।। প্রথম কলকাতা ।।
Toto Girl: মেয়েটা ক্লাস নাইনে পড়ে। মনে অদম্য জেদ, আর এক বুক সাহস। তাতেই ভর করে চলছে প্রতিদিনের লড়াই। স্কুলের সমস্ত বন্ধুদের সাথে কথা বলতে চায়। কিন্তু তার সাথে খুব একটা কেউ মেশে না। কথাও বলে না। মেয়েটার মন তাই বেজায় খারাপ। প্রতিদিন তাড়াহুড়ো করে স্কুলে ঢোকে, আবার স্কুল থেকে বেরিয়ে চলে যায় বিশেষ ডিউটিতে। হাতে তুলে টোটোর স্টিয়ারিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু সার্চ করলেই পাবেন টোটো চালক গায়ত্রীর গল্প। পরিস্থিতি এই ছোট্ট মেয়েটাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, বাস্তবতা কতটা কঠিন। তাই অভাবে হাল না ছেড়ে সংসারের দায়িত্ব সামলাচ্ছে। পাশাপাশি করছে পড়াশোনাও।
বয়স খুব একটা বেশি না। সবে মাত্র ১৫। গাইঘাটা এলাকার সকলের পরিচিত মুখ এখন গায়ত্রী হালদার। সকাল সন্ধ্যা চালায় টোটো। আর মাঝে স্কুলে যায়। যাত্রী পরিষেবা দিয়ে যে কটা টাকা পায় তাই দিয়েই চলছে গোটা সংসার। বছর কয়েক আগে বাবা ব্রেন স্ট্রোকের কারণে শয্যাশায়ী হয়ে যান। সংসারে আয় করার মত কেউ নেই। বড় দিদি আছে কিন্তু দিদির স্বপ্ন পুলিশ অফিসার হবে। পড়াশোনা করছে। তাই সংসারের হাল ধরতে এগিয়ে এসেছে এই ছোট্ট মেয়ে। রীতিমত জেদ করে টোটো চালানো শেখা তার। ছোট্ট মেয়ের লড়াই দেখে গায়ত্রীর মা কৃষ্ণা হালদারও দুটি বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। মেয়ের কষ্ট অসুস্থ বাবাও সহ্য করতে পারেন না। তিনি বুঝতে পারছেন, তার মেয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু কোন উপায় নেই। শরীর ভীষণ দুর্বল। হাত সেভাবে কাজ করে না। বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন না।
বাবার চিকিৎসার খরচ যোগাতে আর দিদির স্বপ্ন পূরণ করতে নিজের সমস্ত শখ ইচ্ছে ত্যাগ করে টোটো চালাচ্ছে গায়ত্রী। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। টোটো চালায় বলে স্কুলে মানসিক ভাবে একা। সহপাঠীরা তার সঙ্গে কথা বলে না। যদিও নানান বিদ্রুপ কটুক্তির মাঝেও সে জয়ী। তার বন্ধু এই টোটো । লক্ষ্য একটাই, বাবাকে সুস্থ করে তোলা।গায়ত্রী লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম