Prosenjit Chatterjee: প্রসেনজিৎ-র ছিলনা মেকআপ ভ্যান, শুটিং শেষে ঘুমাতেন গাড়ির ছাদেই

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

Prosenjit Chatterjee: দিনের পর দিন গাড়ির ছাদেই পড়ে থাকতেন প্রসেনজিৎ। ছিলনা কোনও মেক আপ ভ্যান। অনন্যা-জাহ্নবীর মত সোনায় বাঁধানো কপাল ছিলনা তার।কাজ করলে তবেই মিলত পরের প্রোজেক্ট। একটা সময় তো প্রসেনজিৎকে খাওয়ার সময়টুকুও দিতেন না পরিচালকরা। দিনের পর দিন পড়ে থাকতেন স্টুডিওর বাইরেই।বিশ্বজিতের ছেলে বলে কোনও বাড়তি খাতিরদারি নয়। ‘ইন্ডাস্ট্রির সিইও’ বুম্বাদার জীবন যেন আস্ত একটা সিনেমা। প্রসেনজিৎ-র জীবনের এই গল্প জানতেন?

 

‘আমি অরুণ চট্টোপাধ্যায়, আমি ইন্ডাস্ট্রি’, বলা প্রসেনজিতের কেরিয়ারের চাকচিক্য তো আমরা সকলেই দেখি, কিন্তু তার ভেতরের স্ট্রাগলটা জানেন কয়জন? বিশ্বজিৎ-র ছেলে বলে যে কোনও বাড়তি সুবিধা পেয়েছিলেন এমনটা তো নয়। দীর্ঘ ৩০ বছরের কেরিয়ারে ঝুলিতে ৩৫০টিরও বেশি ছবি। কোনওটা হিট তো কোনওটা সুপারহিট। কোনোটা আবার একেবারেই নজর কাড়তে পারেনি। হিট-ফ্লপের এই ঝোড়ো সফরের পেছনে থাকা তার স্ট্রাগলটা কিন্তু অনেকেরই অজানা।

 

শোনা যায় একটা সময় নাকি এমনও দিন গেছে যখন দিনের পর দিন স্টুডিওর বাইরে পড়ে থাকতেন তিনি। তিন থেকে চার শিফটে টানা শ্যুট করে গেছেন। এককথায় স্টুডিও পাড়াই তখন তার ঘরবাড়ি। এসির বালাই তো নেই। এমনকি মেক আপ ভ্যান অবধি ছিলনা তার কাছে‌। অগ্যতা কী আর করা যায়? সেই সময়টা দুটো শিফটের মাঝে যেটুকু সময় পেতেন গাড়ির খোলা ছাদে শুয়ে ঘুমিয়ে নিতেন। যদিও আজকের দিনের স্টারকিডরা তো চাওয়ার আগেই সবটা পেয়ে যায়।

 

শোনা যায়, রাতে যাতে একটু ঘুমাতে পারেন তাই গাছের তলায় গাড়িটি পার্ক করার অনুরোধ করতেন। সেই গাড়ির ছাদেই করা হত বিছানা। ভোরবেলা এক চা দোকানি ডেকে তুলত। হাতের কাছে এগিয়ে দিত এক কাপ চা। এককথায় বললে, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জীবনটাও কিন্তু কোনো সিনেমার চেয়ে কম নয়।

 

বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে বলে যে একটু ছাড় পেয়ে গেলেন এমনটা মোটেও নয়। যদিও এই কারণেই আজ তিনি ইন্ডাস্ট্রির কাছে কৃতজ্ঞ। তখন ইন্ডাস্ট্রি এই বাড়তি সুযোগটা তাকে দেয়নি বলেই হয়ত আজ তিনি খোদ ‘ইন্ডাস্ট্রি’ হয়ে উঠেছেন। পরিচালক প্রযোজকদের প্রেশার এতটাই থাকত যে, খাওয়ার সময়টুকুও নাকি পেতেন না।

 

তাহলে অভিনেতা পেট ভরাবেন কিসে? প্লেটে করে হাজির করা হত দই শশা। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রোজই ওই এক খাবার। কখনও বা জুটত একটু আধটু রুটি তরকারি। কোনোদিন একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারলে হয়ত জুটত মায়ের হাতের রান্না। আর এই স্ট্রাগলের বিনিময়ে অর্জন করেছেন বিস্তর মান সম্মান। সেই সাথে বছরে ১০-১২ টা অবধি ছবিও রিলিজ হয়েছে তার।

 

২০০৪ সালে তো সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছিলেন তিনি। শুনলে চমকে উঠবেন যে, মাত্র এক বছরে মোট ২২টি ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ। হ্যাঁ, আমরা জানি যে পরিসংখ্যানটা একেবারেই অবিশ্বাস্য। তবে এটাই সত্যি। অবশ্য এটার জন্য তার নিজের উপর তো কম অত্যাচার হয়নি। একটা সময় তো গুরুতর অসুস্থ অবধি হয়ে পড়েছিলেন। ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। এখন অবশ্য আর অনিয়ম নয়। বয়স ৫০ ছুঁতেই সাধু সাবধান। নিজেকে বন্দি করেছেন নিয়মের বেড়াজালে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version