Pakistan: শেষ সময়ের মাস্টারস্ট্রোক! এই স্ট্র্যাটেজিতে ঘুরে দাঁড়ানোর ছক পাকিস্তানের। পাশ নাকি ফেল?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Pakistan: দেউলিয়া হওয়ার মুখে পাকিস্তানে পাশ হয়ে গেল নতুন আইন। চরম ডলার সংকট, তাই এবার তিনটে দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্য করবে পাকিস্তান। তালিকায় রয়েছে কোন কোন দেশ? কোন ২৬টি পণ্য এই তিনটে দেশে রপ্তানি করবে পাকিস্তান? বিপরীতে ওই দেশগুলো থেকে পাকিস্তান কোন কোন পণ্য আমদানি হবে? বিনিময় প্রথা চালু হলে কোন কোন দিক থেকে মুনাফা লুটবে পাকিস্তান? এবার এই স্ট্র্যাটেজিতেই ঘুরে দাঁড়ানোর পরীক্ষা পাকিস্তানের। পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়ছে। বাড়ছে আর্থিক সংকট। চরম ডলার সংকটে ভুগছে দেশটা। পাকিস্তানের হাতে যতটুকু বৈদেশিক মুদ্রা আছে, তা দিয়ে বড়জোর এক মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া, ইরান, আফগানিস্তানের সঙ্গে পণ্যের বিনিময়ে বাণিজ্য করার সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান।

এই বিনিময় বাণিজ্যে কোন কোন পণ্য পাকিস্তান থেকে রপ্তানি হবে এই তিন দেশে?

আফগানিস্তান, ইরান ও রাশিয়ায় রপ্তানি করার জন্য এখনও পর্যন্ত ২৬টা পণ্য চিহ্নিত করেছে পাকিস্তান। এর মধ্যে রয়েছে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম, গম ও জবের মতো বিভিন্ন খাদ্যশস্য, মাছ, ফলমূল, শাকসবজি, চাল, লবণ, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, জুতো, স্টিল এবং ক্রীড়া সামগ্রী। অন্যদিকে ওই দেশগুলো থেকে পাকিস্তানে যেসব পণ্য আমদানি হবে তার মধ্যে রয়েছে ফলমূল, বাদাম জাতীয় পণ্য, শাকসবজি, মসলা, খনিজ সম্পদ ও নানা রকম ধাতু। এছাড়া কয়লা এবং কয়লাজাত পণ্য, অপরিশোধিত তেল, এলএনজি ও এলপিজি, রাসায়নিক পণ্য, সার, প্লাস্টিক ও রাবার জাতীয় পণ্য, উল, লোহা এবং ইস্পাতের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র রয়েছে এই তালিকায়।

তাছাড়া, ডলার বাঁচাতে রাশিয়া থেকেও কম দামে জ্বালানি তেল কিনছে পাকিস্তান। তবে রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা তেলের মূল্য কীভাবে পরিশোধ করা হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এই যে পণ্য বিনিময় বাণিজ্য, এতে নাকি বিরাট লাভবান হবে পাকিস্তান। অন্তত বিশেষজ্ঞদের তেমনই মত। তাঁরা কি বলছেন, তাঁদের দাবি পাকিস্তানে ডলারের মজুত যে হারে কমেছে, তাতে এই পণ্য বিনিময়ের সুযোগ থাকা দরকার। এতে ঠিক কিভাবে লাভবান হবে পাকিস্তান? এটা বিশ্লেষণ করতে গেলে একটু গভীরে যেতে হবে।

দেখুন, জ্বালানি চোরাচালান পাকিস্তানে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মে মাসে পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম পরিবেশক সমিতি অভিযোগ করে, পাকিস্তানের বাজারে যত ডিজেল বিক্রি হয়, তার ৩৫ শতাংশ ইরান থেকে চোরাপথে আসছে। এছাড়া পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে বিপুল পরিমাণ পণ্য চোরাচালান হয়। যার মধ্যে রয়েছে আটা, গম, চিনি ও সার। এই চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পাক সরকার। তবে শুধুই কি পণ্য? প্রতিদিন পাকিস্তান থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তানে। এতে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের অর্থনীতি সুবিধা পাচ্ছে, সাহায্য পাচ্ছে। আর, এমনিতেই অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তান থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার পাচার হয়ে যাওয়ায় ইসলামাবাদের সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।

সেক্ষেত্রে বিনিময় প্রথা চালু হলে এগুলোতে কি লাগাম টানা যাবে?

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে বিনিময়প্রথা চালু হলেই যে পাকিস্তান থেকে মুদ্রা পাচার বন্ধ হবে, তা নয়। বিশেষ করে আফগানিস্তান সীমান্তে তো নয়ই। তবে এতে ইরান থেকে ডিজেল ও আফগানিস্তান থেকে অন্যান্য পণ্য চোরাপথে আসা বন্ধ হবে, এই চোরাচালান পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু, এই পণ্য বিনিময় এর ক্ষেত্রে কতটা এগিয়েছে পাকিস্তান? এরমধ্যেই পাকিস্তান সরকার একটি আইন পাস করে ফেলেছে। এই আইনের কারণে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকানাধীন সংস্থাগুলোও ওই ৩ দেশের সঙ্গে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করতে পারবে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করার জন্য সংশ্লিষ্টদেরকে পাকিস্তান সরকারের কাছে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তারপর কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দেবে। ভয়াবহ বন্যা, ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও তলানিতে ঠেকা ডলার নিয়ে যে পাকিস্তান রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে, এখন এই স্ট্র্যাটেজি কাজে লাগিয়ে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version