Shibram Chakraborty: অবহেলায় পড়ে রয়েছে শুকনো পাতা, সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ শিবরাম চক্রবর্তীর বাড়ি

।। প্রথম কলকাতা ।।

Shibram Chakraborty: বাড়ির অবস্থা ভগ্ন। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেউ নেই। দেয়াল থেকে খসে পড়ছে রং। ভাঙাচোরা জানালায় শুকাচ্ছে ভেজা কাপড়। বাড়ির উঠোনে কিংবা ছাদে অবহেলায় শুকোচ্ছে গাছের ঝরে পড়া পাতা। অথচ এই বাড়ি বাঙালিদের কাছে অত্যন্ত গর্বের একটি স্থান। একসময় এখানে ছিলেন বাংলার বিখ্যাত রস সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী(Shibram Chakraborty)। কখনো সাহেব মারতে পিস্তল ধরেছেন, আবার কখনো পেটের দায়ে কাগজ বিক্রি করেছেন। কলম থেকে বেরিয়েছে একের পর এক মহা মূল্যবান সাহিত্য সম্পদ। তাঁর সাহিত্য সরস হলেও জীবন বহু রঙা।

দুঃখের বিষয় একসময় তিনি যে বাড়িতে থাকতেন সেই বাড়ির অবস্থা আজ ভগ্নপ্রায়। প্রশাসনিক ভাবে সেভাবে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংরক্ষণের অভাবে বাড়িটি নষ্ট হতে বসেছে। শিবরাম চক্রবর্তীর বর্তমান প্রজন্ম এখন ওই বাড়িতে থাকে। যাদের মধ্যে অনেকেই শিবরাম চক্রবর্তীকে চাক্ষুষ দেখেননি। তারাও চান বাড়িটি সংরক্ষণ করা হোক। শিবরাম চক্রবর্তীর এই বাড়িতে যেতে গেলে আপনাকে যেতে হবে মুর্শিদাবাদে নিমতিতায়। এছাড়াও চাঁচলের রাজবাড়ির সঙ্গে তাঁর বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সেসময় চাঁচলের জমিদার ঈশ্বরচন্দ্রের স্ত্রী সিদ্ধেশ্বরী দেবী ছিলেন শিবরামের মাসি। যদিও শিবরাম চক্রবর্তী বড় হয়ে ওঠা দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে। বর্তমানের ৮১ নং জাতীয় সড়কের দূরে পাহাড়পুরে ছিল শিবরাম চক্রবর্তীর বসত ভিটা। ছোটবেলায় শিবরাম মাসির ভালোবাসা পেয়েছিলেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি চাঁচল ছেড়ে পাড়ি দেন কলকাতায় ঠাঁই হয় মুক্ত রামবাবু স্ট্রিটে।

শিবরাম চক্রবর্তীর বিভিন্ন লেখায় চাঁচলের কথা পাবেন। তাঁর কলমে চাঁচলের প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা বারংবার আমাদের মুগ্ধ করে। এছাড়াও রয়েছে পাহাড়পুরের কথা। অথচ সেই চাঁচলে থাকা তাঁর বাড়ির পরিণতি আজ জরাজীর্ণ। দূর থেকে এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন কোন পুরনো ভুতুড়ে বাড়ি, অথচ সেখানে মানুষও থাকে। এই বাড়িতে রয়েছে শিবরাম চক্রবর্তীর পালঙ্ক। এছাড়াও কিছু ঘরে আলমারিতে থরে থরে সাজানো রয়েছে প্রচুর বই, যা দুষ্প্রাপ্য সম্পদ হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে। এক্ষেত্রে শিবরাম চক্রবর্তীর বর্তমান প্রজন্ম প্রশাসনিক উদাসীনতার দিকে আঙুল তুলছে। বাড়িটির দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, জানালা দরজার হাল বেশ খারাপ। এমত পরিস্থিতিতে শিবরাম চক্রবর্তীর বংশধর শিখা চক্রবর্তী চাইছেন, রাজ্য সরকার কিংবা রাজ্যের প্রশাসন বিষয়টির দিকে নজর দিক। বর্তমান প্রজন্ম শিবরাম চক্রবর্তীকে জানুন। শিবরাম চক্রবর্তীর আর এক বংশধর বীথি চক্রবর্তী জানান, তারা পরিচিতি চান না। তারা শুধু চান, সাধারণ মানুষ জানুক একসময় এখানে শিবরাম চক্রবর্তী থাকতেন। বাড়িটি যেন সরকার যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং হেরিটেজের তকমা দেয়।

অপরদিকে চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ জানান, শিবরাম চক্রবর্তীর বাড়িটিকে নিয়ে ভাবনা শুরু হয়েছে। তিনি নিজের তহবিল থেকে এর আগেও পাহাড়পুরে একটি মূর্তি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে।। সাহিত্যিকের বাড়ি সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, শিবরাম চক্রবর্তীর পরিবারের সদস্যরা আবেদন করলে সেটি গুরুত্ব সহকারে দেখা করা হবে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version