Pakistan: পাকিস্তান মুজাহিদিনদের বড় করেছে এবং এখন তারা সন্ত্রাসী, স্বীকার করলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!

।। প্রথম কলকাতা ।।

Pakistan: নিজের দোষেই কপাল চাপড়াচ্ছে পাকিস্তান (Pakistan)। নিজেদের তৈরি অস্ত্র এখন তাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। পেশোয়ারের (Peshawar) এক মসজিদে হামলার (Mosque attack) পর থেকে গোটা পাকিস্তান এখন উত্তাল। পাকিস্তানের মন্ত্রীরাও এই সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি মেনে নিতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Interior Minister) রানা সানাউল্লাহ (Rana Sanaullah) জাতীয় পরিষদে (National Assembly) বলেছেন, মুজাহিদিনদের (Mujahideen) শক্তি দিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা একটা ভুল ছিল। পাশাপাশি তিনি পাকিস্তানের সাবেক শাসকদের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানান পুরনো শাসকদের নীতি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের বিকাশ এবং এই সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য অন্যতম কারণ। একই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থীদের লড়াইয়ের কথা।

মুজাহিদিনদের তৈরি করেছে পাকিস্তান। এখন তারা সন্ত্রাসী হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষে ভাষণ দেওয়ার সময় জানান সানাউল্লাহ। তাঁর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তানের অবস্থা ঠিক কেমন তা গোটা বিশ্বের কাছে পরিষ্কার। অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশটি রীতিমত ধুঁকছে। তারপর পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনীর উপর মারাত্মক হামলার সাক্ষী হওয়ার পর আতঙ্কে কাঁপছে গোটা দেশ। এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন, আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জনের বেশি। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বেলা ১টার দিকে।

জাতীয় পরিষদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি। এসবের মাঝে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে, যেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহেরিক-ই-ইনসাফ সরকার নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (TTP) বা পাকিস্তানি তালেবানদের সদস্যদের মুক্তি দিয়েছে যারা মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত ছিল। পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, এই টিটিপি আনুষ্ঠানিকভাবে তেহেরিক-ই-তালেবান-ই পাকিস্তান নামে পরিচিত। যারা আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে কর্মরত বিভিন্ন ইসলামপন্থী সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠীর একটি সংগঠন।

গতকাল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অভ্যন্তরে সদস্যরা সন্ত্রাস নির্মূল করার জন্য বড় ধরনের সংস্কারের দাবি জানায়। তারপর শুরু হয় উত্তপ্ত বিতর্ক। পেশোয়ার মসজিদ বিস্ফোরণ ঘটনার পর টিটিপির একটি দল সেই হামলার দায় স্বীকার করলেও, কয়েক ঘন্টা পর টিটিপির একজন মুখপাত্র সেই দাবি অস্বীকার করে একটি টুইট করেন। যেখানে বলা হয়, তাদের নীতিতে মসজিদ লক্ষ্য করা একেবারেই অন্তর্ভুক্ত নয়। যদি গত বছরের দিকে তাকানো হয় তাহলে দেখা যাবে, নভেম্বর থেকে পাকিস্তান জুড়ে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। পাকিস্তানের সরকারের মধ্যে টিটিপির একটি শান্তি চুক্তি হয়েছিল কিন্তু সেই চুক্তি আদৌ কি মানা হচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন।

২০০৭ সালে টিটিপি বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গ্রুপকে একত্রিত করে গঠিত হয়েছিল যা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সহযোগিতার বিপরীতে প্রতিবাদ করে। এছাড়াও এই টিটিপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে আফগান তালিবান লড়াইকে সমর্থন করেছিল। পাকিস্তানের মন্ত্রী সানাউল্লাহ জোর দিয়ে বলেছেন, এই টিটিপিকে আফগান তালেবান থেকে আলাদা মনে করা ভুল ছিল। অপরদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ জাতীয় পরিষদের বক্তৃতায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন আফগান শরণার্থীদের। তিনি জানান, গত দেড় বছরের মধ্যে প্রায় ৪.৫ লক্ষ আফগান বৈধ কাগজপত্র নিয়ে পাকিস্তানের প্রবেশ করেছে, কিন্তু আফগানিস্তানে ফিরে যায়নি।

আশির দশকে সোভিয়েত রাশিয়ার সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে এসেছিল। এরপর পাকিস্তান তার বিপুল সংখ্যক যুবদের আফগানিস্তানে পাঠায় রুশ সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। সেই সময় যারা আফগানিস্তানের পক্ষে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করত তাদেরকেই বলা হয় মুজাহিদিন। মনে করা হয়, পরবর্তীকালে এই মুজাহিদিনরা তালিবানদের সদস্য হয়ে উঠেছে, যা উভয় দেশের সরকারের জন্য অন্যতম একটি সমস্যা। এই বিষয়ে সানাউল্লাহ বলেন মুজাহিদিন পাকিস্তান সরকার তৈরি করেছে, কিন্তু এখন তারা সন্ত্রাসী হয়ে উঠেছে। পেশোওয়ার বিস্ফোরণ মামলায় ইতিমধ্যেই প্রায় ১৭ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version