No Money For Terror: খুলে গেল মুখোশ! সন্ত্রাসবাদকে ভারতের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করছে চীন?

।। প্রথম কলকাতা ।।

No Money For Terror: সন্ত্রাসের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে চায় ভারত। সন্ত্রাসবাদকে একমাত্র গোড়া থেকে সমূলে উপড়ে ফেললে তবেই পৃথিবী সুস্থ হবে। সেই উদ্দেশ্যেই ভারত ‘নো মানি ফর টেরর’ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানেই খুলে গিয়েছে চীন পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের মুখোশ। বিশ্বের সবথেকে বড় সন্ত্রাসী ঘাঁটি রয়েছে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে। অথচ সম্মেলন থেকে দূরে ছিল এই দুটি দেশ। অপরদিকে চীন এই সম্মেলনের অংশগ্রহণে হ্যাঁ কিংবা না, কোন রেসপন্সই করেনি। চীন যে পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করে এ সংবাদ সকলের জানা। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি চীন প্রচ্ছন্নভাবে সন্ত্রাসবাদের আঁতুর ঘরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? কিন্তু এসব সহ্য করবে না ভারত, জানালেন নরেন্দ্র মোদী।

দিল্লিতে নো মানি ফর টেরর নামক একটি গ্লোবাল কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন সারা বিশ্বের প্রায় ৭২ টি দেশ এবং ১৫ টি বহুজাতিক সংস্থা। কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন নামে এবং আকারে সন্ত্রাসবাদ ভারতের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। যার কারণে ভারত হারিয়েছে হাজার হাজার মূল্যবান জীবন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ভারতবাসী বীরত্বের সাথে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। এই সম্মেলন হওয়ার আগেই ভারত সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহতার মুখোমুখি হয়েছিল। সন্ত্রাস মানেই মানবতা, স্বাধীনতা এবং সভ্যতার উপর আক্রমণ। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে সাহায্যের জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্কেবারে গোড়া থেকে সন্ত্রাসকে উপড়ে ফেলতে ভারত বারংবার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিছুদিন আগেই ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে বিল আনে কেন্দ্র। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসের অর্থের যোগান নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া যে ডিজিটাল কারেন্সিতে অনুমোদন দেবে সেগুলিই একমাত্র ভারতে চলবে। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জানান, বেশ কিছু দেশ সন্ত্রাসবাদকে মদদ দেওয়া তাদের বিদেশ নীতির অন্তর্গত করে নিয়েছে। তারা সন্ত্রাসবাদীদের আদর্শগত আর্থিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন যোগায়। এই সমস্ত দেশের কড়া মুল্য চোকানো উচিত। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে কটি সমস্যা গুরুতর তার মধ্যে অন্যতম হল সন্ত্রাসবাদ। যতদিন এটি নির্মূলে উপড়ে না ফেলা হবে ততদিন ক্ষান্ত হবেন না। নরেন্দ্র মোদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন। তিনি রীতিমত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি নানার মাধ্যম থেকে টাকা পায়, এই মাধ্যমগুলির মধ্যে বিভিন্ন রাষ্ট্র রয়েছে।

আশ্চর্যের বিষয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী ঘাঁটি পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান এই সম্মেলন থেকে দূরে ছিল। শুধু তাই নয়, এই দেশ গুলিতে অর্থায়নকারী চীন সম্মেলনে অংশ নেয়নি। ভারতের এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেনি কাতার। তারা যুক্তি দিয়েছে বিশ্বকাপের কারণে সন্ত্রাস বিরোধী বৈঠকের যোগ দেবে না। ইরাক যুক্তি দিয়েছে, তাদের দেশে এখন ভোটের আয়োজন চলছে। তাই কোন প্রতিনিধি আসতে পারবে না। ২০২২ এর নভেম্বরে প্রকাশিত দৈনিক ইনকিলাব-এর সংবাদ অনুযায়ী, চীন পাকিস্তানকে প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকার অর্থ সাহায্য করবে। এছাড়াও পাকিস্তান সৌদি আরব থেকে পাবে প্রায় ৪০০ কোটি ডলারের সাহায্য। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, পাকিস্তান চীনের পুরনো বন্ধু। তাদের আর্থিক পরিস্থিতিতে চীন সর্বতোভাবে সাহায্য করবে। দেনার দায়ে জর্জরিত পাকিস্তানকে বাঁচাতে চীনের এই অর্থ সাহায্য। চীন শুধু এখানেই থেমে নেই। পাক জঙ্গিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার প্রস্তাব যতবার ভারত দিয়েছে ততবারই রাষ্ট্রসংঘে বিরোধিতা করেছে চীন। রাষ্ট্রসঙ্ঘে বারংবার ভারতের বিরোধিতা করা আর পাকিস্তানের হয়ে কথা বলা পরোক্ষভাবে কি সন্ত্রাসবাদের সাপোর্ট করা নয়? কয়েক মাসে প্রায় চারবার ভারতের সন্ত্রাসবাদী বিরোধী প্রস্তাবে বাধা দিয়েছে চীন। মুম্বাই ২৬/১১ হামলার মাথা সাজিদ মীরের অন্যতম প্রধান সহযোগী লস্কর জঙ্গি শাহিদ মাহমুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দিকে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। এই প্রস্তাব দিয়েছিল আমেরিকা এবং ভারত। স্বাভাবিকভাবেই বেজিং-এর এহেন ভূমিকা বারংবার ভারতের সমালোচনার মুখে পড়েছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের'(FATF) ধূসর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে পাকিস্তানের নাম। গত চার বছর ধরে পাকিস্তানে ধূসর তালিকাতে ছিল। অভিযোগ ছিল জঙ্গি কার্যকলাপে পাকিস্তান অর্থ সরবরাহ করে। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জ মনে করছে গত এক বছরে ইসলামাবাদ সন্ত্রাসে আর্থিক সাহায্য রুখতে থেকে বেশ সক্রিয়তা দেখিয়েছে। শুধু রাষ্ট্রপুঞ্জ নয়, এটাই মনে করছে দ্য এগমেন্ট গ্রুপ অফ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি। তবে ধূসর তালিকা থেকে নাম বাদ পড়লেও পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে এ কথা বিশ্বাস করা বেশ কঠিন।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version