প্ল্যান রয়েছে পুতিনের?

এর মধ্যেই টেনশন এর খবরটা সামনে এসে গেছে। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ইকোনমিস্ট এর রিপোর্টে আশঙ্কা করা হচ্ছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ চলবে আরও আরো পাঁচ বছর ধরে।
যা গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের উৎকণ্ঠার। আর এবারের শীত ইউক্রেনের জন্য আরো বেশি ভয়ংকর হতে যাচ্ছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। নাহলে কি এমনি এমনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি রোস্টেক বলছে যে ট্যাংক উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে রাশিয়ায়। টি ৫৪, টি ৫৫ এবং টি ৬২ সিরিজের ট্যাংক অলরেডি রুশ সেনাদের হাতে চলে এসেছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির টি ৯০ এম প্রোরিভ দেওয়া হয়েছে রুশ সেনাবাহিনীকে। প্রতি বছর সশস্ত্র বাহিনীকে ২০০ টি করে ৯০ এম প্রোরিভ সরবরাহ করবে রোস্টেক। এছাড়া রাশিয়ার অস্ত্র ভান্ডারে যুক্ত হয়েছে টি ১৪ আর্মাটা ট্যাঙ্ক।
যে সাঁজোয়া যান তৈরিতে ১১ বছর সময় লেগে গেছে রাশিয়ার। মসৃণ জায়গায় এই ট্যাংকের সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার। স্বাভাবিকভাবেই যুদ্ধের এবরো খেবরো ময়দানে এর গতির হেরফের হয়। এই ট্যাঙ্ক চালানোর জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে সমন্বয় সাধনে ইউক্রেনের মাটিতে রুশ সেনাদের ট্রেনিং করানো হয়েছে। টি ১৪ আর্মাটা ট্যাঙ্কের ভেতরে বসেই এটি চালানো যায়। সেইজন্য সাঁজোয়া যানের উপরে রিস্ক নিয়ে কোনো সেনার দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ শত্রুপক্ষের উপর আঘাত হানতে এই ট্যাংক এর চালনাকারী এর ভেতরে একটা সশস্ত্র ক্যাপসুলে বসে থাকে সেখান থেকেই ট্যাঙ্কটিকে নিয়ন্ত্রণ করে চালক। এই ট্যাঙ্ক তৈরি করেছে রোস্টেক।

২০১৫ সালে এক একটা টি ১৪ আর্মাটা ট্যাংকের জন্য খরচ হয়েছিল ৩৭ লাখ থেকে ৪৬ লক্ষ ডলার। ২০২২ সালে সেই খরচ বেড়ে ৫০ থেকে ৭১ লক্ষ ডলার হয়। এত এত টাকা ট্যাংকের পেছনে ঢালছে শুধুমাত্র রাশিয়া।
আন্দাজ করতে পারছেন ইউক্রেনের জন্য কোন পরিণতি অপেক্ষা করছে? ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে প্রচুর পরিমাণ ট্যাংক হারিয়েছে দেশটা। আর ঠিক সেই কারণেই নতুন ট্যাংক নামাচ্ছে মস্কো। তাছাড়া, দেশটির কাছে হাজার হাজার পুরনো ট্যাংক রয়েছে। সেগুলোর সংস্কার কাজেও গতি এনেছে রাশিয়া। শীতের আগে থেকেই রাশিয়া তার অস্ত্র ভান্ডার ঢেলে সাজাতে শুরু করে দিয়েছিল। মিসাইল থেকে শুরু করে জলের তলার সাবমেরিন সব ক্ষেত্রেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কামাল পুতিনের। গতবছরের শীতে ইউক্রেনের কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হয়েছিল সেটা ভোলেনি জেলেনেস্কির দেশ। গত বছরের শীতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডের উপরে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ফলে প্রবল শীতে বিদ্যুৎ ও হিটিং ব্যবস্থা ছাড়াই থাকতে হয়েছিল কয়েক হাজার ইউক্রেনবাসীকে। এই শীতেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সরকারের। তাই, তারাও রাশিয়ার তেল ও গ্যাস পরিকাঠামোর উপরে পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউক্রেন।

শোনা যাচ্ছে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রের মজুদ খালি হয়ে গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের। মনে করিয়ে দিই রাশিয়া ইউক্রেন ২১ মাস ধরে কনস্ট্যান্ট যুদ্ধ চালাচ্ছে। মস্কোর বিশাল সেনা বহর ও উন্নত অস্ত্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে টিএফ কে হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। ৩ লক্ষ সেল সরবরাহ করা হয়ে গেছে, এখন কিয়েভকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সেল মজুদ নেই ইইউর কাছে। যদিও ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে ইউক্রেনকে প্রতিশ্রুত ছেলের মাত্র ৩০% সরবরাহ করেছে ইইউ। এদিকে দ্যা ইকোনোমিস্ট এর রিপোর্ট অনুযায়ী, যথেষ্ট পরিমাণ ১৫৫ মিলিমিটার আর্টিলারি শেল তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় লাগলেও এক বছর আগেই সমপরিমাণ শেল উৎপাদন করার ক্ষমতা রাখে রাশিয়া। তাই রাশিয়াকে পাল্টা দিতে জমজমাট প্ল্যান করলেও জেলেনেস্কির সামনের দিনগুলো যে চাপ বাড়াবে সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version