।। প্রথম কলকাতা ।।
Calcutta High Court: কলকাতা হাইকোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ মামলার জট কাটল না। ২০২৩ এর ৭ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শুনানি থাকলেও সমস্যা মেটেনি। আদালত নতুন করে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি আবার শুনানি হবে। কার্যত ৩১শে জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ রপ্তানি প্রকল্পের বিরোধিতা করে তার উপর স্থগিতাদেশের জন্য এই মামলা দায়ের হয়। মামলাটি করা হয়েছিল অ্যাসোসিয়েশনস ফর প্রটেকশন অফ ডেমোক্রেটিক রাইটস এবং পশ্চিমবঙ্গের ৩০ জন ফল বাগিচা চাষীর পক্ষ থেকে।
২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড আদানি গোষ্ঠীর শক্তি সংস্থার সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ আমদানির একটি চুক্তি করে। এই চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পাবে প্রায় ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের পক্ষ থেকে আদানি সংস্থাকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশে যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় সেই জন্য আদানি গোষ্ঠী ফারাক্কায় বসাচ্ছিল একটা হাইটেনশন পোস্ট। বিষয়টি নিয়ে মামলার দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
৭ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছিল। যেখানে আদানি গোষ্ঠীর আইনজীবীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের কাছে নাকি মামলার আবেদনের কোন নথি সরবরাহ করা হয়নি। অপরদিকে চাষীদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী ঝুমা সেন। তার দাবি অনুযায়ী, মামলার সমস্ত কপি নিয়ম অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়েছিল। তাই আদালত ২০ ফেব্রুয়ারি নতুন করে মামলা শুনানির দিন ধার্য করে। আগামী তিন দিনের মধ্যে ওই মামলার মূল নথি সরবরাহ করতে হবে।
ফারাক্কায় প্রচুর আম আর লিচুর বাগানের উপর দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য আদানি গোষ্ঠী ব্যবহার করছিল উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক তার। যার জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন চাষীরা। তাই তারা বিরোধিতা করেন। এমনকি গত ২০২২ এর জুলাই মাসে ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ অনুযায়ী, তারা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পাননি। উপরন্তু তাদের বাগানের উপর দিয়ে জোর করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবি অনুযায়ী, তারা অর্থনৈতিকভাবে এই বাগানের ফলনের উপর বিশেষ ভাবে নির্ভরশীল। যদি বাগানের উপর দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার যায়, তাহলে তার ব্যাপক প্রভাব পড়বে ফলনের উপর। এই অভিযোগে ২০২২ এর জুলাই মাসে লুৎফর রহমান নামক এক চাষী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই সময় মামলা উঠেছিল বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে। তখন রাজ্য সরকারকে আদানি প্রকল্পের নিরাপত্তা বিষয়ক নির্দেশ দেওয়ার জন্য বলা হয়। পাশাপাশি বলা হয়, কৃষকরা যাতে যথাযথভাবে জমির বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ পান সে বিষয়ে মুর্শিদাবাদের জেলা শাসকের কাছে আবেদন করতে হবে। তারপর প্রায় দীর্ঘ ছয় মাস কেটে যায়। চাষীদের অভিযোগ অনুযায়ী, তারা কোন ক্ষতি পূরণ পাননি।
অপরদিকে তাদের কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যার কারণে আদানি গোষ্ঠী এবং রাজ্য সরকারকে অভিযুক্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৩০ জন বাগিচা চাষি এবং অ্যাসোসিয়েশনস ফর প্রটেকশন অফ ডেমোক্রেটিক রাইটস হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম