রহস্যে ভরা পুতিনের জাহাজ বহর! ডার্ক শিপ যুক্তরাষ্ট্রের আতঙ্ক, কী করে এরা ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

বড় ধাঁধা! রহস্যময় জাহাজ বহর পুতিনের, গোপনে মহাসমুদ্রে তেল নিয়ে কোথায় ছুটছে মস্কোর ওই জাহাজগুলো? কোথা থেকে এই বহরে এতো জাহাজ এলো? এদের কাজ কী? “গ্রে শিপ” আর “ডার্ক শিপ”এ ভর করে গোটা বিশ্বে কী ছড়াচ্ছেন পুতিন? যুক্তরাষ্ট্র তো টেরও পাচ্ছেনা, নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে রুশ তেলের নেটওয়ার্ক কতদূর ছড়িয়ে গেছে। জানেন কোনও অন্ধকার দুনিয়ার সাথে কানেকশন বাড়াচ্ছে রাশিয়া? আড়ালে রয়েছে কে? গভীরে তলিয়ে দেখতে হবে। রহস্য ভরপুর, কিন্তু উন্মোচন করা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাই সার। ক্রেতাদের কাছে জ্বালানি তেল পৌঁছে দিচ্ছে রাশিয়া। মহাসমুদ্রজুড়ে রুশ তেলের এই বাণিজ্য চলছে আড়ালে, সঙ্গোপনে। আসলে কারা বহন করছে রুশ তেল?

বিশেষজ্ঞরাও ভেবে কূল পাচ্ছে না। রাশিয়ার তেল রপ্তানির পথ সুগম করতে, পুতিনের গোপন ট্যাংকার বহরের সাথে যোগ দিয়েছে ৬০০ জাহাজ। কিন্তু এই জাহাজগুলোর মালিকানা সংস্থা কারা? সেটাই বড় ধাঁধা কেনই বা রাশিয়া এই রহস্যময় জাহাজ বহর তৈরি করলো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাশিয়ার তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাড়তি জাহাজের দরকার ছিল। রাশিয়ার জাতীয় বাণিজ্য বহরে পর্যাপ্ত ট্যাংকার জাহাজ ছিলনা। সেই ঘাটতি পূরণেই এগিয়ে এসেছে নতুন অনেক শিপিং কোম্পানি। রুশ ক্রুড অয়েল বহনকারী জাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘গ্রে শিপ’ ও ‘ডার্ক শিপ’। যেসব জাহাজকে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মালিকরা বিক্রিরা করেছেন সেগুলো ‘গ্রে শিপ’। এসব জাহাজ আগে ট্যাংকার বাণিজ্যে জড়িত ছিল না, তারা নতুন করে যুক্ত হয়েছে! আর, ‘ডার্ক শিপ’ বলা হচ্ছে সেসব জাহাজকে, যেগুলো এর আগে ইরান ও ভেনেজুয়েলা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে জ্বালানি রপ্তানিতে ব্যবহার করেছে। নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর দীর্ঘদিনের এক্সপিরিয়েন্স আছে এসব জাহাজের ক্রুদের। তারাই এখন রুশ তেল বহন করছে।

তাহলে কী এই সুযোগে ইউরোপের বিকল্প বাজার ধরতে রাশিয়া গোপন সংস্থাগুলোর সঙ্গে কানেকশন বাড়াচ্ছে তলে তলে? চীন-ভারত-তুরস্ক তো সোজাপথে রুশ তেল কিনছে। তাছাড়াও আড়ালে থেকে পুতিনের সঙ্গে ডিল করছে কোন মহারথী? একটা দুটো নয়, পুতিনের এই রহস্যময় বহরে প্রায় ৬০০ জাহাজ রয়েছে, যা বিশ্বের বৃহৎ ট্যাংকার জাহাজের মোট সংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। দিন দিন এই সংখ্যাটা আরও বেড়েই চলেছে। জানলে অবাক হবেন এই বাণিজ্যিক জাহাজগুলো এআইএস ট্রান্সপন্ডার যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের লোকেশন জানান দেয়। কিন্তু এই যন্ত্র ডার্ক শিপগুলো প্রায়ই বন্ধ রাখছে। ফলে তাদের চিহ্নিত করা বা এসব জাহাজের গতিবিধির ওপর নজর রাখা সহজ নয়। বোঝাই যাচ্ছে, মস্কো চেষ্টা করছে, পশ্চিমা শিপিং কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরতা কমাতে। আর তাই নতুন এমন কিছু সংস্থার সাথে ডিল করছে, যাদের পরিচয় অস্পষ্ট, অতীত ও কন্ট্রোভার্সিয়াল।

জ্বালানি বাণিজ্যের পরামর্শকরা বলছেন যুদ্ধ শুরুর পর- বিশ্বব্যাপী ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল বহনকারী ডার্ক ফ্লিটের পরিসর বাড়বে বলে ধারণা ছিল, সেটাই সত্যি হলো আর, এতেই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুতিন রীতিমতো উইনার। রুশ তেল ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বে। রাশিয়ান তেল বাণিজ্য আরো চাঙ্গা হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বের চাল ধোপে টিকছেনা। রহস্যময় জাহাজ বহরই পুতিনের ট্রাম্পকার্ড।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version