Israel-Hamas War: গাজায় ফিরছে ভয়ঙ্কর নাকবা ? কোন ভাইরাসে মাটি হবে মধ্যপ্রাচ্য, ইহুদী ভূমির ভয়ানক জাল

।। প্রথম কলকাতা ।।

মাটি ফুঁড়ে পৃথিবীর বুকে জেগে উঠছে নরক! হামাস যুদ্ধ বাতাসে কি মিশিয়ে দিচ্ছে? নাকবা কতটা ভয়ঙ্কর? ইসরাইলের ছক মাটি করে দেবে গাজাকে? রাতারাতি বিশ্ব থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য? হামাস যুদ্ধের ভাইরাসই কি চেনা বিশ্বকে বদলে দেবে? তলে তলে মানুষের মতো এগুলো কি গিজগিজ করবে? আদম ইভের যুগ ফিরবে? ‘হ’ এর ভয়ানক জালে জড়িয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য! এ কোন বিপদ ডেকে আনলো ইহুদী ভূমি?গাজার নিচে বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেললেই বিপদ। থরথরিয়ে কাঁপছে গোটা পৃথিবী। ফিরে আসছে নাকবা? সিরিয়া যুদ্ধের স্মৃতি তাজা হচ্ছে। সত্যিই কি এই যুদ্ধে ছারখার হয়ে যাবে মধ্যপ্রাচরের গোটা প্রাণীকূল? গাজা যুদ্ধ শেষে মধ্যপ্রাচ্য দেখতে কেমন হবে? ‘নাকবা’ ফিরলে সব তলিয়ে যাবে! ‘নাকবা’ মানে ‘মহাদুর্যোগ’! ১৯৪৮ সালে ৭ লক্ষের বেশি প্যালেস্টাইনি ঘরছাড়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় বাস্তুচ্যুতদের উত্তরসূরিরা এখনো গাজার শরণার্থীশিবিরগুলোতে বাস করে। আর এবার?

এখন আবার আরেকটি গণবাস্তুচ্যুতির মুখোমুখি। ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’ গড়তে গিয়ে ইসরায়েল কী প্ল্যানিং করেছে? গাজা থেকে ২৩ লক্ষ মানুষকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করাই কি নেতানিয়াহুর টার্গেট? কতটা এগোলো আইডিএফ? গাজার বাড়িঘর ও অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় ১৮ লক্ষ মানুষ এখন ঘরছাড়া। তাহলে কি মধ্যপ্রাচ্যে বইবে বিপুলসংখ্যক উদ্বাস্তু আর শরণার্থী স্রোত? মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এখন বাস্তুচ্যুত মানুষের নতুন প্রজন্মের জন্ম হচ্ছে।বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে প্রতিকূল পরিবেশ আর চরম দারিদ্র্যতার মধ্যে বাস করতে হচ্ছে। হামাস ইসরায়েল যুদ্ধ শেষে এই পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি-বসতি থেকে উচ্ছেদের এই কঠিন বাস্তবতা; চরমপন্থা, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, রাগের জন্ম দেবে। এই বাস্তবতা অসন্তুষ্ট তরুণদের ইসলামিক স্টেটের মতো চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোতে জয়েন করার প্ররোচনা জোগাবে গাজা যুদ্ধ শেষে যে নতুন মধ্যপ্রাচ্য জন্ম নেবে সেখানে হামাসের মতো জঙ্গি সংগঠনের প্রাসঙ্গিকতা বাড়বে। লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতিদের ভূমিকা আরও বাড়বে।

গাজা যুদ্ধ আরও যেসব গোষ্ঠীর জন্য সুযোগ তৈরি করে দেবে, তার মধ্যে সিরিয়ার হায়াত তাহিরির আল-শাম ইন ইদলিব, কুর্দিনিয়ন্ত্রিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের মতো সংগঠন রয়েছে। আরো খারাপ কিছু ঘটবে মধ্যপ্রাচ্যে। এই ধরনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থানের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর শক্তি ক্ষয় হতে দেখা যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। মধ্যপ্রাচ্যের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর বিভাজন ও ভাঙন দেখতে হবে বসে বসে। আন্তঃসীমান্ত সম্পর্কে পরিবর্তন আসবে, ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব বাড়বে। আঞ্চলিক যুদ্ধের ধরনও পরিবর্তন হতে দেখা যাবে। শহর অঞ্চলে যুদ্ধ বাড়বে। এ ছাড়া প্রক্সি যুদ্ধ, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ আরো ছড়াবে একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণে মধ্যপ্রাচ্যের কৌশল–নীতিগত গুরুত্বের বিষয়টা নতুন করে আলোচনায় নিয়ে আসবে।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে চীন ও রাশিয়া তাদের প্রভাব তৈরি করছিল, যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছিল।গাজা যুদ্ধ সেই নীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনতে পারে।

তাহলে কি, গাজার বুক থেকে মহাবিপর্যয়ের রেশ কাটবে না কোনোদিন? প্যালেস্টাইন তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
হামাস ইসরাইল যুদ্ধে গাজার বুক থেকে মুছে যাচ্ছে নিরীহ নারী শিশু। ১৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, গাজার বাড়িঘর ও অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় ১৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত এইভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু এতে নেতানিয়াহুর ইরাদা কতটা সফল হবে? মনে আছে? ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর দেশবাসীকে ঠিক কোন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন? সেটা বিশ্ব ভুলে যাচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল যে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা ‘মধ্যপ্রাচ্যকেই বদলে দেবে’ তাহলে কি ইসরাইলের অভিশাপে এভাবেই বদলে যাবে মধ্যপ্রাচ্য?নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে তাঁরা শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, তার স্মৃতি তাদের আগামী বহু প্রজন্মকে তাড়া করে ফিরবে।’ এই কথা দিয়ে নেতানিয়াহু আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন? বলবে যুদ্ধ শেষের নতুন মধ্যপ্রাচ্য।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version