Binata Mahato: পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে কলেজের অধ্যাপিকা, শুনলে লড়াই করার সাহস পাবেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

Binata Mahato: বাবা বলেছিলেন “হাইফাই চাকরি নয়, মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে”। আজ বাবা নেই, কিন্তু বাবার কথা রেখেছেন বাংলার এই মেয়ে। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের বিনতা মাহাত আজ অধ্যাপিকা, পড়াচ্ছেন হবু শিক্ষকদের। একটা সময় সংসারে ছিল নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা, হাতে ধরার মতো কেউ ছিলনা। আজ সেই মেয়ে চালাচ্ছে গোটা সংসার। চরম অভাবেও পড়াশোনাটা ছাড়েননি। যারা ভাবছেন, টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারছেন না, কীভাবে জীবন যুদ্ধে জয়ী হবেন, তাহলে এই গল্পটা একবার শুনুন। কথা দিচ্ছি, নতুন করে লড়াই শুরু করার সাহস পাবেন।

বিনতা মাহাতোর ছোটবেলাটা একেবারেই সহজ ছিল না। বাবারা পাঁচ ভাই ভাই। বিনতারা চার বোন, কোন ভাই নেই। কিন্তু বাবার কাছে তারাই ছিলেন ছেলে এবং মেয়ে। বাবার স্বপ্ন ছিল, মেয়েরা সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচবে। বিনতার পড়াশুনা চলাকালীনই হঠাৎ তার বাবা মারা যান। একদিকে পরিবারের দায়িত্ব, অপরদিকে পড়াশোনা। পায়ের মাটি তখনও শক্ত হয়নি। স্কুলে প্রথম থেকেই ফার্স্ট গার্ল ছিলেন বিনতা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাকে ভীষণ ভালোবাসতেন। তারাই বাড়িতে এসে বিনতার মাকে বোঝান “আপনি শুধু মেয়েকে স্কুলে পাঠান, বাকি দায়িত্ব আমাদের”। তারপর বলরামপুর কলেজে ইংলিশ অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। কলেজে পড়ার পাশাপাশি খরচ তো চালাতে হবে! তাই একটি স্কুলে পার্ট টাইম শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হন। পাশাপাশি টিউশনি পড়াতেন। নিজেও টিউশনি পড়তেন। কিন্তু বাড়ি থেকে যাতায়াতের ভীষণ অসুবিধা হয়ে পড়ে। সময় লাগে, তার উপর খরচ তো রয়েইছে। তাই তিনি মেসে থাকতে শুরু করেন। যার ভাড়া ছিল ১৩৫০ টাকা। স্কুলে পড়িয়ে প্রথমে পেতেন ১২০০ টাকা, আর একটা টিউশনি পরিয়ে পেতেন ৪০০ টাকা। অসুবিধা হত ভীষণ। ১৬০০ টাকার মধ্যে মেস ভাড়া দিয়ে হাতে পড়ে থাকতই বা ক’টাকা! পুরুলিয়াতে বাতিঘর নামক এক সংস্থা দরিদ্র অথচ মেধাবীদের সাহায্য করত। তাদের সঙ্গে দেখা করেন বিনতা। কিছুটা সুরাহা মেলে।

যে স্কুলে পড়াতেন সেই স্কুলের একজন ডোনার শ্যামল কিশোর তিওয়ারি বদলে দেন বিনতার জীবন। তার খবরের কাগজে লেখেন বিনতার কথা। জানতে পেরে অনেক সহৃদয় ব্যক্তি বিনতার দিকে বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। সবাই বলেন “তুমি শুধু পড়াশোনা করো, আমরা তোমার পাশে আছি”। এক দাদা কুড়ি হাজার টাকা ডোনেশন দিয়ে তাকে ভর্তি করিয়ে দেন কানপুরে। সেখানে ক্রমাগত হিন্দি এবং ইংরেজি সাথে ওঠবস। প্রথমে মানিয়ে নিতে একটু অসুবিধা হয়েছিল, কিন্তু হাল ছাড়েননি। সেকেন্ড ইয়ারে যখন ভালো রেজাল্ট করেন তখন আর অ্যাডমিশন ফিস লাগেনি। তারপর শ্যামল কিশোর বাবু বিনতাকে বিএড পড়ান। বিশ্বভারতীতে এমএডে এন্ট্রান্স দিয়ে পান সেকেন্ড পজিশন। থার্ড সেম পড়াকালীন কোয়ালিফাই করেন নেট পরীক্ষা। এখন বিনতা ঝাড়খণ্ডের মধুপুরের একটি বিএড কলেজে অধ্যাপনা করেন। বুঝতে পারলেন তো, সাফল্যের মূল চাবিকাঠিটাই হলো পরিশ্রম। অভাব কোন বাধা হতে পারে না। তাই কখনো ভাববেন না আপনি হেরে গেছেন। https://www.facebook.com/100069378195160/posts/705678775088056/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

 

 

 

 

Exit mobile version