Medical Entrance Exam: মা শ্রমিক! বাবা টোটো চালক, অভাবকে সঙ্গী করে ডাক্তারি প্রবেশিকায় সফল বাংলার মেয়ে সুমাইয়া

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

 

Medical Entrance Exam: কাছ থেকে দেখেছেন অভাবকে।দেখেছেন তাঁদের মুখে দু বেলা দুমুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য বাবার হাড়ভাঙা পরিশ্রম। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে ধুঁকতে দেখেছেন মাকে। বেড়েছে জেদ। বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার শপথ নিয়েছেন মনে মনে। ইচ্ছে, ডাক্তার হয়ে চিকিৎসা করবেন মায়ের। আজ সেই লক্ষে সফল মুর্শিদাবাদের সুমাইয়া। আজ তাঁদের এক চিলতে মাটির বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়। সবাই দেখতে চান সুমাইয়াকে। তাঁকে ছুঁয়ে নিজের স্বপ্ন বাস্তব করতে চান সকলেই। ঠিক কিভাবে সাফল্য ছুঁতে পারলেন সুমাইয়া?

 

প্রকাশিত হয়েছে নিট পরীক্ষার ফল। এই পরীক্ষায় মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার সুমাইয়া সিদ্দিকা নজর কেড়েছেন সকলের। সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৬৭০ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। সর্বভারতীয় স্তরে তিনি ১৪ হাজার ৩২ র‍্যাঙ্ক করেছেন। ওবিসি ক্যাটাগরিতে তাঁর র‍্যাঙ্ক ৫৯৮১। তাঁর ডাক্তার হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। কী ভাবে এল এই সাফল্য?

 

বাবা টোটো চালক। মা বিড়ি শ্রমিক। সংসারে আর্থিক অনটন নিত্যসঙ্গী। বড়লোকের ছেলেমেয়েদের মতো ঘর ভর্তি বইখাতা, দামি দামি পেন ছিল না তাঁর। স্কুলে যাওয়ার জন্য সঙ্গী হয়নি ওয়াটার বটল। টিফিন বক্সে ঠাঁই পায়নি বার্গার, স্যান্ডউইচ। বদলে ছিল মলিন পোশাক, ছেঁড়া চটিতে সেফটিপিন। দেখেছেন বাবা-মায়ের হার না মানা পরিশ্রম। তা দেখেই জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জেদটাকে শান দিয়েছেন মনে মনে।

 

আর্থিক প্রতিকূলতা জয় করে অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা বা নিট-এ ভালো ফলাফল করলেন মুর্শিদাবাদের সুমাইয়া সিদ্দিকা। সুমাইয়া সিদ্দিকার বাড়ি ফরাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর পঞ্চায়েতের খোদাবন্দপুর গ্রামে। বাবা মোবারাক হোসেন ভোর থেকেই টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। মা সাজেদা বিবি সংসার সামলে বিড়ি বাঁধেন। যৎসামান্য উপার্জন দিয়েই তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছেন বাবা-মা। সবার থেকে বড় সুরাইয়া।

 

ছোট থেকেই ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করতেন তিনি। স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। নিজের স্বপ্ন সফল করতে পরিশ্রম করেছেন দিন রাত এক করে। অবশেষে সাফল্য মিলেছে। সুরাইয়া বলেন, ‘ছোট থেকে দেখেছি বিড়ি মহল্লায় শ্রমিকদের নানান অসুখে ভুগতে। নিজের মা অসুখে ভুগত। এই শ্রমিক বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা করাতে পারতেন না। আমি চিকিৎসক হয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’

 

তাঁর নজরকাড়া সাফল্যে খুশি সুমাইয়া সিদ্দিকার বাবা মোবারাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি লেখাপড়া শিখিনি। সবাই বলত মেয়ে অনেক বড় হবে। নজর দিও। আমি টোটো চালিয়ে ওদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। কোনওদিন অভাব বুঝতে দিইনি। আজ ওর সাফল্যে আমরা অত্যন্ত খুশি। আমি চাই ও মানুষের মতো মানুষ হয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াক।তাঁদের সেবা করুক।’ সুরাইয়া সাফল্যে খুশি প্রাতবেশীরাও। বুধবার সকাল থেকে অর্জুনপুরে তাঁদের একচিলতে মাটির বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের কথায়, ‘এলাকার একটা মেয়েকে ভালো পড়াশোনা করতে দেখে আরও অনেকেই উৎসাহিত হবেন। তারাও বড় হয়ে চিকিৎসক বা অন্য কোনও পেশাকে বেছে নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হবে।’

 

https://fb.watch/sBdW5AS93i/

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version