।। প্রথম কলকাতা ।।
Turkey: ইস্তানবুলের আকাশে বারুদের গন্ধ। মধ্যপ্রাচ্যে মাথাচা়ড়া দিচ্ছে কুর্দিস্তান আন্দোলন। কুর্দিদের কীভাবে দিনের পর দিন নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে আমেরিকা? উত্তর সিরিয়া ও ইরাকে লাগাতার হামলা। এবার কি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মুখে পড়তে চলেছে তুরস্ক?
উত্তর ইরাক, সিরিয়াতেও কুর্দি বিদ্রোহীদের মুখ বন্ধ করতে চায় ইস্তানবুল। কুর্দি ঘাঁটিগুলিতে একের পর এক হামলা। স্বাধীন কুর্দিস্তানের দাবিতে বিক্ষোভেোর আগুন জ্বলছে। এই সংঘাতের শুরুটা কোথায়? এই কুর্দিরা আসলে কারা? দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক, উত্তর-পূর্ব সিরিয়া, উত্তর ইরাক অঞ্চলে কুর্দিরা ছড়িয়ে রয়েছে ।কুর্দিদের বলা হয় পাহাড়ি তুর্কি।মধ্যপ্রাচ্যের বড় জনগোষ্ঠীটি নিজেদের রাষ্ট্র গঠন করতে চায়।সিরিয়ার কোবান এবং অ্যালেপ্পো অঞ্চলে শাসন ক্ষমতা দখল করেছে কুর্দিরা ।এই বাহিনীর নাম সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স কিন্তু তুরস্ক এই সরকারকে মানে না।
ইরাক ও সিরিয়ার রাজনৈতিক টালমাটালালে কুর্দি জাতি কোনোদিনও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে লাগাতার নিজেদের রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছে তারা। কিন্তু তাদের আন্দোলনকে কোন আশঙ্কা থেকে প্রথম থেকেই দমিয়ে রেখেছে তুরস্ক? তুরস্কের মোট জনসংখ্যার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কুর্দি। তুরস্কে এই জাতি যাতে কোনওদিন ও নিজেদের হয়ে আওয়াজ তুলতে না পারে, যাতে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি না তৈরি হয়তাই একসময় কুর্দি ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এমনকি কুর্দিদের যে একটি আলাদা জাতিগত পরিচয় আছে সেটিও অস্বীকার করা হয়। নিজেদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে তুরস্কে প্রায় ৪০ হাজার কুর্দি প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু লড়াই থামেনি।
বিশেষ করে ইরাকে সুন্নি সাদ্দাম হোসেনের শাসনকালে কুর্দিদের ওপর লাগাতার অত্যাচার বাড়তে থাকে । তবু অদম্য সাহস, লড়াকু মানসিকতা নিয়ে কুর্দিরা তাদের কুর্দিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি থেকে সরে আসেনি। ১৯৪৬ সালে ইরাকে মুস্তাফা বাজরানি কুর্দিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি গঠন করেন।তবে তারা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে ১৯৬১ সাল থেকে। ১৯৮৮ সালে কুর্দিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন সাদ্দাম হুসেইন। এমনকী কুর্দিদের বিরুদ্ধে হালাবজা অঞ্চলে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করা হয়।
কুর্দিদের বরাবর কীভাবে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে আমেরিকা? এ প্রসঙ্গে কী বলছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা? স্বার্থ হাসিল করে বিপদে ফেলেছে প্রাক্তন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ডাকে সাড়া দিয়ে কুর্দিরা সাদ্দামের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল। সশস্ত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল হাজার হাজার কুর্দি। শেষে স্বীকৃতির দাবিতে গণহত্যার শিকার হতে হয়েছিল নিরীহ মানুষগুলিকে। আশির দশকে তুরস্কে স্বাধীন কুর্দিস্তান গঠনের দাবি নিয়ে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন হয়। তখন খেকেই যেন পায়ের তলার মাটি কিছুটা শক্ত হল এই জাতির। দলের চেয়ারম্যান আবদুল্লা অকালানের নেতৃত্বে প্রথমবার সাধারণ কুর্দিদের মনে জায়গা করে নেয় পিকেকে। ১২ নভেম্বর জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ইস্তানবুল। এই বিস্ফোরণের পিছনে কুর্দি বিদ্রোহীদের হাত দেখছে তুরস্ক। বিস্ফোরণের জবাব দিতে এবার পিকেকে-র বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। এমনটাই বলছে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ তুরস্ক সব মিলিয়ে ২৫টি বিমান হামলা চালিয়েছে উত্তর সিরিয়া এবং ইরাকের একাধিক জায়গায় হামলা চলেছে। সরকারকে তাঁতিয়ে দিয়ে তুরস্কে যুদ্ধের দামামা বাজাতে চায় কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি ? মধ্যপ্রাচ্যে কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে ইরাকসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের পতন কি এগিয়ে আসছে? নাকি নিজেদের কবর নিজেরাই খুড়ছে এই জনগোষ্ঠী? প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম