ভারতকে ভিলেন বানাল তালিবান! আফগান দূতাবাস বন্ধে দো’ষের ভাগীদার দিল্লি, সত্য়িটা কি ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

আফগানিস্তান ভারতের ওপর চড়াও হচ্ছে। দিল্লি কাঁধে সব দোষ চীনের কথাতেই কি দিল্লির বিরুদ্ধে চরম স্টেপ নিল আফগানিস্তান? ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হল আফগান দূতাবাস কিন্তু কেন? দিল্লিকে শুধু দায়ী করলে হবে না আসল সত্যিটা জানা দরকার। আফগানিস্তানের চরম সিদ্ধান্ত ভারতের মাটিতে। কাবুলকে প্রশ্ন করলেই দিল্লির দিকে আঙুল তুলবে তালিবান সরকার। ভারতই কি আফগানিস্তানকে বাধ্য করেছিল দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার জন্য? তাহলে এতবড় সিদ্ধান্ত হঠাৎ কেন নিল তালিবান সরকার? কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোনও দেশে থাকা অন্য দেশের দূতাবাসই ইঙ্গিত দেয় দুদেশের মধ্যে আসলে সম্পর্ক কেমন চলছে। যেমন কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়তেই কানাডা ভারতের কিছু কূটনীতিককে বরখাস্তা করে ভারতও পাল্টা কানাডার কূটনীতিকদের দেশ ছাড়তে বলে কিন্তু আফগানিস্তানের সঙ্গে হঠাত করে ভারতের হলটা কী?

আফগান দূতাবাস কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে ভারত সরকারের ধারাবাহিক অসহযোগিতার কারণে ২৩ নভেম্বর থেকে দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দূতাবাসের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ করার পরে এ বার এই পদক্ষেপ করা হল। আশা করছি, এর ফলে দূতাবাসকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত সরকারের অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে ভারত কেন অসহযোগীতা করতে যাবে আফগানিস্তানকে? এক্ষেত্রেই দিল্লির অবস্থান জানা প্রয়োজন। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে নিয়ে। আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সেনা সরাতেই আফগানিস্তানের ওপর কার্যত কবজা করে তালিবান। এরপর কাবুলে তালিবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই তালিবান সরকারকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। শুধু ভারতই নয় বহু পশ্চিমী দেশ এখনও তালিবানকে শাসক বলে মনে করে না। দিল্লির তরফ থেকে কিন্তু বলেই দিয়েছিল এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জ যে ধরণের সিদ্ধান্ত নেবে ভারত সেটাই মানবে। তা সত্ত্বেও আফগানিস্তানে মানবিক, বাণিজ্যিক ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য চালু রাখার জন্য কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করেনি দিল্লি।

এবার দেখুন আফগানিস্তানের এই দূতাবাসে সমস্ত কূটনৈতিকরাই ছিলেন। আফগানিস্তানের পূর্ব প্রশাসক আশরফ ঘানি সরকারের নিযুক্ত। এখন সমস্যা এটাই আফগানিস্তানের বর্তমান তালিবান সরকার এই কূটনৈতিকদের ওপর থেকে হাত তুলে নিয়েছে। বরং তারা প্রত্যেক দেশে তালিবানের নিজস্ব কূটনীতিক পাঠাচ্ছে। যারা দূতাবাসের আন্ডারে আধিকারিক পদে কাজ করেও না। এক্ষেত্রে ভারতে থাকা আশরফ ঘানি সরকারের দূতাবাসের আধিকারিকদের মনে হয় তারা এখানে থেকে কাজ করবে তো করবে কীভাবে তাদের দেশের সরকারের সমর্থনই তো নেই। তাহলে এক্ষেত্রে কি ভারতের এক্ষেত্রে কোনও দোষ নেই? বিশেষজ্ঞরা বলছেন একে ঠিক দোষ বলা যায় না কারণ আফগানিস্তানের এমন পরিস্থিতিতে ভারতের বিশেষ আগ্রহ নেই তাদের দূতাবাস নিয়ে। একাংশের মত আফগান কূটনীতিকদের ভিসা পুনর্নবীকরণ-সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফ থেকে প্রত্যাশিত সাহায্য না মেলার কারণেই এই পদক্ষেপ।

বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একেবারেই এই অসহযোগিতার অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। বরং আফগান দূতাবাসের কর্তারাই একে একে ভারত ছেড়ে অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন। পাশাপাশি গত দু’বছরে একাধিক বার দূতাবাসের অন্দরে তালিবান সমর্থক এবং বিরোধী কর্মীদের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি ঘটেছে বলেও তাঁর দাবি। এর মানে তালিবানের নিজের অবস্থারই ঠিক নেই তারওপর তারা ভারতের কাঁধে সমস্ত দোষ চাপাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে দিল্লির দূতাবাস বন্ধ হলেও মুম্বই এবং হায়দরাবাদের আফগান কনস্যুলেটের কী পরিণতি হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version