।। প্রথম কলকাতা ।।
সাব্বাস! বাংলাদেশকে আর ঠেকায় কে? থাকবে না ব্রাঞ্চ, এটিএম, চেকবই, ডিজিটাল ব্যাংক চালু হবে বাংলাদেশে। প্রযুক্তি বিশ্বে চমৎকার উদ্যোগ হাসিনা সরকারের। কিন্তু প্রশ্ন হলো লেনদেন হবে কিভাবে?
প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সাথে তফাৎ কোথায়? গ্রাহকদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা? ডিজিটাল ব্যাংকের ওপর কতটা আস্থা রাখতে পারবে গ্রাহকরা? এই ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বাংলাদেশ কে কোন কোন ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারে? না, আর সশরীরে লেনদেনের ঝক্কি পোহাতে হবে না। চিন্তা নেই, দিন রাত ২৪ টি ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যাংকের সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
নতুন যে ব্যাংক চালুর কথা বলা হচ্ছে, সেখানে সমস্ত কাজ হবে প্রযুক্তি নির্ভর। পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ব্যাংকের শাখা, উপশাখা, এটিএম বুথ বা সশরীরে লেনদেনের কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। কিন্তু আমানত গ্রহণ, ঋণ দেওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য সব কাজই করবে এই ডিজিটাল ব্যাঙ্ক। আগেই বলেছি, সশরীরে ব্যাঙ্কের কোনো শাখায় যেতে হবে না। তাই মোবাইল বা অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহকরা এই ব্যাংকে লেনদেন করতে পারবেন। থাকবে ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড বা অন্য প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা। সব ধরনের পরিষেবাই পাওয়া যাবে, কিন্তু লেনদেনের সমস্ত বিষয় হবে ভার্চুয়ালি। এটাই প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সাথে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং এর পার্থক্য। কিন্তু, কিভাবে খোলা যাবে অ্যাকাউন্ট?
জাতীয় পরিচয় পত্র সহ প্রয়োজনীয় নিজস্ব তথ্য আপলোড করে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। একইভাবে ঋণ নেওয়ার জন্যও প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করে ঋণের আবেদন করতে পারবেন। সব কিছুরই একটা ভালো দিক আরেকটা খারাপ দিক থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও তেমনই। এতে মানুষ এর যেমন সুবিধা হবে তেমন কিছু অসুবিধাও হবে। যেমন
- ব্যাংকে যেতে না হওয়ায় গ্রাহকদের সময় বাঁচবে।
- ব্যাংকের শাখা খুলতে না হওয়ায় সেখানে ভাড়া-কর্মীদের পেছনে খরচ অনেক কমে যাবে।
- বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে গ্রাহকরা অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং ব্যাংকিং পরিষেবা নিতে পারবেন।
- ২৪ ঘণ্টার যেকোনো সময় এই ব্যাংক থেকে মিলবে পরিষেবা।
আর অসুবিধা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেকের দক্ষতার অভাব এবং প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক মোবাইল ফোন না থাকায় তাঁদেরকে এই ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষ, নগর জীবনের বাইরের মানুষকে এই সেবার আওতায় আনা যাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে আরেকাংশের অনেকে বলছেন, বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সাথে যেভাবে মানুষজন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, তাতে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার সাথেও কয়েক বছরের মধ্যেই মানুষ খাপ খাইয়ে নেবে।
প্রশ্ন হলো এই ডিজিটাল ব্যাংকের ওপর গ্রাহকরা কতটা আস্থা রাখতে পারবে?
শক্তভাবে নজরদারি আর নিয়ন্ত্রণ করলে গ্রাহকদের আস্থা নিশ্চয়ই বাড়বে মত বিশেষজ্ঞদের। আসলে, শাখা না থাকলেও এসব ব্যাংকের একটি প্রধান কার্যালয় থাকবে। গ্রাহকের অভিযোগ বা অসন্তুষ্টির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। আর, গ্রাহকরা চাইলে ওই প্রধান কার্যালয় বা বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
কতদূর পর্যন্ত এগিয়েছে বিষয়টা?
অলরেডি, এই সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেক্ষেত্রে ব্যাংক গঠনে আগ্রহীরা প্রস্তাব জমা দিতে পারবেন। জানিয়ে রাখি, সিঙ্গাপুর, ফিলিপিনের মতো দেশেও দেখা গেছে, প্রচলিত ব্যাংকের তুলনায় ডিজিটাল ব্যাংক মানুষ বেশি পছন্দ করছে। আশা করা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও নতুন প্রজন্ম প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের তুলনায় এ ধরনের ব্যাংকিং-এ বেশি আগ্রহ দেখাবে। কারণ, বাংলাদেশে আস্তে আস্তে অনেক কিছুই ক্যাশলেস হয়ে যাচ্ছে। অনেক কেনাকাটায় নগদ টাকার পরিবর্তে মোবাইল ফিন্যান্সিং সার্ভিস ব্যবহার করা হচ্ছে, মোবাইল ফোনের কিউআর কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট করা হচ্ছে। আর এবার নেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং এর উদ্যোগে। বলতেই হচ্ছে, স্মার্ট হওয়ার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম