পিকে হালদার ফিরছে ? ভোটের আগে ঝড় তুলতে চলেছেন হাসিনা!

।। প্রথম কলকাতা ।।

বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা তাহলে সত্যি সত্যি পিকে হালদারকে এবার ফিরিয়ে নিচ্ছেন? নির্বাচনের আগে পিকে হালদার বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছে?
বাংলাদেশ সরকারের সেই মাস্টারস্ট্রোক এবার সত্যি হতে যাচ্ছে? ব্যালট বক্সে ঝড় তোলার জন্য পিকে হালদারই ট্রাম্পকার্ড? এটা সবাই জানে যে পিকে হালদার ঘিরে দু দেশে এতো তোলপাড়, ভারত তাকে এবার সত্যিই তুলে দিচ্ছে বাংলাদেশের হাতে? এই স্ট্রাটেজিতেই কিস্তিমাত করবেন শেখ হাসিনা? জল্পনা অনেক, কিন্তু পিকে হালদার ইস্যুর আসল স্ট্যাটাসটা জানা আছে কী? সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট। চাট্টিখানি কথা কিন্তু নয়। বাংলাদেশের মাটিতে বিরাট বড় মানিলন্ডারিং এর ঘটনায় পিকে হালদার একটা রত্নের নাম। মহারথী প্রশান্ত কুমার হালদার। যে পিকে হালদারকে বাংলাদেশ ভোলেনি! দ্বিতীয় পিকে হালদার বাংলাদেশে তৈরি ও হয়নি এটা প্রথম কলকাতা বলছে না, বলছে খোদ ওপার বাংলা। সেই পিকে হালদার এখন ভারতের হাতে।

পিকে হালাদারকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। তবে তাতে লাভের লাভ হয়নি। কিন্তু, নির্বাচনের আগে পিকে হালদার ইস্যু নতুন করে জেগে উঠেছে কারণ অনেকেরই মনে হয়েছিল পিকে হালদার কে বাংলাদেশ ফিরিয়ে, শেখ হাসিনা তাকে আইনের আওতায় ফেলে বড় কোনও নজির তৈরি করবেন। যার এফেক্ট পড়বে নির্বাচনের ব্যালট বক্সে। কিন্তু এই পিকে হালদারকে দেশে ফেরানোর ইস্যুতে এখনও পর্যন্ত কতটা এগোতে পেরেছে আওয়ামী লীগ সরকার? এটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের ১৪ মে ভারতের অশোকনগরে পিকে হালদার গ্রেপ্তার হন। তারপর থেকে তিনি ভারতের জেলেই বন্দী!মামলা চলছে, হাজিরা দিচ্ছেন। অলরেডি চলতি বছরের ৮ ই অক্টোবর অর্থ পাচারের অভিযোগে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত প্রশান্ত হালদারকে ২২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। যে মানুষটার বিরুদ্ধে কানাডায় ৮০ কোটি টাকা পাচার এবং ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বড়সড় অভিযোগ রয়েছে।

একটা সময় সেই পিকে হালদারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক, পিকের কর্মকাণ্ডের পেছনে কোন রাঘব বোয়ালদের হাত আছে, কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পিকে হালদার এই জায়গায় পৌঁছেছে, সেগুলো নিয়ে বাংলাদেশের অন্দরে রাজনৈতিক মহলে কম কথা হয়নি, কম চাপানউতোর হয়নি। সেই পিকে হালদার বাংলাদেশে ধরা পড়ল না, গ্রেফতার হলো ভারতের মাটিতে। ফলে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে কম কটাক্ষের মুখোমুখি হতে হয়নি। তাই, সুযোগ বুঝে পুরনো ক্ষতয় মলম লাগাতে বা বলা ভালো কিছুটা ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচনের আগে পিকে হালদারকে যে বাংলাদেশে ফেরাতে চাইবেন সেটাই খুব স্বাভাবিক অংক। একটা বড় সুযোগও ছিল। কিন্তু আপাতত সেই গুড়ে বালি। ভারত থেকে পিকে হালদারকে বাংলাদেশে ফেরানো পুরোটাই ভারতে মামলা শেষ হওয়ার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়ে দিয়েছে দুদক মানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। হিসেবটা বুঝতে হবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। আর ইন্টারপোলের সহায়তার জন্যও পুলিশ সদর দপ্তরকে বলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বুঝতে হবে পিকে হালদার বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থে ভারতেও বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছে। তাই ভারতেও আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। ফলে এখানে জটিলতা আছে। তবে তার মানিলন্ডারিং এর টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে এখনই প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। সেটা এখন সম্ভব অতএব, নির্বাচনের আগে পিকে হালদার ইস্যুকে তুরূপের তাস করা শেখ হাসিনার জন্য যে এতো সহজ স্ট্রাটেজি হবে না সেটা একপ্রকার স্পষ্ট। তাই, পিকে হালদার ইস্যু নির্বাচনের ব্যালট বক্সে ঝড় তোলার ক্ষেত্রেও খুব একটা কার্যকরী বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাছাড়া, পিকে হালদারকে দেশে ফেরানোর পর অভিযোগের মুখে থাকা প্রভাবশালীরা ফের দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পারেন। আরও অনেকের নাম প্রকাশ পেতে পারে।

ফলে সেই সব মানুষ অস্বস্তিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাই পিকে হালদার নির্বাচনের আগে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরলে সেটা তাদের জন্যেও যে বিশেষ ভালো ফল বয়ে আনবে না তা নিয়েও কানাঘুষো চলছে। তাই আইন মেনে, পারস্পরিক চুক্তি অনুযায়ী প্রশান্ত কুমার হালদারকে বাংলাদেশে ফিরতে হলে সেটা যে যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ হবে তা নতুন করে বলার দরকার পড়ে না।

 

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version