Bangladesh Japan: এবার ২২ কোটি ডলার, জাপান কেন বাংলাদেশের জন্য এতো ইনভেস্ট করছে? একটা মানুষের জন্যই এতো ঘনিষ্ঠতা

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangladesh Japan: বাংলাদেশে ‘সুদিন’ আনছে বিশ্বস্ত বন্ধু জাপান। হাসিনার দেশকে ফের কোটি কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপানের জাইকা। নতুন করে চুক্তিবদ্ধ দুই দেশ। এই ঋণ বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ? অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কী ভূমিকা পালন করবে? কোন শর্তে ঋণ দিচ্ছে জাপান? সেই শর্ত পূরণ করতে পারবে কি বাংলাদেশ সরকার? বরাবরই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে জাপান। কিন্তু কিভাবে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে এতো গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠলো? বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের ভূমিকা সম্পর্কে কতটুকু জানেন?

জাপান থেকে বিরাট অঙ্কের ঋণ পাচ্ছে শেখ হাসিনার দেশ। বাংলাদেশকে সাড়ে ২২ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে জাপান। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ১০৮ টাকা প্রতি ডলারের দাম ধরে এর পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে এই টাকা খরচ করা হবে। অলরেডি, ঋণচুক্তিতে সই হয়ে গেছে। নমনীয় শর্তে জাপানের থেকে এই ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। এই ঋণে সুদের হার ১.৬ শতাংশ। ঋণটা ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড সহ মোট ৩০ বছরে পরিশোধ করা যাবে। যা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ নয়। তবে এই প্রথম না, বারেবারেই জাপান, বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ, জল সরবরাহ, স্যানিটেশন, পল্লি উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতের প্রকল্পে ঋণ সহ বিভিন্ন রকম অনুদান দিয়ে চলেছে জাপান সরকার।

এর আগেও ২০২০ ও ২০২১ সালে জাপান সরকার বাংলাদেশকে মোট সাড়ে ৬৮ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তার ঋণ দিয়েছিল। আর, স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার সহায়তা করেছে। হ্যাঁ, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আজকের নয়, এই সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, বলতে গেলে প্রায় ৪০০ বছরের। এমনকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেও জাপান উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ সবার আগে যেসব দেশের স্বীকৃতি পায়, জাপান সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি সুদৃঢ় করে। ১৯৭২ থেকে ২০২২, ৫০ বছর। ২০২২ এর ফেব্রুয়ারি তে দুই দেশ এর মৈত্রীর সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হয়েছে।

১৯৭১-৭২ থেকে ২০০৮-০৯ পর্যন্ত সময়ে জাপান বাংলাদেশকে মোটা সাহায্য দিয়েছে, যার ৪৭ শতাংশের কিছু বেশি ছিল অনুদান। অবশিষ্টাংশ সহজ শর্তে ঋণ। মোট সাহায্যের ৪২ শতাংশই ছিল প্রকল্প সাহায্য। সেই সময় জাপানই ছিল বাংলাদেশের জন্য এককভাবে বৃহত্তম দাতা দেশ। ২০১০ সালের পর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশকে দেওয়া জাপানের সাহায্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ১ ও ৬, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে যমুনা রেল সেতু, দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প, স্বাস্থ্য খাত উন্নয়নে নীতি সহায়তা ঋণ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প সব ক্ষেত্রেই জাপানের অবদান রয়েছে। তাই, তো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। জাপান বাংলাদেশের ‘দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু’। জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। এমনকি, স্বাধীনতা পাওয়ার দুমাসের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ায়, জাপান শেখ হাসিনার কাছে ‘হৃদয়ের খুব কাছের’। এখনও বাংলাদেশ ও জাপান, দুটো দেশই কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version