।। প্রথম কলকাতা ।।
মধ্যপ্রাচ্যে গুপ্তধনের হদিস? চোখ আটকে পুতিনের। হামাস ইসরাইল যুদ্ধের রিমোট ধরলো মস্কো? সৌদি আমিরাতের মাটিতে হয়ে গেল কোন ডিল? গোটা পৃথিবী থাকলো কি অন্ধকারে? পুতিনের কোন অস্ত্রের মুখে বসে পশ্চিমা বিশ্ব? তেলেই ঝটকা, হামাস ঢেউয়ে তোলপাড় হবে গোটা বিশ্ব? অ্যালার্মিং সিচুয়েশন। পুতিনের এই সফর অথর্ব করে দেবে গোটা পৃথিবীকে? চেইন ব্রেক করলেই বিপদ। চীন ইরানের বাইরে পুতিনের সৌদি-আমিরাত সফর গোটা বিশ্বের সামনে তৈরি করলো গোলকধাঁধা।হামাস ইসরায়েল যুদ্ধ শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, এর বাইরেও ছড়াচ্ছে? পুতিনের একটা সংকেত গোটা পৃথিবীকে কিন্তু টেনশনে ফেলে দিল। কিছু শক্তি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে আরও বাড়াতে চাইছে।
পশ্চিমা বিশ্বকে টার্গেট করে মধ্যপ্রাচ্যের ঝড় কে আরো বেশি উস্কে দিলেন। একই সঙ্গে খেললেন ডবল গেম। হাতালেন দামী সার্টিফিকেট! সৌদি আমিরাতে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত, সহিংসতা, নির্যাতন, হামলা বন্ধের পক্ষে সওয়াল করে মোহাম্মদ বিন সালমানের থেকে কুড়োলেন প্রশংসা। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় গোটা বিশ্বকে নিয়ে নতুন ছক সৌদি রাশিয়ার। বৈঠকে রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যেকার যৌথ সম্পর্কের প্রশংসা করেন মহম্মদ বিন সালমান। বলেন, রাশিয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। দুই দেশের স্বার্থের অনেক মিল রয়েছে, দুই দেশের সুবিধায় এক হয়ে কাজ করতে হবে তাদের। এতে মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বই লাভবান হবে। আর ক্রেমলিন জানিয়েছে, গাজার বর্বরতা, ইউক্রেন যুদ্ধ, সামরিক সহযোগিতা গভীর করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইউক্রেনে হামলার পর থেকে দেশের বাইরে খুব কম যান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই ট্রেন্ড ভেঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর তারপর সৌদি আরবে পা রাখলেন পুতিন। আর এই সফর করলেন এমন একটা সময় যখন মধ্যপ্রাচ্য জ্বলছে। যে সফরকে “মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট” হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। এই সফর পুতিনকে ঢেলে দিয়েছে।আরব আমিরাত থেকে “প্রিয় বন্ধু”র তকমা পেয়েছেন।পুতিন ও জোর গলায় বলেছেন, আরব বিশ্বে আরব আমিরাত রাশিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। আবুধাবির পর রিয়াদেও সাকসেসফুল পুতিন। সৌদি আমিরাত রাশিয়া, ৩ দেশই মনে করে তাঁদের এই বৈঠক সময়োপযোগী। কিন্তু পুতিনের এই বিরল সফর, এই সুসম্পর্ক সত্যিই কি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা দূর করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে?
মনে করিয়ে দিই, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর পুতিনের এটাই প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফর। এর আগে, ২০১৯ সালে এই দুই দেশে সফর করেছিলেন তিনি। সে ক্ষেত্রে ২০২৩ এর শেষে পুতিনির এই সফর আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ঠেকছে। গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো নেতানিয়াহু সরকারকে একতরফাভাবে অন্ধ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। আর সেই সুযোগে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করছে মস্কো। বিশেষ করে, দীর্ঘদিনের শত্রুতা ভুলে সৌদি আরব ও ইরানের সম্পর্ক জোরদারের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে সুদৃঢ় হচ্ছে রাশিয়ার অবস্থান। চীন যা সহজেই করতে পারেনি পুতিন তা করে দেখাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার বাস্তব প্রতিফলনও দেখা গেছে। ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দেয়নি আরব দেশগুলো।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম রাখতে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানালেও কেউই রেসপন্স করেনি। উল্টে রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তেলের উৎপাদন কমিয়েছে আরব দেশগুলো। আর এতেই মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার জায়গাটা কোথায়? সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। হামাস ইসরাইল যুদ্ধের মাঝে নিজের জায়গা পোক্ত করতে, সম্পর্কের সেই সমীকরণেই অক্সিজেন যোগালেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম