।। প্রথম কলকাতা ।।
রাশিয়ার কারণে ভারতের বাণিজ্যে কোপ? বিপুল টাকার লোকসান সামলাতে পারবে দেশটা? এদিকে লাভের গুড় খাচ্ছে রাশিয়াহিরেই পুতিনের হাতিয়ার! অর্থনীতির বল যেভাবে নিজের দখলে রেখেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু করেছিলেন পুতিন নিজেই। বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রুশ প্রেসিডেন্ট । পড়শি দেশের ঘুম কেড়েছেন। ভারতকে কাবু করে পুতিনের দাদাগিরির দাপট কীভাবে বাড়ছে?
ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছে নিজের অস্তিত্বের তাগিদে।এদিকে ভারতের হিরে বিক্রি করে যুদ্ধের খরচ জোগাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়ার থেকে হিরে কিনে পালিশ করে তাসে দেশটাকেই বিক্রি করে ভারত। সেই হিরে বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে রাশিয়া। যুদ্ধে কিছুটা ক্ষতবিক্ষত হলেও অর্থনীতির মাঠে বল রাশিয়ার পায়েই রয়ে গেছে।এদিকে ভারতের রফতানি করা হিরে খাজানা হয়ে উঠছে পুতিনের কাছে। বলছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
যুদ্ধের শুরু থেকেই পশ্চিমীরা রাশিয়ার উপর যে প্রাথমিক অস্ত্র ব্যবহার করে আসছে , তা হল নিষেধাজ্ঞা। এমনটাই বলে থাকে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ। কিন্তু রাশিয়ার অর্থনীতির হাড় ভেঙে দেওয়া কি অতই সহজ?জ্বালানি আমদানি বন্ধ করে রুশ প্রেসিডেন্টকে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল ইউরোপ। সেই কৌশলে নিজেরাই শেষে কাবু হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের এবড়োখেবড়ো হিরে কেটে, পালিশ করে তাকে চোখ ধাঁধানো করে তোলা। এবং তার পর তা আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি। এই কাজে দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্বে শীর্ষ স্থান ভারতের দখলে।
সারা পৃথিবীতে যত হিরে খনি থেকে তোলা হয়, তার বেশির ভাগটাই আসে ভারতে। তার পর এখান থেকে কেটে ও পালিশ করে তা ফের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হত। কিন্তু এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ভারতের ভরসা ইজরায়েলের তেল আভিভ বা দুবাইয়ের মতো বিশ্বের অন্যতম হিরে কেনাবেচার হাবগুলির প্রতিনিধিরা।প্রধানত রাশিয়া ও আফ্রিকার খনিগুলি থেকে তোলা হিরে এরাই রফতানি করার আগে কাটা ও পালিশের জন্য ভারতে পাঠানো হয়।
রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞায় উল্টে বেকায়দায় পরছে ভারত। হীরে লেনদেনে একতরফা মুনাফা লুটছে রুশ প্রেসিডেন্ট। কিন্ত লেনদেন হচ্ছে কীভাবে? হিসেবটা খুবই সহজ। রাশিয়ার আলরোসা বিশ্বের অন্যতম অখণ্ডিত হিরের সংস্থা। যুদ্ধের আগে এই হিরে রপ্তানি হত আমেরিকাতে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বাইডেন। এরপরই রাশিয়া অমসৃণ হিরের দাম বাড়িয়ে দেয়। যার প্রভাব পড়ছে ভারতের উপর।কারণ দীর্ঘদিন রাশিয়ার থেকে অমসৃণ হিরে আমদানি করছে ভারত। কীভাবে চলছে এই হিরে লেনদেন? ভারতের “হিরের শহর” সুরাটে আসে রাশিয়ার অমসৃণ হিরে যাকে পালিশ করে মস্কোতে রফতানি করে দিল্লি।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জ্বালানি সংকট যেন বেড়েছে পশ্চিমের দেশগুলিতে। তেমনই হীরে রফতানি তলানিতে ঠেকেছে। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে গত আট মাসে ভারতের হিরে রফতানি কমেছে১৭ শতাংশ। আমদানির খাতে খরচ বেড়েছে ১৮ শতাংশ, এমনকি পরিসংখ্যন বলছে, ২০২১-এর এপ্রিলে রাশিয়া থেকে ভারত ১৬৩ লক্ষ ক্যারট হিরে আমদানি করেছিল। সেখানে ২০২২ সালের এপ্রিলে সেই আমদানি কমে দাঁড়ায় ৬০ লক্ষ ক্যারট। এই হীরে লেনদেনে ভারতের লোকসান হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।যে অঙ্কটা প্রায় কুড়ি হাজার কোটি টাকা।
ইউরোপের হিরের গয়নার ব্র্যান্ডগুলি রাশিয়ার আলরোসা থেকে হিরে কেনা বন্ধ করে দেয়। ব্যবসায় ক্ষতি হতে থাকায় রাশিয়া দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় কোপ পরে ভারতের উপরে। এর ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে এখানকার বহু কারখানাকে।এদিকে বাজারে চড়া দাম হাঁকিয়ে নিজের বেতাজ বাদশা ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম