।। প্রথম কলকাতা ।।
Mountaineer: পীঠে ভারী ব্যাগ! কালশিটে পরে গিয়েছে তাও কোনও শেরপার সাহায্য নেননি। সব সরঞ্জাম নিয়ে সাহস করে একাই পার করেছেন সব ক্রেভাস। বরফে যে গর্তের মধ্যে একবার পড়ে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই বিশ্বের অষ্টম-উচ্চতম শৃঙ্গ মানাসলু জয় করলেন কলকাতার অরিজিৎ। শ্যামবাজারের অরিজিৎ বাংলার গর্ব। এই দুর্গম শৃঙ্গ জয় করা সহজ নয়! কীভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করলেন? সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮১৬৩ মিটার উচ্চতায় শ্বাস নিলেন কীভাবে? সেই জার্নি জানলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনার।
শ্যামবাজারের কাছে সরকারবাগানের বাসিন্দা। ৩২ বছর বয়সী অরিজিৎ একটা সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি করতেন। বেশিদিন চাকরি করেননি। ছেড়ে দিয়েছেন। তার সমবয়সিরা যখন সাফল্যের ইঁদুরদৌড়ে ছুটছেন৷ তখন অরিজিতের এসব ভাবার সময়ই নেই৷ তাঁর লক্ষ্য যে বিশ্বের এক এক দুর্গম পাহাড়ের চূড়া৷ রুকস্যাকের ওজন ২৮ কেজি। স্টোভ, শুকনো খাবার, স্লিপিং ব্যাগ কী নেই সেই ভারী ব্যাগ নিয়ে পার করতে হয়েছে একেকটা গভীর ক্রেভাস। তাঁবু খাটানো থেকে খাবার বানানো, বরফ গলিয়ে জল তৈরি রাতে তুষারঝড় আসছে কিনা সবই করেছেন একা। কারণ কোনও শেরপা ছাড়াই মানাসলু জয় করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন।
মানাসলু যার মানে হল হল আত্মার পর্বত। পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম শৃঙ্গ ৮, ১৬৩ মিটার উচ্চতায়। গত বছরই মানাসলু অভিযানে গিয়ে বসন্ত সিংহরায়ের টিমের নদিয়ার অভিযাত্রীরা প্রবল তুষারধসের মুখে পড়েন। কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে ফিরে এসেছিলেন বসন্ত সিংরায় নিজেও। সেই পর্বতশৃঙ্গ অরিজিৎ একা পার করেছেন। গত রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ প্রথম বাঙালি হিসাবে মানাসলুর ট্রু সামিটে পৌঁছন অরিজিৎ। ক্যাম্প থ্রি পার করে যখন মানাসলু শৃঙ্গের দিকে এগোচ্ছিলেন তখন তাঁর ব্যাকপ্যাকে কোনও অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল না। খাবারের পরিমাণও প্রায় শেষের পথে। সোলো মাউন্টেনিয়ার হিসেবে এগোলেও রাস্তায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় রুশ পর্বতারোহী আর্টনের। মানসলুর চূড়ায় দাঁড়িয়ে একে অন্যের ছবি তুলে দেন তাঁরা।
১২-১৩ লক্ষ টাকার মানাসলু অভিযান তিনি সেরেছেন মাত্র আড়াই লক্ষ টাকায়। গরিব ঘরের ছেলেমেয়েদের যাঁদের শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন। তাঁদের পথ দেখাতে চান। গত দুবছর মানাসলু থেকেই বিপল হয়ে ফিরেছিলেন অরিজিৎ। ২০২১ এবং ২০২২-এও তিনি মানসলু অভিযান করেছিলেন। প্রথম বার শেরপাদের অসহযোগিতা, দ্বিতীয় বার প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা রুখে দিয়েছিল। কোনও বারই শৃঙ্গজয় হয়নি। অবশেষে স্বপ্নপূরণ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম