খাদ্যকে অস্ত্র করে যুদ্ধজয়ের চেষ্টা পুতিনের। হাত কামড়াচ্ছে ইউক্রেন, কোন সর্বনাশের পথে এগোচ্ছে বিশ্ব?

।। প্রথম কলকাতা ।।

পুতিনের চাল, মারাত্মক খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। হুহু করে বেড়ে যাচ্ছে খাদ্যশস্যের দাম। খাদ্যকে অস্ত্র বানিয়ে যুদ্ধজয়ের চেষ্টা মস্কোর। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মূল্য চোকাতে হবে গোটা পৃথিবীকে? ধ্বংস হচ্ছে একের পর এক শস্য ভান্ডার, পড়ছে খাবারে টান। কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে মরিয়া ইউক্রেন। এই দিন দেখাই তো বাকি ছিল। দরিদ্র দেশগুলো খাবে কী? বাঁচবে কী করে মানুষ?

গমে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। আর কয়েকটা দিন পর আটা, রুটি, পাউরুটি, পাস্তার দাম কতটা বাড়তে যাচ্ছে জানেন?শস্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে রাশিয়া। দাবি পূরণ না হলে আন্তর্জাতিক শস্য চুক্তিতে আর ফিরবেন না, সাফ জানিয়েছেন পুতিন। ফলে, ইউক্রেনের বন্দরগামী শস্যবাহী জাহাজ মানেই এখন রাশিয়ার টার্গেট। তাই জলপথে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য পৌঁছানোর রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে মস্কো। সেই এফেক্টে বিশ্বজুড়ে বেড়ে যাচ্ছে গমের দাম। তবে চুক্তি থেকে বেরিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি পুতিন। রাশিয়া, ইউক্রেনের ওডেসা সহ অন্যান্য শহরের শস্যভাণ্ডারে বোমাবর্ষণ করে চলেছে। শস্য ভান্ডার লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যাচ্ছেন পুতিন।

আগুন ধরে কৃষি সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। ইউক্রেন কৃষ্ণ সাগরের শস্য চুক্তি পুনরায় চালুর আহ্বান জানাচ্ছে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন স্থলপথে বিপুল পরিমাণে খাদ্যশস্য রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। তার ফলে সরবরাহ কম হলে বাড়বে দাম। এমতাবস্থায় করণীয় কী? বিশ্ব খাদ্য বাজারে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা, মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং যে দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্যশস্য তাদেরকে সরবরাহ করতে ইউক্রেনের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া জরুরী। যাকে বলে ইমারজেন্সি সিচ্যুয়েশন। মোদ্দা কথা কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য উদ্যোগ পুনরুদ্ধারে সম্ভাব্য সবকিছুই করা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেনে রুশ আমলা অব্যাহত থাকার মধ্যেই গত বছর জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হয়েছিল শস্যচুক্তি। ইউক্রেনের শস্য নিরাপদে রপ্তানির ব্যবস্থা করে বিশ্ব খাদ্য সংকট দূর করাই ছিল চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু, রাশিয়া সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসায় বিশ্বব্যাপী ফের খাদ্যশস্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

শুধু তাই নয় বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ারও তীব্র আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আসলে, পুরো বিষয়টাকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধজয়ের হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এদিকে রাশিয়ার এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসায় দরিদ্র দেশগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে। দরিদ্র দেশগুলোকে নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। আফ্রিকার সবচেয়ে ভয়াবহ খড়ার সাথে লড়াই করা কেনিয়া খাদ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কায় রয়েছে। সোমালিয়ায় এরই মধ্যে খাদ্যশস্য ও তৈল বীজের দাম বেড়েছে। চুক্তিটি নবায়ন না হলে আগামী দিনগুলোতে দরিদ্র দেশগুলোকে আর দেখতে হবে না। খাবারের দাম বাড়বে, খিদেয় মানুষের হাহাকার বাড়বে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কোনো কারণই নেই। সেক্ষেত্রে, বিশ্ব খাদ্য বাজার যে ভবিষ্যতে অন্ধকারের দিকে এগোচ্ছে তা নিশ্চয়ই নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version