।। প্রথম কলকাতা ।।
Pakistan Economic Crisis: বর্তমানে পাকিস্তানের(Pakistan) অর্থনৈতিক দুর্দশা(Economic Crisis) যে কতটা চরম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার প্রায় শূন্য হতে বসেছে। সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। অপরদিকে দেশটিতে অভ্যন্তরীণ কলহ লেগেই রয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, যার জেরে মাশুল গুনছেন সাধারণ মানুষ। জিনিসপত্রের দাম লাগাম ছাড়া। দুদিন আগে যাদের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি কেনা একেবারে জল ভাতের মতো ছিল তারাও সেই জিনিস কিনতে দুবার ভাবছেন। সব থেকে বেশি কষ্টকর ব্যাপার, বহু সাধারণ মানুষ আছেন যারা অর্থনৈতিক সংকটের জেরে পরিবার সদস্যদের সাথে আত্মহত্যার(Suicide)পথ বেছে নিচ্ছেন।
লাগাম ছাড়া মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে কয়েক মাস লড়াই করা যায়, কিন্তু টানা বহুদিন ধরে লড়াই করা বেশ মুশকিল। যাদের কাছে চাকরি নেই বা প্রয়োজনীয় অর্থ নেই তাদের প্রতিদিন খেয়ে পরে বাঁচতে গেলে ন্যূনতম কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। আর তার আকাল যদি বাজারে দেখা দেয় সেক্ষেত্রে মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের সুরজানি শহরের এক দম্পতি দুই শিশু কন্যাসহ বিষাক্ত জিনিস খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। জানা যায়, ওই পরিবারের কাছে এই উপার্জনকারী ব্যক্তি একজন ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি মুদ্রাস্ফীতি আর অর্থনৈতিক সংকটের জেরে তার কাছে কাজ ছিল না। পরিবারটি থাকত একটি ভাড়া বাড়িতে। অবশেষে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তারা বিষাক্ত পদার্থ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কয়েক মাস আগে আরেকটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। চরম দরিদ্রতার কারণে দুই শিশুসহ এক শ্রমিক খালে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। একই ঘটনা ঘটে মুজাফফরগড়েও। সেখানে এক ব্যক্তি তার চার বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
চরম আর্থিক সংকটে ধুঁকছে পাকিস্তান। চলতি সপ্তাহে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে প্রায় ৪৫.৬৪ শতাংশ। যার মারাত্মক কোপ পড়েছে ১৭ টি শহরের প্রায় ৫০টি বাজারে। যেখানে অধিকাংশ প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এক লাফে অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সামান্য টমেটোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৮.০৬ শতাংশ। আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৪.৫২ শতাংশ। গমের আটার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ২.৪০ শতাংশ। এগুলির সঙ্গেই পাল্লা দিয়েছে শাকসবজি, ঘি, ফল, চিনি থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। অপরদিকে কিছু জিনিসের দাম সামান্য কমেছে। সেই তালিকায় রয়েছে রসুন, মুরগি, মসুর ডাল, পিয়াঁজ, ডিম প্রভৃতি। পাকিস্তানবাসীকে এখন প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হচ্ছে নিজেদের অস্তিত্বের সঙ্গে।