Bangla Pakkha: ‘সবচেয়ে কম লাভের ধাপটা বাঙালির হাতে’, সালারের মঞ্চে দাবি গর্গ চ্যাটার্জির

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bangla Pakkha: বাঙালি জাতি এবং বাংলা ভাষাকে মান্যতা দেওয়ার লড়াইয়ে বরাবর প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে বাংলা পক্ষ (Bangla Pakkha)। বাংলায় যেন ধীরে ধীরে বাঙালির গুরুত্বই যেন কমে আসছে। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা এবং বাঙালিদের ক্ষমতা ও অধিকার পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে সব সময় প্রথম সারিতে বাংলা পক্ষের সহযোদ্ধারা। রবিবার ১৮ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের (Mushidabad) সালারে বাংলা পক্ষের ডাকে একটি মিছিল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশ এবং মিছিলের মূল উদ্দেশ্য হল ভূমিপুত্র সংরক্ষণের দাবি এবং বাংলা ভাগের চক্রান্তের বিরোধিতা করা।

মুর্শিদাবাদের এই সমাবেশে মূল বক্তা ছিলেন বাংলা পক্ষে সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়। এদিন এই সমাবেশে অন্যান্য বহু জেলা থেকে বাংলা পক্ষের সমর্থক এবং সহযোদ্ধারা এসে উপস্থিত হন। এদিন তিনি চামড়ার ব্যবসা এবং ধান চাষের সঙ্গে জড়িত দুই যুবককে মঞ্চে ডাকেন। তারপর তাদের কাছ থেকেই জেনে নিতে চান তাদের কাজ সম্পর্কে। প্রশ্নের উত্তরে ওই দুই যুবক জানান, একজন চামড়া ছাড়ানোর কাজ করেন এবং অপরজন চাষ করা ধান পাঠিয়ে দেয় মিলে। গর্গ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখিয়ে এবং ধান সব থেকে বেশি শ্রম দিয়ে চাষ করা প্রাথমিক ধাপ। এই দুটোই হচ্ছে এর পরে কী হবে তার সবচেয়ে কম লাভের ধাপটা। আর এই সবচেয়ে কম লাভের ধাপটা বাঙালির হাতে’। একই সঙ্গে দিন তিনি বানতলা লেদার কমপ্লেক্সের নাম উল্লেখ করেন।

তাঁর কথায়, ‘বাঙালির শ্রমিকদের কাছ থেকে কাঁচামাল নিয়ে যায় মহাজনরা। আর তারপর সেটা নানা দেশে যায়। এই চেইনটা আচড়ে আচড়ে উঠতে হবে। ওই মহাজনটা বাঙালি হতে হবে। ম্যানুফ্যাকচারার হতে হবে’। ‘ভারতে এটা সম্ভব তামিলরা করে দেখিয়েছে। তাদের আভ্যন্তরীণ বাজার তাঁরা কন্ট্রোল করে। সেই কারণে আজ সালারেও তামিলরা পয়সা করছে’। মঞ্চের পাশে থাকা একটি ওষুধের দোকানকে উল্লেখ করে এই কথা বলেন গর্গ চট্টোপাধ্যায় ।

একই সঙ্গে তিনি বলেন, অন্য কোম্পানি থেকে যে জিনিস কেনা হচ্ছে সেটাই বাঙালি মালিকাধীনে থাকা ব্র্যান্ড বা কোম্পানি থেকে কেনা হচ্ছে না। গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ অনেকটা পুঁজি বেরিয়ে গিয়েছে। আর পুঁজি বেরতে দেওয়া চলবে না। নিজের মাল নিজেদের কাছ থেকে কিনতে হবে যতটা সম্ভব’।

একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমূলের দুধ কেনা হবে না। রেড কাউ বাঙালি কোম্পানি থেকে কিনুন। মুর্শিদাবাদের কোম্পানি ভাগীরথী, তার দুধ কিনুন। জানবো কী করে ? তুমি যে জানো না এটারই তো অ্যাডভান্টেজ এতদিন নিয়েছে। জানা তোমার দায়িত্ব। বাংলা পক্ষ প্রথম প্রথম চামচে করে একটু গুলে খাইয়ে দেবে । তারপরে কিন্তু চামচ ধরতে শিখতে হবে। বাংলা পক্ষ সব কিছু করে দিতে পারবে না । তোমাদেরও দায়িত্ব আছে। বাঙালি জাতির দায়িত্ব রয়েছে’ ।

এদিনের সভামঞ্চ থেকে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের কত রাইস মিল বর্তমানে বহিরাগতদের হাতে চলে গিয়েছে। সরষের তেলের ব্র্যান্ড অন্য রাজ্যের। কিন্তু সরষে উৎপাদন করা হচ্ছে এই বাংলায়। এখান থেকেই তাঁরা কাঁচামাল নিয়ে যাচ্ছে। অথচ সেই পণ্য কিনে বাঙালি তাদের লাভ বাড়াচ্ছে। অন্যান্য রাজ্য যেমন তাদের ছোটখাটো বিভিন্ন জিনিস তৈরি করার দায়িত্ব নিজেদের হাতেই রেখেছে, তেমন বাংলাকেও করতে হবে । নিজেদের প্রয়োজনের জিনিস নিজেদের মালিকাধীনে রেখে তৈরি করতে হবে। যদিও সব কিছু বাংলায় তৈরি হওয়া সম্ভব নয় এ কথা তিনি স্বীকার করেন । কিন্তু যতটুকু বাংলায় তৈরি হচ্ছে ততটুকু বাংলা থেকেই নিতে হবে।

তিনি এদিন সালারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘ ভারতে বাঙালি পার্সেন্টেজে কমছে। পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি জনপ্রতিনিধির সংখ্যা কমছে । তার মানে সালার কিন্তু কলকাতা থেকে দূরে নেই । কলকাতা ক্রমশ এগিয়ে আসছে সালারের দিকে । বাংলা পক্ষ সালারকে কলকাতায় নিয়ে যেতে চায় কিন্তু কলকাতাকে সালারে নিয়ে আসতে চায় না’।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version