।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: কপাল খুলছে বাংলাদেশের, বাড়ছে আয়তন। তৈরি হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ। যুদ্ধ করে নয়, অন্যের মাটি ছিনিয়ে নয়, প্রকৃতির আশীর্বাদে বড় হচ্ছে দেশটা। হাল ফিরবে অর্থনীতির। স্বপ্নের জাল বুনছে দেশটার মানুষ। এমন ভাগ্য ক’জনের হয় বলুন তো? কয়েক’শো বছর পর এই বাংলাদেশকে চিনতেই পারবেন না।প্রচুর লাভ গুনবে দেশটার মানুষ।
জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের বিরাট অংশ সাগরের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই বঙ্গোপসাগরের বুকে হাতছানি দিচ্ছে আর এক বাংলাদেশ। অথৈ নীল জল রাশির মধ্যে জেগে উঠছে মাইলের পর মাইল ভূখণ্ড। প্রকৃতি ঢেলে সাজাচ্ছে দেশটাকে। নদীর ধারে যারা বসবাস করেন তাদের সমস্যার শেষ নেই। সারাক্ষণ থাকতে হয় ভাঙা-গড়ার খেলার মধ্যে। একদিকে নদীর পাড় ভেঙে সর্বসন্ত হয়ে যাচ্ছেন, অপরদিকে পাচ্ছেন নতুন ভূমি। এই যোগ বিয়োগের হিসেবে যোগের পাল্লাটাই বেশি ভারী।
এই তো গত তিন দশক আগে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশির অংশ ছিল নোয়াখালীর চর নাঙ্গুলিয়া। সেটা এখন সমৃদ্ধ গ্রাম। গত ১০০ বছর ধরে পদ্মা মেঘনা আর ব্রহ্মপুত্রের বয়ে আনা কোটি কোটি টন পলি যোগ হচ্ছে এই ভূখণ্ডে। ২০১৬ সাল নাগাদ প্রতি বছরে গড়ে বাংলাদেশে যুক্ত হচ্ছিল ১৬ বর্গ কিলোমিটার ভূমি। ২০২১এ এসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ বর্গ কিলোমিটার। অপর দিকে প্রতিবছর প্রায় ৩২ কিলোমিটার ভূমি নদী ভাঙন আর সমুদ্রে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি যেমন দেশটা থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিচ্ছে, আবার দিচ্ছেও দুহাত ভরে। বঙ্গোপসাগরের বুকে নদীর বালিকণা আর পলিতে তৈরি দ্বীপগুলোতে তৈরি হয়েছে প্রচুর সবুজ খামারবাড়ি। ১৯৯৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার প্রায় ২৩ হাজারেরও বেশি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ৮৩ হাজার একর খাস জমির বন্দোবস্ত করেছে। মেঘনার ভাঙনে যে পরিমাণ ভূমি জলে বিলীন হচ্ছে, তার বিপরীতে অন্তত দশগুণভূমি জেগে উঠেছে।
নতুন সমৃদ্ধি নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ভাসান চর, উরির চরের মতো অসংখ্য চর আর দ্বীপ। কক্সবাজার থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার সাগরের মধ্যে জেগে উঠেছে সুন্দরবনের আদলে নতুন ভূমি, যেখানে তৈরি হচ্ছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র। পূর্বাঞ্চলের ভবিষ্যত রক্ষা করবে এই বন। নোয়াখালীতেও উন্নয়নের জোয়ার। ক্রস ড্যাম প্রকল্পের মাধ্যমে সমুদ্র থেকে উদ্ধার হবে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ভূমি। ব্যয় হচ্ছে ৫৮৮ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। বাস্তবায়িত হলে, সহজ হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে কৃষি জমি, বাড়বে উৎপাদন। স্থানীয় পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বৃদ্ধি পাবে কর্মসংস্থান। সোজা কথায়, গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে।
এই নতুন দ্বীপ আর চর নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা প্রচুর। ইতিমধ্যেই নতুন নতুন প্রকল্পের নির্দেশনা দিয়েছে দেশটার সরকার। যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে, দ্রুত কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, শিল্পায়নের জমির স্বল্পতা ঘটছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই ভূমি আগামী বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনা। আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চর আর দ্বীপগুলোর ভূমির মান উন্নত হবে। দেশটা রক্ষা পাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে। প্রয়োজন অনুসারে শিল্প, পর্যটন খাত আর পরিকল্পিত আবাসনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। প্রাকৃতিক ভাবে ভূমি গঠন নতুন নয়, কিন্তু কোন দেশের জন্য এটা অনেক বড় পাওনা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম