বনেদিবাড়িতে থিমের মন্ডপ! বালুরঘাটের চৌধুরী বাড়ির পুজোকে আপন করে নিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা

।। প্রথম কলকাতা ।।

এ পুজো একটু অন্যরকমের। এ পুজোর পরতে পরতে বনেদিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতার মিলমিশ। আসলে এখানে বনেদি বাড়ির পুজোকে আপন করে নিয়েছে বারোয়ারি।তাই জমিদার বাড়ির নাটমন্দিরে মাথা তুলেছে থিমের মন্ডপ। কোথায় হচ্ছে এমন পুজো? চলুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রতিবেদনে। আগে মূলত দুর্গাপুজো হতো বনেদি বাড়িতেই। জাঁকজমক করে পুজো করতেন জমিদাররা।সেখানে দেখা যেত বাঁশ পাতার মতো লম্বা চোখের সাবেকি প্রতিমা। ডাকের সাজে আলো ছড়াতেন কাঁচা হলুদ রঙের মা দুর্গা। বাহারি ঝাড়বাতিতে সেজে উঠতো নাট মন্দির।

যাত্রা, পালাগানের আসর বসতো। ধুতি পাঞ্জাবি পরে বাহারি লাঠি হতে সেসব তদারক করতেন জমিদারবাবু। সে এক মহা ধূমধামের ব্যাপার। জমিদারবাড়িতে ভিড় করতেন গ্রামবাসীরা। পাত পেরে ভোগ খাওয়া হতো।দশমীতে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতেন সকলে। সেই দিনগুলি আজ হারিয়ে গিয়েছে। জমিদারি প্রথা বিলোপের পর থেকে জৌলুস কমেছে সেসব পুজোর। অনেক পুজো বন্ধও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বনেদি বাড়ির পুজোকে বন্ধ হতে দেননি গ্রামবাসীরা, এমন দৃষ্টান্ত জানা আছে কি? তাহলে এমনই এক পুজোর সুলুক সন্ধান রইলো এই প্রতিবেদনে।

এখন বাংলার কোনায় কোনায় বারোয়ারি পুজোর ছড়াছড়ি। সেখানে এখন থিমের মন্ডপ, প্রতিমা। বাহারি আলোর কারিকুরি। অন্যদিকে কালের নিয়মে পুজোর জৌলুস অনেকটাই কমে গেছে বনেদি বাড়িতে। কিন্তু এমনটা যদি হয়, বনেদি বাড়ির পুজোই রূপ পেয়েছে বারোয়ারির? তেমনই এক পুজো হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে। এখানে কাঁঠালপাড়ায় চৌধুরী বাড়ির পুজোকে আপন করে নিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্বর্গীয় দীননাথ চৌধুরীর পূর্বপুরুষরা দেড়শো বছর আগে এই পুজো চালু করেন। এই জমিদার বাড়ির বর্তমান সদস্যদের মধ্যে জীবিত রয়েছেন একজন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।

অর্থ, লোকবলের অভাবে এই পুজো বন্ধ হতে বসেছিল। কিন্তু তা হতে দেননি এলাকার বাসিন্দারা। তারাই এগিয়ে এসে এই পুজোর হাল ধরেন। বর্তমানে তাঁদেরই উদ্যোগে পুজো হয়ে আসছে। এ বছর পুজোর বাজেট চার লক্ষ টাকা। এবার পুজোর থিম পুরুলিয়ার ছৌ নিত্য। সেভাবেই সেজে উঠছে মন্ডপ। প্রতিমাও হচ্ছে থিমের সঙ্গে সাযুয্য রেখে। এবার ছৌ নৃত্যের আদলে তৈরি হয়েছে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লোক শিল্পকে বালুরঘাটের দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জমিদার বাড়ির নাট মন্দিরের সামনেই তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। এভাবেই বনেদি বাড়ির পুজোকে আপন করে নিয়েছেন এলাকার সকলে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version