পুতিন-শি গোপন আঁতাত ? আড়ালে চীন ক্যাপচার মস্কোর’! যুক্তরাষ্ট্র ডাহা ফেইল

।। প্রথম কলকাতা ।।

পুতিনের ভয়ানক স্ট্র্যাটেজি! চীন ক্যাপচার করে নিচ্ছে রাশিয়া। নর্দার্ন সি রুট দিয়ে হুহু করে ছড়াচ্ছে তেল। চীনের সীমান্ত শহরগুলোতে টাকার খেলা। শি-পুতিনের জবরদস্ত প্ল্যান, ফেল করছে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা। তলে তলে কোন ডিল? বিশ্বের আড়ালে বেইজিং মস্কোর আঁতাতটা জানেন কী? পুতিন-শি জোট। ঘুরে যাচ্ছে বাণিজ্য। উড়ছে টাকা। চীনের উপর ডিপেন্ড করে বেঁচে আছে মস্কো। দুই দেশ এখন আরো কাছাকাছি। শুধু তেল গ্যাস নয়, সামুদ্রিক মাছ, শস্যের ক্ষেত্রেও চীনা চাহিদা পূরণ করছে মস্কো।

আর্কটিক অঞ্চল মিরাকেল ঘটাচ্ছে। নর্দার্ন সি রুট দিয়ে‌ রুশ জাহাজে করে চীনা বন্দরগুলোতে রাশিয়ার তেল পৌঁছে যাচ্ছে। ব্যারেন্টস সাগর থেকে বেরিং প্রণালী পর্যন্ত রাশিয়ার উপকূল ধরে তেল ভর্তি জাহাজ পৌঁছে যায়। যেখানে, ২০২২ এর আগে আর্কটিক হয়ে চীনে কোনও তেল সরবরাহ হয়নি। সেখানে ২০২৩ এ রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি গড়ে ২৩% বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিদিন ৪ লক্ষ ব্যারেল হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ পুতিনের ভাগ্য খুলে দিয়েছে। পশ্চিমা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার তেলের চাহিদা কমেছে। চীন সেই বিকল্প পথ। রাশিয়া থেকে তেল কিনতে ইচ্ছুক বলেই মস্কো‌ বেইজিংয়ের জন্য আর্কটিক পথ খুলে দিচ্ছে। উত্তর মেরু বৃত্তের কাছাকাছি হওয়ায় আর্থিক সাগর বছরে অধিকাংশ সময় জমাট বরফে আচ্ছাদিত থাকে। মানে প্রতিবছর গ্রীষ্মের সময় মোটামুটি তিন মাস এই রুট ব্যবহারযোগ্য থাকে। কিন্তু পুতিন বরফের বাধা অতিক্রম করতে জানেন।

এবার আর্কটিক জুড়ে তেল পরিবহনের জন্য নন-আইস ক্লাস ট্যাঙ্কারগুলো ব্যবহার শুরু করবে রাশিয়া। যে হুলযুক্ত জাহাজ বরফ সরিয়ে তেল নিয়ে অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবে। শুধুই কি তাই? চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে চীন ও রাশিয়ার বাণিজ্যিক লেনদেন বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশেরও বেশি। চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ কাস্টমস এর ডেটা বলছে ২০২৩ সালে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত দুই দেশের বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে ৯৩.৮ বিলিয়ন ডলারে। এর মধ্যে শুধু মে মাসেই দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য হয়েছে ২০.৫ বিলিয়ন ডলার। মে মাসেও চীন রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে ১১.৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। চীন ও কম যায়না। রাশিয়ায় দিন দিন বাড়ছে চীনের রপ্তানি। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মস্কোতে বেইজিং এর রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৪২.৯৬ বিলিয়ন ডলারে। যা ২০২২ সালের একই সময়ে তুলনায় ৭৫.৬ শতাংশ বেশি।

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেটাকেই কাজে লাগিয়েছে চীন। মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়িয়েছে বেইজিং। রুশ ক্রেতাদের চাহিদার জোগান দিতে কাজ করছে একগুচ্ছ চীনা প্রতিষ্ঠান। ব্যস্ততা বাড়ছে চীনের রুশ সীমান্তবর্তী শহরগুলোয়। আগের চেয়ে চীনের মানঝৌলি রুশ সীমান্তসংলগ্ন বন্দরটি এখন রাত দিন ব্যস্ত থাকে। চাপ বেড়েছে এতোটাই যে বন্দরের কাজ সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। শহরটিতে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে যন্ত্রপাতি ও কনটেইনার বহনকারী ট্রাক। রাশিয়ায় চীনা নির্মাণসামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। চীনা গাড়ি ও যানবাহনের অন্যান্য যন্ত্রাংশের রফতানি সাড়ে চার গুণ বেড়েছে। আগে রাশিয়ার বাজার দখলে করে রেখেছিল জাপান ও ইউরোপের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তাদের সঙ্গে মস্কোর দূরত্বের ফলে রাশিয়ায় চীনা গাড়ির চাহিদা বেড়েছে।

এমনকি মোবাইল ফোন এর চীনা ব্র্যান্ডগুলো রাশিয়ায় তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ করছে সাধেই কি রুশ প্রধানমন্ত্রী জোর গলায় বলছেন, দুই দেশের বাণিজ্য এমন একটা জায়গায় পৌঁছাচ্ছে যে ২০২৩ এ লেনদেন রেকর্ড ২০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে। ২০২২ সালে যা ছিল ১৫ হাজার ২০ কোটি ডলার। গোটা বিশ্ব বুঝে গেছে চীন রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বেশি জোরালো হচ্ছে। ইনভেস্টের গভীরতা বাড়ছে। দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হচ্ছে। যার রীতিমতো চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বকে। তলে তলে চীন রাশিয়া কোন কোন ডিল ক্রাক করছে ঘুনাক্ষরেও টের পাচ্ছে কি যুক্তরাষ্ট্র? গোটা বিশ্বের আড়ালে অন্য খেলা খেলছে শি পুতিন জোট।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version